কলকাতা ও তিরুবনন্তপুরম: কেরলের কিছু কট্টর মৌলবাদী শক্তি এবার কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফকে মদত দিয়েছে বলে মনে করছে সিপিএম। একই সঙ্গে সিপিএমের ভোটব্যাঙ্ক বলে পরিচিত ইজাভা গোষ্ঠী বিজেপির দিকে ঝুঁকেছিল। কেরলের বাম সরকারের প্রধান শরিক সিপিএম মনে করছে, মূলত এই দুটি কারণে দক্ষিণের ওই রাজ্যে লোকসভা ভোটে এলডিএফের ভরাডুবি হয়েছে। সিপিএম এবার আশা করেছিল, কেরলে আট থেকে দশটি আসন তারা পাবে। কিন্তু সাকুল্যে তারা মাত্র একটি আসন পেয়েছে।
সিপিএমের অন্দরের খবর, সম্প্রতি পাঁচদিন ধরে দলের রাজ্য কমিটি লোকসভা ভোটের ফলাফল নিয়ে কাটাছেঁড়া করেছে। তাতেই এই সব বিশ্লেষণ উঠে এসেছে। ওই আলোচনাতেই দলের রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দন বলেন, এসডিপিআই, ওয়েলফেয়ার পার্টি, সলি়ডারিটি এবং জামাত ইসলামির মতো দলগুলি এবার লোকসভা ভোটে প্রার্থী দেয়নি। তাদের বড় অংশের ভোট ইউডিএফে চলে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের মতে, এই চরমপন্থী মুসলিম সংগঠনগুলি ভারতকে ইসলামিক ভাবধারায় চালিত করতে চায়। লোকসভা ভোটে তারা নিজেদের ইউডিএফের শরিক বলেও প্রচার চালিয়েছে। গোবিন্দনের অভিযোগ, কংগ্রেস, আইইউএমএল, জামাত-ই-ইসলামি-এসডিপিআই গোষ্ঠী কেরলের ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্যের পরিপন্থী। তারা অনেক জায়গায় সাম্প্রদায়িক তাসও খেলেছে এবারের ভোটে। সঙ্ঘ পরিবার এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে্ জাতপাতের রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছে। সিপিএম নেতা আরও বলেন, খ্রিস্টানদের একটি অংশ যারা ইউডিএফকে সমর্থন করত, তারা বিজেপিকে মদত দিয়েছে। তিনি মনে করেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির ভয়েই কিছু বিশপ সম্ভবত বিজেপির দিকে ঢলেছেন। সিপিএম নেতা বলেন, আমরা এই জাতপাত এবং হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।
কেরলে বামেদের সঙ্গে মূল লড়াই কংগ্রেসের। বামেদের আপত্তি উপেক্ষা করে কংগ্রেস নেতা এবারও কেরলের ওয়েনাডে লড়াই করেছেন। সেখানে সিপিআই প্রার্থী অ্যানি রাজাকে বিপুল ভোটে হারিয়েছেন রাহুল। সম্প্রতি অবশ্য তিনি রায়বেরিলি রেখে ওয়েনাড আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন। সেখানে উপনির্বাচন হলে প্রার্থী হবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi)। বৃহস্পতিবার কলকাতার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। সূত্রের খবর, মমতা যাতে ওয়েনাডে প্রিয়াঙ্কার সমর্থনে সভা করেন, চিদম্বরম তৃণমূল নেত্রীকে সেই অনুরোধ করেন। সিপিএম প্রচার করছে যে, মুসলিম মৌলবাদী শক্তিগুলি কংগ্রেসকে মদত দিচ্ছে। সেটা যে নিছক অপপ্রচার, মমতাকে দিয়ে সেটাই বলাতে চান কংগ্রেস নেতারা। কারণ সারা দেশে মমতার একটা ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি রয়েছে। ওয়েনাডে তাকে কাজে লাগাতে চান রাহুল গান্ধী, সনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়্গেরা। সেই কারণেই চিদম্বরমকে দূত হিসেবে মমতার কাছে পাঠানো হয়েছিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অন্য খবর দেখুন