কলকাতা: শেষ পর্যন্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra) ওরফে কালীঘাটের কাকুর (Kalighat Kaku) কণ্ঠস্বরের ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে পেল ইডি (ED)। বৃহস্পতিবার মুখবন্ধ খামে সেই রিপোর্ট এসএসকেএম হাসপাতাল (SSKM Hospital) কর্তৃপক্ষ ইডি অফিসারদের হাতে তুলে দেয়। সূত্রের খবর, আগামী সোমবার ইডি তা আদালতে পেশ করতে পারে। এই প্রসঙ্গে এদিন কালনায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, এটা ইডি আর আদালতের ব্যাপার। আমার কিছু বলার নেই। তাঁর প্রশ্ন, যাঁর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে, তাঁকে কি ইডি গ্রেফতার করেছে?
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত বছরের মে মাসে ইডি গ্রেফতার করে কালীঘাটের কাকুকে। তিনি অভিষেকের পারিবারিক সংস্থা লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের পদস্থ কর্তা ছিলেন। এই দুর্নীতিতে বেআইনি আর্থিক (Illegal Finance Corruption) লেনদেনের প্রশ্নে জড়িয়ে যায় এই সংস্থার নাম। মামলায় ধৃত তৃণমূলের প্রাক্তন যুবনেতা কুন্তল ঘোষের একটি চিঠির সূত্রে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay) অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। ইডি (ED) এবং সিবিআই (CBI) একাধিকবার সুজয়কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার সাহেবকে কেউ ছুঁতে পারবে না। তাঁর কাছে পৌঁছতে হলে আমার মাধ্যমে যেতে হবে। শেষে ১১ মে দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর ইডি কাকুকে গ্রেফতার করে।
আরও পড়ুন: বেশি বেশি মিষ্টি খেয়ে জামিন পেতে চাইছেন কেজরিওয়াল, আদালতে দাবি ইডির
অভিযোগ ছিল, তিনি তদন্তে অসহযোগিতা করছিলেন। তদন্তে নেমে ইডি যে সমস্ত তথ্য পায়, তাতে কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের দরকার ছিল। কিন্তু এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাত দেখিয়ে সেই নমুনা সংগ্রহে আপত্তি করছিল। এরই মধ্যে হেফাজতে থাকাকালীনই তাঁর হৃদযন্ত্রের বাইপাস অপারেশন হয়। তিনি দীর্ঘদিন ওই সরকারি হাসপাতালে ছিলেন। তা নিয়ে আদালত প্রশ্ন তোলে। অবশেষে গত ৪ জানুয়ারি রাতে আদালতের নির্দেশে ইডি হাসপাতাল থেকে সুজয়কে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করে। সেই নমুনা পরীক্ষার পরও তার রিপোর্ট পেতে ইডি কেন এত দেরি করছে, প্রশ্ন তোলে আদালত। একই প্রশ্ন করে বিরোধীরাও।
বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, এই তদন্তে ইডির এত দীর্ঘসূত্রিতা অত্যন্ত লজ্জাজনক। বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র এবং রাজ্যসভা সদস্য শমীক ভট্টাচার্যও বলেন, মানুষ কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার এই দীর্ঘসূত্রিতা দেখতে দেখতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে। মানুষ জানতে চায়, তদন্ত শেষ হবে কবে। আশা করব, দ্রুত এই তদন্ত শেষ হবে।
দেখুন ভিডিও