ওড়িশার উপকূলবর্তী ভদ্রক ও কেন্দ্রাপড়ায় ‘ডেনা’র ল্যান্ডফল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঘটে। ভদ্রকের চাঁদবালি স্টেশনে শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৮৫.১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়, যা গোটা অঞ্চলের জনজীবন ব্যাহত করে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ এলাকা ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেয়েছে, তবে কলকাতাসহ কয়েকটি অঞ্চলে বৃষ্টির মাত্রা বেড়ে যায়। ধামরা থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে কলকাতায় ঝড়বৃষ্টি বেড়ে যায় শুক্রবার ভোর থেকেই।
কলকাতায় ডানার প্রভাব কেমন?
কলকাতায় ‘ডেনা’র প্রভাব বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে বৃষ্টির সূচনা ঘটায়। শুক্রবার সকালে আলিপুরে ৬৭.৭ মিলিমিটার, দমদমে ৫৩ মিলিমিটার, এবং সল্টলেকে ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারও বাঁচতে পারেনি; সেখানে ৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। চাঁদবালিতে সর্বোচ্চ ১৫৮.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এই পরিস্থিতিতে, ধীরে ধীরে কলকাতার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
ডায়মন্ড হারবারে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয় ৯৩ মিলিমিটার, যা পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ‘ডেনা’র প্রভাবের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া কলাইকুন্ডায় ৯১ মিলিমিটার এবং সাগরদ্বীপে ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। কলকাতার উত্তরের ঠনঠনিয়া, বিটি রোড, এবং দক্ষিণের যোধপুর পার্ক এলাকায় বৃষ্টির কারণে জল জমে যায়। এমনকি সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, পার্ক স্ট্রিট এবং ক্যামাক স্ট্রিটও জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
জলাবদ্ধতা নিয়ে তৎপর হয়েছেন কলকাতা পৌরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, নিচু এলাকাগুলোতে জল জমলেও অধিকাংশ এলাকা থেকে জল নেমে গেছে। রাস্তার কিছু কিছু স্থানে গাড়ির গতি কম থাকায় যানজটের সমস্যা খুব একটা ছিল না। এছাড়া, কলকাতা হাই কোর্ট ও বেশ কিছু অফিস ছুটি ঘোষণা করে এবং স্কুলগুলিতে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়, ফলে সাধারণ মানুষ কম বাইরে বেরিয়েছেন।
‘ডেনা’র প্রভাবে ওড়িশা ও কলকাতায় সপ্তাহের শেষের দিনটি জলমগ্ন হয়ে ওঠে। আবহাওয়া দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, ‘ডেনা’ শুক্রবার দুপুরের দিকে ভদ্রক থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে ছিল, যার প্রভাবে কলকাতাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।