কলকাতা: সকাল থেকেই আকাশের মুখভার। বলা যেতে পারে উধাও শীত (Winter)। পারদ ১৮.২ ডিগ্রির ঘরে। হাল্কা ঠান্ডার আমেজে মনের মেঘ দূর করতে বড়দিন উদযাপন করলেন কলকাতাবাসী (Kolkata)। শহর কলকাতা, নিউটাউনে ক্রিসমাসের (Christmas) উৎসবের (Festival) মেজাজ ছিল ফুৎফুরে ছন্দে। বুধবার ইকোপার্ক থেকে চিড়িয়াখানা, ভিড় উপচে পড়ল। সান্তা টুপি, রঙবেরংয়ের শীত পোশাকে বাবা-মায়ের সঙ্গে কচিকাঁচারা মেতে উঠল। আট থেকে আশি, উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা যত গড়িয়েছে ভিড় তত বেড়েছে। বলা যেতে পারে রোদের দেখা মেলার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবছরের মতো এই বিশেষ দিনে ভিড়ের চেনা ছবিটি ফিরে এসেছে। একসঙ্গে বসে খাওয়া, হুল্লোড়। ফুটপাতে সার বেঁধে পরম মমতায় একে অপরকে ছুঁয়ে এগিয়ে চলেছে। কখনও নিউটাউনের খোলা মাঠে গোল করে বসে পপকর্ন খাচ্ছে তরুণ তরুণী। স্নেহদিয়া বৃদ্ধাশ্রমের অদূরেই অনেক প্রবীণদেরও দেখা গেল ছেলে, মেয়ের সঙ্গে উদযাপনে বেরিয়েছেন।
দক্ষিণ কলকাতার কলেজ ছাত্রী রিমিতা সাহা বাবা-মায়ের সঙ্গে ইকো পার্কে এসেছিলেন। তাঁর কথায়, প্রতি বছর ২৪ ডিসেম্বর রাত বো ব্যারাকে কাটাই। মঙ্গলবার রাতে আলোয়ভাসা মধ্য কলকাতায় কাটিয়েছি। বড়দিনে চিড়িয়াখানায় যাওয়া চাই-ই। তবে মনের মধ্যে ইচ্ছে ছিল, ইকোপার্ক দেখার। এবার তাই ইকোপার্কে এসেছি। এখানে এসে মন ভরে গেল। যথার্থ নামকরণ। মনোরকম প্রাকৃতিক পরিবশ। অপূর্ব। নিউটাউনের বুকে ইকোপার্ক অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এখানে এসে রঙিন শিশুদের ছোটাছুটি দেখে আরও ভালো লাগল। এতো খোলামেলা জায়গা সাধারণত পাওয়া যায় না। রানাঘাট থেকে সপরিবারে চিড়িয়াখানা এসেছেন কিঞ্জল রায়। স্ত্রী ও ছেলে, মেয়েকে নিয়ে এদিন আলিপুরে চিড়িয়াখানায় হাতির এনক্লোজারের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, আমি আগেও এসেছি চিড়িয়াখানায়। তবে ছেলে-মেয়েকে দেখানোর ইচ্ছে ছিল। ওরা খুব আনন্দ পেয়েছে। হাওড়া থেকে বন্ধুরা মিলে দল বেঁধে আসা কয়েকজন তরুণ তরুণীকে পাওয়া গেল বিশ্ববাংলা গেটের কাছে। তাঁদের কথায়, আমরা ‘আউটিং’য়ে এসেছি। একসঙ্গে বেরনোর সুযোগ পেয়েছি। এখানে ইকোপার্ক, মিনি চিড়িয়াখানা, ঝিলের মধ্যে প্যাডেল বোটে চেপে, মাদার ওয়াক্স মিউজিয়ম ঘুরে দেখলাম। এরপর বিশ্ববাংলা গেটে কফি খেলাম। চুটিয়ে উপভোগ করেছি। বর্তমানে প্রেম ভেঙে যাওয়া মুর্শিদাবাদের এক তরুণ কোনওরকম রাখঢাক না করেই বলে দিলেন, সম্পর্কে, যোগাযোগ নেই। তবে বিচ্ছেদ হয়নি। জোড়া লাগবে না কি, কী হবে দোলাচলে রয়েছি। মনের দুঃখে দৈনন্দিন ব্যস্ততাকে বাইপাস করতে এসেছি। তারপর মেঘ করে থাকা আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, রোদ ঝলমলে সূর্য উঠবে বলে অপেক্ষায় রয়েছি।
আরও পড়ুন: চেনা ছন্দে বকখালি, সকাল থেকেই উপচে পড়ছে ভিড়
দেখুন অন্য খবর: