বর্ধমান: ভোর থেকেই এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শীত-শীত অনুভূতি হচ্ছিল। আয়েশে ঘুম ভাঙতে চাইছিল না। পূর্ব আকাশে সূর্য লাল হয়ে উঠেছে। সকালে ওঠার অভ্যাসবশত গৃহস্থ ঢুলু ঢুলু চোখে দরজা খুলতেই দেখলেন, চোখের সামনে একের পর এক কার্তিক (Kartika) ঠাকুর দাঁড় করানো। উদ্ভাসিত অবয়ব। থরে থরে সাজানো ছোট-বড় হরেকরকমের প্রতিমা। ভগবান নিজেই যেন হাজির ভক্তের পুজো নেওয়ার অপেক্ষায়। গৃহস্থ কপালে জোড়হাত ঠেকিয়ে প্রণাম জানালেন। একটা নয়, একেবারে ৫৮টি ঠাকুর! শনিবার কার্তিক পুজোর দিন এই ঘটনা চাউর হতেই হইচই। আসলে ওই বাড়িতে রয়েছে নব দম্পতি। তাঁদের পুত্র সন্তানের কামনায় চিরাচরিত রীতি মেনে শুভাকাঙ্খীরাই এই কাজ করে ফেলেছেন। ঘটনায় আনন্দে আত্মহারা হওয়ার জোগাড় বর্ধমানের (Bardhaman) রায় পরিবারের। পাড়া প্রতিবেশীদের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো। এই আনন্দে পাড়াসুদ্ধ সবার খাওয়ার আয়োজন।
আজ কার্তিক মাসের সংক্রান্তি তিথি। এই দিনেই হয় কার্তিক পুজো। বাংলার ঘরে ঘরে এই দিন পূজিত হন দেব সেনাপতি কার্তিক। মা দুর্গা ও দেবাদিদেব মহাদেবের পুত্র। তবে এখানে তিনি ঘরের ছেলে। তাঁকে সন্তান রূপে ঘরে তোলেন ঘরের বৌমা। কথিত আছে কার্তিকের আরাধনা করলে পুত্র সন্তান লাভ হয়। সেই সঙ্গে ঘরে ধন-সম্পদের বৃদ্ধি হয়। যশ ও বল প্রাপ্তি হয়। তাই এই নব দম্পতির উদ্দেশ্যে বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে ঘরের সামনে কার্তিক ফেলে আসেন। তবে তারা না কি রাতের অন্ধকারে আনন্দ উদযাপন করে পটকা ফাটিয়ে কার্তিক ফেলে গিয়েছিলেন। কিন্তু, অনেকেই টের পাননি, এই পরিবারও। কোনও কোনও কার্তিকের হাতে ধরানো ডেয়ারি মিল্ক চকোলেট। বর্ধমান শহরের রাজগঞ্জ আকরবাগান এলাকার রায় পরিবারের ওই দম্পতির মাত্র একমাস আগে বিবাহ হয়েছে। সেখানে এই ঘটনার পর আত্মীয়, প্রতিবেশী সবাই সকাল থেকে ভিড় জমিয়েছেন ওই বাড়িতে। সবার মধ্যে আলাদা উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা, আনন্দ, আবেগ। ওই পরিবার এই আনন্দে বাড়িতে খাওয়ানোর আয়োজনও করেন। এই পুজোকে ঘিরে রায় পরিবারের বড়দের সঙ্গে শিশুদের মধ্যেও আনন্দ, উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।
আরও পড়ুন: ২০ ডিগ্রির নীচে নামল কলকাতার পারদ, জেলায় নিম্নমুখী তাপমাত্রা
দেখুন অন্য খবর: