কলকাতা: লাদাখে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে সেনা সরানোর বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে ভারত এবং চীন। প্রায় চার বছর ধরে চলা এই জটিলতার অবসান ঘটাতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশই দেপসাং ও ডেমচক-সহ বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, চলতি মাসের শেষের মধ্যেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-তে সেনা কমানোর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে। এই সমঝোতার মাধ্যমে ভারত-চীন সীমান্তে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও স্থিতি বজায় রাখার প্রয়াস করা হচ্ছে।
২০২০ সালের মে মাসের আগে যে অবস্থায় সীমান্তে সেনা মোতায়েন ছিল, সেই পুরনো অবস্থায় ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে দুই দেশ। চার বছর ধরে বিভিন্ন অস্থায়ী সেনা ছাউনি তৈরি করেছিল ভারত ও চীন, যা চুক্তি অনুযায়ী সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী সীমান্তে আগের মতোই দু’দেশের সেনারা নির্দিষ্ট নিয়মে টহল দেবে এবং টহলদারির সীমানা নিয়ে কোনও ভুল বোঝাবুঝি যাতে না হয়, সেদিকেও নজর দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনঃ বছরে ৯০,০০০ ভারতীয় শ্রমিককে ভিসা দেবে জার্মানি!
সাম্প্রতিক সময়ে লাদাখ সীমান্তে এই সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছিল। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে লাদাখে চীনা সেনার অনুপ্রবেশ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং পরে সেই উত্তেজনার আবহেই ১৫ জুন গালওয়ানে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা প্রাণ হারান। পরবর্তীতে ভারতের পাল্টা আঘাতে চীনের বেশ কয়েকজন সেনা নিহত হয়। এই ঘটনার পরে ভারত-চীনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং সীমান্তের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়।
সাম্প্রতিক সমঝোতার ভিত্তিতে সীমান্তে টহলদারি নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত এবং চীন। নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, এক দেশের সেনারা টহলদারি শেষ করলে তা অপর দেশকে জানানো হবে। পরে অন্য দেশের সেনারা নির্দিষ্ট সময়ে সেই এলাকায় টহলদারি শুরু করবে। এই নিয়মের উদ্দেশ্য হল টহলদারি নিয়ে কোনও ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ না রাখা।
এই সমঝোতা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞরা ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। সীমান্তে সেনা সরানো ও টহলদারির নিয়মাবলি মানার মাধ্যমে লাদাখ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতি বজায় থাকবে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞ মহল।
দেখুন আরও খবরঃ