নামখানা: বেশকিছু দিন ধরে তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রির উপরে রয়েছে। তাপপ্রবাহের (Heatwave) জেরে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনের পটল চাষিরা (Patal farmers of Sundarbans)। শুকিয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা বাগান। জলের অভাবে ঝরে পড়ছে গাছের ফুল। বৃদ্ধি হচ্ছে না পটলের। ছোট অবস্থাতেই শুকিয়ে হলুদ হয়ে যাচ্ছে পটল। এই পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে আর বাগানের দিকেই যাচ্ছেন না চাষিরা।
নামখানা ব্লকের নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাদাভাঙা এলাকা জুড়ে চাষ হয় পটলের। এই পটলের স্বাদের জন্য বিশেষ পরিচিতি রয়েছে কলকাতা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়ে। এক সময় কলকাতা থেকে বড় বড় সবজি পাইকারিরা এসে এই এলাকা থেকে পটল কিনে নিয়ে যেতেন। এক একজন চাষি প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ কুইন্টাল করে পটল পাইকারি বাজারে বিক্রি করতেন। ভিন রাজ্যেও এই নাদাভাঙা পটলের সুখ্যাতি রয়েছে। এই এলাকার পটল গুলির দৈর্ঘ্য হয় ৫ ইঞ্চি ও প্রস্থ হয় প্রায় ছয় ইঞ্চি। পটলের রং হয় হালকা সবুজ। আজ সেই পটল চাষ বড়সড় ক্ষতির মুখে।
আরও পড়ুন:দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জলের সমস্যায় খোকলাবস্তির বাসিন্দারা
এবিষয়ে নাদাভাঙা এলাকার এক পটল চাষি দ্বিজেন জানা বলেন,অতীতে দু বিঘা জমিতে পটল চাষ করতাম। ফাল্গুন মাসের শেষে বাগান থেকে পটল তোলা শুরু হত। কার্তিক মাস পর্যন্ত বাগানের পটল বাজারে বিক্রি করতাম। কোন সপ্তাহে এক কুইন্টাল আবার কোন সপ্তাহে দেড় কুইন্টাল পটল বাগান থেকে তুলে পাইকারি বাজারে বিক্রি করা হতো। ৯ মাসে এই দু বিঘা জমিতে পটল চাষ করে ৬০ হাজার টাকারও বেশি লাভ আসত। কিন্তু এখন আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে পটল চাষ করা আর সম্ভব হচ্ছে না।
কাকদ্বীপের সহ কৃষি অধিকর্তা যতীন্দ্রনাথ হালদার বলেন, এখন তীব্র গরমের কারণে গাছ গুলি শুকিয়ে যাচ্ছে। অতীতে ওই এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইয়াসের সময় নোনা জল উঠেছিল। তীব্র গরম পড়ার কারণে এখন ওই এলাকার মাটির লবণাক্ত ভাবটা বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে মাটির উপরে লবণ জমা হচ্ছে এবং গাছের মূল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি এলে মাটির লবণাক্ত ভাব অনেকটাই কেটে যাবে। তখন পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হবে। সব মিলিয়ে এই বছর অতিরিক্ত গরমের কারণে স্বাদের জন্য বিখ্যাত নাদাভাঙার পটল হয়তো ভোজনরসিক বাঙালির পাতে দুর্লভ সব্জি হয়ে দাঁড়াতে চলেছে।
অন্য খবর দেখুন