বিহার: পেশায় সরকারি স্কুলের শারীরশিক্ষা শিক্ষক। কিন্তু সংসার চালাতে তাঁকে খাবার ডেলিভারির কাজও হয়। দশ’টা-পাঁচ’টা স্কুলের পর মাঝরাত পর্যন্ত এর বাড়িতে ওর বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিতে হয় তাঁকে। কিন্তু কেন? সরকারি স্কুলশিক্ষকের বেতন তো এতটাও কম নয়! আসলে বিহারের অমিত কুমারের জীবনের লড়াইটা এতটাই করুণ। তিনি ভাগলপুর জেলার বাবুপুর মাধ্যমিক স্কুলের একজন পার্ট-টাইম শিক্ষক। সরকারি স্কুলের এই শিক্ষকের মাসিক বেতন ৮,০০০ টাকা। সেই কারণে সংসারের খরচ চালাতে তাঁকে শিক্ষকতার পাশাপাশি ফুড ডেলিভারির কাজও করতে হয়। আসলে কোভিডের আগে তিনি একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতার কাজ করতেন। কিন্তু লকডাউনের সময় তাঁর চাকরি চলে যায়। সেই সময় থেকেই যেকোনও কাজ করার অভ্যেস তৈরি হয়ে যায় তাঁর। তাই স্কুলের ডিউটি করেও রাত ১২টা পর্যন্ত ডেলিভারি বয়ের কাজটাও তাঁর কাছে অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রাণঘাতী গুগল ম্যাপ! নদীতে ডুবল গাড়ি
শেষমেশ, ২০২২ সালে ভাগ্য খুলে যায় অমিত কুমারের। ২০১৯ সালে তিনি শিক্ষকতার চাকরির জন্য যে পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তার ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০২০ সালে। ১০০-র মধ্যে ৭৪ নম্বর পেয়ে পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি। কিন্তু চাকরিতে যোগদান করার পর তিনি জানতে পারেন যে, ফুল-টাইম নয়, আদতে পার্ট-টাইম শিক্ষকের পদে নিয়োগ দেওয়া হবে তাঁকে। যেখানে একজন ফুল-টাইম শিক্ষকের বেতন ৫০,০০০ টাকার কাছাকাছি, সেখানে মাত্র ৮,০০০ টাকা বেতনের চাকরি পান অমিত। বেতন কম হলেও সময়ের সঙ্গে সাংসারিক খরচ বাড়তে থাকে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই ফুড ডেলিভারির কাজ নিতে হয় বিহারের এই স্কুল শিক্ষককে। এখন দিনরাত কাজ করেও কোনওমতে সংসার চলে তাঁর। কোনও কাজ হয়ত ছোট নয়, কিন্তু একজন শিক্ষককে ফুড ডেলিভারির কাজ করতে দেখা কই দৃষ্টিকটু নয়? প্রশ্নটা রইল পাঠকদের কাছে।
দেখুন আরও খবর: