পর্তুগাল–৬ সুইৎজারল্যান্ড_–১
(র্যামোস–৩, পেপে, গুয়েইরো, লেয়াও) (আকাঞ্জি)
একজন কোচের দাপট কতটা হতে পারে তা দেখালেন ফেরান্দো স্যান্টোস। পর্তুগালের কোচ স্যান্টোস সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম একাদশে রাখলেন না বিশ্ব তারকা ক্রিশ্চিয়ান রোনাল্ডোকে। পর্তুগিজ ক্যাপ্টেনকে নামালেন ম্যাচের ৭৩ মিনিটে। তার আগেই তাঁর দল ম্যাচটা পকেটে পুরে ফেলেছে। রোনাল্ডোর বদলি নামানো হল একজন আনকোরা স্ট্রাইকারকে। নাম যার গনসালো র্যামস। এর আগে যিনি মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছেন দেশের হয়ে। সেটা আবার একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচে নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে। সেই র্যামসই মঙ্গলবার রাতের নায়ক হ্যাটট্রিক করে। এবারের বিশ্ব কাপে এটি প্রথম হ্যাটট্রিক। একুশ বছরের ছেলেটার দাপটে পর্তুগাল ছয় গোল করে চলে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে। এবার তারা খেলবে মরক্কোর সঙ্গে, যারা বিরাট অঘটন ঘটিয়ে স্পেনকে ছিটকে দিয়েছে টাই ব্রেকারে হারিয়ে।
বেনফিকার যুব দলের প্লেয়ার র্যামস। তাঁকে বিশ্ব কাপের দলে রাখা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল। কিন্তু স্যান্টোস সে সবে কান দেননি। এবং টুর্নামেন্টের মাঝেই নামিয়ে দিলেন তাঁকে। আর রোনাল্ডোর বদলি হয়ে র্যামোস তো শুধু হ্যাটট্রিকই করলেন না, বুঝিয়ে দিলেন পর্তুগালের প্রথম একাদশে খেলার যোগ্যতা তাঁর আছে। তাঁর উপর আস্থা রেখে কোচ কোনও ভুল করেননি। ম্যাচের শুরু থেকেই র্যামোস, ব্রুনো ফার্নান্ডেজ ও জোয়াও ফেলিক্সের ত্রিফলা আক্রমণে যে ঝড় তুলেছিল পর্তুগাল তাতে একবারও রোনাল্ডোর অভাব বোঝা যায়নি। ১৭ মিনিটে ফেলিক্সের পাস বক্সের মধ্যে ধরেই চকিতে ঘুরে বাঁ পায়ের জোরালো শটে গোল পোস্টের কোণ দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন র্যামোস। অনুজ সতীর্থকে অভিনন্দন জানাতে রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে ছুটে যান সি আর সেভেনও। ৩৩ মিনিটে ব্রুনোর কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে ২-০ করেন ৩৯ বছর বয়সী পেপে।
দ্বিতীয়ার্দ্ধ শুরু হওয়ার ছয় মিনিটের মধ্যে আবার র্যামোসের গোল। দিয়েগো দালত বিপক্ষের বক্সে ক্রস বাড়ান। সেই বল হেড করে গোল করেন র্যামোস। ৫৫ মিনিটে জোরালো শটে ৪-০ করেন রাফায়েল গুয়েইরো। খেলার গতির বিরুদ্ধে ৫৮ মিনিটে সুইৎজারল্যান্ডের ম্যানুয়েল আকাঞ্জি গোল করে ব্যবধান কমান। ৬৭ মিনিটে জোয়াওয়ের কাছ থেকে বল পেয়ে সুইস গোলকিপার মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে হ্যাটট্রিক র্যামোসের। সংযুক্ত সময়ে ৬-১ করেন রাফায়েল লেয়াও। ৭৩ মিনিটে জোয়াওয়ের পরিবর্তে নামেন রোনাল্ডো। একটি বল গোলে রেখেছিলেন। কিন্তু অফ সাইডের জন্য তা বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচ শেষে পর্তুগালের সবাই যখন র্যামোসকে নিয়ে উল্লাসে মত্ত, তখন সবার অলক্ষ্যে অধিনায়কের ব্যান্ড খুলতে খুলতে থমথমে মুখে ড্রেসিং রুমে ফিরে গেলেন রোনাল্ডো। র্যামোসের রূপকথার মতো আবির্ভাবের দিনেই কি রোনাল্ডোর ভবিষ্যৎ লেখা হয়ে গেল?