ওয়েব ডেস্ক: সিরিয়ায় (Syria) রাশিয়ার (Russia) সামরিক উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট চিত্র এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, রাশিয়া সিরিয়ার কিছু সামরিক ঘাঁটি থেকে সরঞ্জাম সরিয়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে লাতাকিয়া প্রদেশের হামেইমিম বিমানঘাঁটিতে এ ধরনের কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেছে।
ম্যাক্সার টেকনোলজিসের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, হামেইমিম ঘাঁটিতে দুটি আন্তনভ এএন-১২৪ ভারী পরিবহন বিমান অবস্থান করছে, যেগুলোর ডালা খোলা এবং সরঞ্জাম বোঝাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া, কেএ-৫২ অ্যাটাক হেলিকপ্টার খুলে ফেলা হচ্ছে এবং এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটের অংশগুলোও স্থানান্তরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ভূমিকম্প! শহর থেকে ৩০ কিমি দূরেই এপিসেন্টার, জারি সুনামির সতর্কতা
রাশিয়ার এই পদক্ষেপের পেছনে সিরিয়ার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন একটি বড় কারণ হতে পারে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর রাশিয়া তাদের সামরিক উপস্থিতি পুনর্মূল্যায়ন করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল বোগদানভ জানিয়েছেন, রাশিয়া এইচটিএসের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে এবং আশা করছে যে, গোষ্ঠীটি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে।
তবে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়া সিরিয়ায় তাদের সামরিক উপস্থিতি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করবে না, বরং কৌশলগত পুনর্বিন্যাস করবে। বিশেষ করে, ভূমধ্যসাগরের তীরে সিরিয়ার বন্দর নগরী তারতুসে অবস্থিত রাশিয়ার নৌঘাঁটিতে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি, যা রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত স্বার্থের প্রতিফলন।
সিরিয়ায় রাশিয়ার এই সামরিক পুনর্বিন্যাস মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, রাশিয়া সিরিয়ার নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাদের সামরিক কৌশল পুনর্গঠন করছে, যা ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও শক্তির ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
দেখুন আরও খবর :