কলকাতা: একদিকে ধস অন্যদিকে হড়পা বাণে (Flash Flood ) বির্পযস্ত সিকিম (Sikkim ) সহ গোটা উত্তরবঙ্গ৷ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জলপাইগুড়ির গাজলডোবা এলাকায় এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ টিমের তল্লাশি অভিযানে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার হল। মনে করা হচ্ছে সিকিমের হড়পা বানে তলিয়ে গিয়েছিল নিখোঁজ ব্যক্তিদের দেহ। দেহ উদ্ধারের পর সেগুলিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। দোমহনির কাছে বিপদসীমার খুব কাছ দিয়ে বইছিল তিস্তার জল (Teesta River)৷ সূত্রের খবর, সিকিমের চুমথাং এলাকায় প্রবল বৃষ্টির জেরে ফের বাড়ছে তিস্তার জলস্তর৷ ইতিমধ্যে রাজ্যের সেচমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকার সিকিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করছে। গতকালের পর আজও বেশ কয়েকটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মনে করা হচ্ছে উদ্ধার হওয়া দেহগুলি জলে ভেসে এসেছে উত্তর সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর৷ নিখোঁজ প্রায় ১০৪ জন৷
আরও পড়ুন: ফের কালিয়াচকে বোমা বিস্ফোরণ
উত্তরবঙ্গের জন্য লাল সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসনের তরফে। উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রের খবর, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়ি জেলার জেলাশাসকদের সতর্ক করা হয়েছে ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাড়ানো হয়েছে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর টিম৷ তিস্তার জলস্তর ফের বাড়তে থাকায় প্রয়োজনে বাসিন্দাদের নিরাপদস্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
তিস্তায় আসা হড়পা বানের জেরে চুংথাম বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মী এবং আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ৫১ লক্ষ কিউবিক মিটার জল একসঙ্গে তিস্তা দিয়ে বয়ে গিয়েছে। তারজেরেই পাহাড়ি এলাকা থেকে নীচের দিকে নামতে শুরু করে, তাতেই বড় বিপর্যয় ঘটেছে সিকিমে।
বুধবার রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জল ছাড়ার পরিমাণ সাময়িক ভাবে কমিয়েছিল ডিভিসি। বৃষ্টি না থামায় জলস্তর বাড়তে থাকে। ফের বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ মাথন থেকে ৩০ হাজার এবং পাঞ্চেত থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। এর ফলে চাপ বেড়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজের। জল ছাড়ার ফলে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির অনবনিত হতে পারে। ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের সতর্ক করার জন্য গ্রামে গ্রামে মাইকিংও করা হয়েছে। তাদের নিরাপদ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
আরও অন্য খবর দেখুন