কলকাতা: জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী সহকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বালুকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তোমরা যাঁরা উত্তর ২৪ পরগনার মন্ত্রী আছ, তাঁদের সংগঠনে আরও বেশি করে সময় দিতে হবে। ব্রাত্য বসু, পার্থ ভৌমিক, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, রথীন ঘোষদের নাম করে মমতা বলেন, তোমরা জেলার সংগঠনটা দেখো।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তর ২৪ পরগনায় অনেক কালীপুজো হয়। তোমরা দেখে নিও। জেলার মন্ত্রীদের সমন্বয় রেখে চলারও নির্দেশ দেন তিনি। কালীপুজোর সময় ওই জেলার মন্ত্রীদের নিজের নিজের এলাকাতেই থাকতে বলেছেন মমতা। তবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে দলীয় সংগঠন নিয়ে আলোচনা করা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূলে সব সম্ভব। এর আগে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দলবদলের অনুষ্ঠানও হয়েছে। এই জমানায় প্রশাসন এবং দল মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে।
জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালু ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর পাশে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, বালু খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই প্রায় এক কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বাম জমানায় এই ভুয়ো কার্ডে জাল ভোট হত। তিনি বলেন, এই কাজ করতে আমাদের সাত আট বছর সময় লেগেছে। মঙ্গলবার ভবানীপুরে নিজের বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতেও মুখ্যমন্ত্রী বালুর পাশে থাকার কথাই জানিয়েছেন। তবে তার পাশাপাশি বালুর গ্রেফতারিকে ইনডিভিজুয়াল সমস্যা বলেও দাবি করেন। তিনি বলেন, আমরা একটা পয়সা নিই না। তবু আমরা চোর? আমি কোনও বেতন নিই না মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে, প্রাক্তন সাংসদ হিসেবে পেনশন নিই না। সেসব ধরলে তো এতদিনে আমার ৫০, ৬০ কোটি টাকা জমত।
আরও পড়ুন: জ্যোতিপ্রিয়র অনুপস্থিতিতে বন সামলাবেন বীরবাহা হাঁসদা
মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এদিন সাফ জানিয়ে দেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কোনও রং বদল করা হবে না। তিনি বলেন, ওরা সব কিছুকেই গেরুয়া রং করে দিচ্ছে। সম্প্রতি জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোগুলির রং বদল করার কথা জানিয়েছে। সেই চিঠির উল্লেখ করেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের নিজস্ব রং রয়েছে। রং বদলের প্রশ্নই ওঠে না। প্রসঙ্গত, রাজ্যের অধিকাংশ হাসপাতাল এখন নীল সাদা রংয়ে সেজেছে। এটাই রাজ্যের নিজস্ব রং বলে মমতা বোঝাতে চেয়েছেন।
এদিকে এদিন কমান্ড হাসপাতালে ফের বালুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। ওই হাসপাতাল বনমন্ত্রীর চিকিতসা করতে পারবে না বলে জানিয়েছিল। তারা কলকাতা হাইকোর্টে তা নিয়ে দরবারও করে। সেই মামলায় বুধবার হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, কমান্ড হাসপাতাল ছাড়া আর কোন হাসপাতাল মন্ত্রীর চিকিতসা করতে পারে, তা আগামিকাল ইডিকে জানাতে হবে। বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরী ইডির আইনজীবীকে বলেন, কাল ইনস্ট্রাকশন নিয়ে আসবেন।
আরও অন্য খবর দেখুন
![YouTube player](https://i.ytimg.com/vi/yJdQHp24Oqk/maxresdefault.jpg)