নদিয়া: প্রত্যেক বছরের মতো এই বছরও রীতিমেনে শুরু হল কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে দূর্গাপুজো (Krishnanagar Rajbarir Durga Puja) (Krishnanagar Rajbarir Durga Puja)। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ীতে দেবী আরাধনার সূচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন রাজ পরিবারের সদস্যরা। বাংলায় সর্বজনীন দুর্গাপুজোর চল শুরু হয়েছিল রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের উদ্যোগেই। রাজার বাড়িটি আজও দাঁড়িয়ে আছে স্বমহিমায়। কৃষ্ণচন্দ্রের রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা মহামায়া রূপে পূজিত হয়ে আসছেন। রাজবাড়ির নাট মন্দিরে প্রতিবছর দুর্গাপুজো (Durga Puja 2024) হয় সেই প্রাচীন রীতি মেনে। নদিয়াবাসীর মঙ্গলকামনায় প্রতিপদে হোম-যজ্ঞের মধ্যে দিয়ে পুজো শুরু হয়। এই যজ্ঞ চলে নবমীর দিন পর্যন্ত।
১৬০৬ খ্রিস্টাব্দে রাজবাড়ির পুজো শুরু করেন রাজবংশের প্রথম রাজা ভবানন্দ মজুমদার। তারপর থেকে একই নিয়ম রীতিমেনে পুোজ হয়ে আসছে। প্রাচীন রীতি মেনে সপ্তমীতে ৭ রকমের ভাজা, অষ্টমীতে ৮ রকম এবং নবমীতে ৯ রকম পদের ভাজা ভোগ মাকে নিবেদন করা হয়। এছাড়াও থাকে আরও অনেক ধরনের ব্যঞ্জন এবং মিষ্টি। নবমীতে দেবীকে মাছের পদের ভোগ নিবেদন করা হয়। দশমীর দিন হয় পান্তা ভোগ। একচালার প্রতিমা বসানো থাকে মাটির বেদিতে। মাটির বেদির প্রধান কাঠামো একটি কাঠ। এই কাঠটি পুরনো আমল থেকেই নাট মন্দিরে বসানো রয়েছে। শাক্ত মতে পুজো হলেও এখানে মা দুর্গার বাহন কিন্তু ঘোড়া। অতীতে এখানে বলি প্রথা চালু ছিল। বর্তমানে কলা, কুমড়ো ইত্যাদি বলি দিয়ে নিয়মরক্ষা করা হয়। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের সময় ভক্তদের কাঁধে চেপে দেবী গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত যান।
রাজবাড়ির রানিমা অমৃতা রায় বলেন, নদীয়া বাঁশি এবং সারা রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে মহালয়া পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় এই হোম যজ্ঞ আর এই হোম যজ্ঞ শেষ হয় নবমীতে গিয়ে রাজবাড়ীর যে বর্তমান রাজা অর্থাৎ যাকে বলা হয় বাড়ির কর্তা তিনি এই হোম যজ্ঞের নিষ্পত্তি করবেন নবমীর দিন। থাকবে এই কদিন সমস্ত মানুষের জন্য অন্য ভোগ বিতরণ বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান মেনে এই পুজো শুরু হয়। তিনি আরও বলেন, বলেন আরজিকর কাণ্ড নিয়ে এইরকম নৃশংস ঘটনা যেন কোথাও না ঘটে এই বছর সারা রাজ্যের মানুষের একটা মন ভারাক্রান্ত হয়ে রয়েছে। কিন্তু যেখানে আমাদের পুজোটা করতে হবে, তবে এই রকম অপ্রীতিকর ঘটনা আর যেন আমাদের দেখতে না হয় সেটাই আমি মায়ের কাছে প্রার্থনা করব এবং মাকে আমি এটা বলেও রেখেছি যাতে মা তুমি আসছো আর যেন এর পর থেকে এইরকম অপ্রীতিকর ঘটনা বা কোন ভরা প্রান্ত যেন রাজ্যবাসী বা দেশবাসী না হয়, তাই এই পুজোর দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি তুই প্রত্যেকটা দিন থাকবে বিভিন্ন রীতি অনুষ্ঠান মেনে এই পুজো। তারপরে তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
অন্য খবর দেখুন