কলকাতা: ফের সেই গরমে ঘেমে স্নান করে বাড়ি ফেরার দিন ফিরে এল। এখনই কলকাতা (Kolkata Heatwave) সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। দোলেই ৩৯ ডিগ্রিতে উঠেছিল পুরুলিয়ার তাপমাত্রা। শনিবার দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বাঁকুড়া ঝাড়গ্রাম ,পশ্চিম মেদিনীপুর ,পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমে।
রবিবারেও দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর (Alipur Weather Office) । বাঁকুড়া বীরভূম পশ্চিম মেদিনীপুর ও পশ্চিম বর্ধমান ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়া এই ছয় জেলাতে তাপপ্রবাহ চলবে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন এখনই এই অবস্থা, এর পর কি হবে।
এই অবস্থায় সব থেকে সমস্যায় পড়েন অফিসযাত্রীরা। যাদের প্রতিদিনই ট্রেন,বাসের ভিড় ঠেলে অফিসে আসতে হয়। সেইসঙ্গের স্কুল পড়ুয়ারা। তাই এই সময় সকলেরই খাওয়ার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।
আরও পড়ুন: দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা, কলকাতায় আজ উষ্ণতম দিন
এ সময় অতিরিক্ত ঘামে শরীরের জল বের হয়ে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শরীরে অস্বস্তি, ক্লান্তির মতো একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। তাই সুস্থ রাখতে নিত্যদিনের তালিকায় রাখতে হবে জল ও জলযুক্ত খাবার।
তবে গরমে চা/কফি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। সারাদিনে একবার চলতে পারে, এর বেশি নয়।
পূর্ণবয়স্ক একজন নারীর দিনে অন্তত ২.৫-৩ লিটার, পূর্ণবয়স্ক একজন পুরুষের ৩-৩.৫ লিটার বিশুদ্ধ জল পান করা উচিত। তবে কিডনি রোগীদের অবশ্যই জল খাওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।
ডাবের জল-
এই গরমে কোল্ড ড্রিংঙ্কস না খেয়ে, খান ডাবের জল। খুব কার্যকর এই পানীয়। খুব সহজেই জলের চাহিদা পূরণ করবে। ডাবের জল একটি হাইড্রেটিং পানীয়, বিশেষ করে শারীরিক ব্যায়াম বা অসুস্থতার পর। এতে সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের একটি সুষম মিশ্রণ থাকে, যা শরীরে তরল ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইট। প্রচুর পরিমাণে বি ভিটামিন রয়েছে, যার মধ্যে বি১, বি২ এবং বি৬ রয়েছে, যা মেটাবলিজমের কাজে সাহায্য করে। এতে ভিটামিন সিও রয়েছে, যা একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
সবজি
কাঁচা পেঁপে, পটোল, ঝিঙ্গে, শসা, চিচিঙ্গা, গাজর, লাউ, পালংশাক, টমেটোয় জলের পরিমাণ বেশি। এছাড়াও পাতলা করে রান্না করা টক ডাল, সজনে ডাল শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। যাদের ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায়, তারা এ সময় ঢেঁড়স, বেগুন এড়িয়ে চলুন। তেঁতুলের টক খাওয়া ভালো।
ফল
কাঁচা আম খুবই ভালো। কাঁচা আমে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। এ ছাড়া ভিটামিন সি ও ম্যাগনেশিয়ামও আছে, যা শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। তরমুজ শরীর ঠান্ডা করতে সাহায্য করে। এতে আছে ভিটামিন ও খনিজ লবণ, যা এই গরমে শরীরের জন্য দরকার। কাঁচা আমকে পুড়িয়ে সরবত করে খেতে পারেন।
পুদিনার শরবত
শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে এবং সতেজ অনুভূতির জন্য পুদিনার শরবত অতুলনীয়। লেবু-পুদিনার শরবত যা শরীরের সব ক্লান্তি দূর করে শরীর ও মনকে সতেজ রাখবে।
আখের রস
আখের রস শরীরকে ঠান্ডা রাখতে খুবই কার্যকরী। আখের রসের সঙ্গে বিট লবণ, পুদিনাপাতা এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেলে এর স্বাদও বাড়ে, পুষ্টিগুণও বাড়ে।
বেলের শরবত
বেলের শরবত পাকস্থলী ঠান্ডা রাখতে খুব কার্যকর। বেলে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, প্রোটিন, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১ এবং বি২, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফাইবার। এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত সারা দিনের ক্লান্তি মুছে শরীরকে চাঙা করে তুলতে ভূমিকা রাখে। আয়ুর্বেদশাস্ত্রেও বেলের নানা গুণের কথা বলা হয়।
দেখুন অন্য খবর: