কলকাতা: শনিবার সপ্তম (7 Phase LokSabha Election) তথা অন্তিম পর্বের ভোটচিত্র বুঝিয়ে দিল, বাংলা আছে বাংলাতেই। এদিনের ভোটে বিকেল পর্যন্ত হিংসায় মৃত্যুর ঘটনা হয়ত ঘটেনি। কিন্তু মারদাঙ্গা, বুথ দখল, রিগিং, বিরোধী দলের এজেন্টদের বুথে বসতে না দেওয়া, প্রার্থীদের হেনস্থা, তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ, গো ব্যাক স্লোগান, বোমাবাজি, মারধরে রক্তারক্তি সবই হয়েছে। সন্দেশখালিতে গোলমাল থামাতে পুলিশ লাঠি ও টিয়ার গ্যাস চালায়, শূন্যে তিন রাউন্ড গুলিও চালায় তারা।
শাসক এবং বিরোধী দলের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। তবে সবটা একতরফা হয়নি। কোথাও কোথাও শাসকদলও প্রতিরোধের মুখে পড়েছে, আক্রান্ত হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরছে বুঝতে পেরে শাসকদল এদিন ভোট লুঠ করতে মরিয়া ছিল। তাই ওরা জেলায় জেলায় হামলা চালিয়েছে। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, বিরোধীরা বহু বুথে গোলমাল পাকিয়েছে। সব মিলিয়ে সপ্তমীতে ভোটের মেজাজও ছিল সপ্তমে চড়া।
শনিবার শেষ পর্বে ভোট ছিল উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতা, যাদবপুর, জয়নগর, বসিরহাট, বারাসত, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার এবং দমদম কেন্দ্রে। নির্বাচন কমিশনের কাছে শেষ দফার ভোট শান্তিপূর্ণ ও অবাধ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক মহল বলছে, সেই চ্যালেঞ্জ রাখতে কমিশন ব্যর্থ হয়েছে। এদিনের ভোটের জন্য ৯৬৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছিল নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া রাজ্য পুলিশের কর্মী ছিল প্রায় ৩৩ হাজার। বিরোধীদের অভিযোগ, বহু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল নিশ্চুপ। আর দাপিয়ে বেড়িয়েছে রাজ্য পুলিশ।
আরও পড়ুন: ভোট চলাকালীন মাইকিং করে প্রচারের অভিযোগ তৃণমূলের
উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়, ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি প্রার্থী অভিজিত দাস, সন্দেশখালির বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র, দমদমের বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত, বরাহনগর বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী সজল ঘোষ, কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্যরা বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন দফায় দফায়। কোনও কোনও প্রার্থী আক্রান্তও হয়েছেন। তাঁদের ঘিরে গো ব্যাক স্লোগান উঠেছে। তন্ময়ের সঙ্গে বরাহনগর পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বচসা ধাক্কাধাক্কিতে পরিণত হয়। ভুয়ো ভোটার ধরতে গিয়ে বরাহনগরে আক্রান্ত হন বিজেপির সজল ঘোষ। যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ হয়। তাঁকে নিগ্রহ করা হয়।
বিরোধীদের অভিযোগ, শুক্রবার রাত থেকেই সন্দেশখালি, যাদবপুর, সহ বিভিন্ন জায়গায় তাদের এজেন্ট ও সমর্থকদের ভয় দেখানো হয়। অনেককে বন্দুক ঠেকিয়ে শনিবার ভোটকেন্দ্রে গেলে ভালো হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এদিন অনেক বুথে বিরোধী এজেন্টদের বসতে দেওয়া পর্যন্ত হয়নি। কোথাও কোথাও বিরোধী প্রার্থীরা পরে এজেন্টদের বুথে বসিয়ে দিয়ে আসেন। বিরোধীদের তরফে নির্বাচন কমিশনে এদিন দুহাজারেরও বেশি অভিযোগ জমা পড়ে।
অন্য খবর দেখুন