ডুরান্ডের গ্রুপ লিগ থেকে আগেই বিদায় নিয়েছিল ইমামি ইস্ট বেঙ্গল। শনিবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে দেখার ছিল ইস্ট বেঙ্গল আদৌ এবার কোনও ম্যচ জিততে পারে কি না। শেষ পর্যন্ত কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে ইস্ট বেঙ্গল জয়ের মুখ দেখল। এদিন তারা ৪-৩ গোলে হারাল মুম্বই সিটি এফ সিকে, যারা ইতিমধ্যেই কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেছে। ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে জোড়া গোল করলেন সুমিত পাসি এবং ক্লেটন সিলভা। মুম্বইয়ের গোল তিনটি করেন লালিআনজুয়ালা ছাংতে (২) এবং গ্রেগ স্টূয়ার্ট। বিরতির সময় ম্যাচের ফল ছিল ৩-৩।
নতুন ভাবে দল সাজিয়েছিলেন কোচ স্টিভন কনস্ট্যানটাইন। ডিফেন্সে ইভান গঞ্জালেসকে নামাননি। সামনের দিকে শুরু থেকেই ছিলেন ব্রাজিলিয়ান ক্লেটন সিলভা। ডিফেন্সে ছিলেন কিয়ারিকু। মাঝ মাঠে আ্যালেক্স লিমা। নতুন রিক্রূট সেমবোই হাওকিপকে খেলানো হয় শুরু থেকেই। বিরতির পর নামানো হয় আরেক ব্রাজিলিয়ান এলিয়ান্দ্রোকে। এদিন লাল হলুদকে নেতৃত্ব দেন শৌভিক চক্রবর্তী। তবে এদিনের নায়ক কিন্তু সুমিত পাসি। মোহনবাগান ম্যাচে তাঁর আত্নঘাতী গোলেই হেরেছিল ইস্ট বেঙ্গল। তারা পর ছিল এই ম্যাচ। সুমিত পাসি যেন প্রতিজ্ঞা করে নেমেছিলেন মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে গোল করে প্রায়শ্চিত্ত করবেন। ১৭ মিনিটেই গোল করে ফেলেন সুমিত। ডান দিক থেকে বল এলে তিনি হেড করে গোল করেন। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ২-০ করে ফেলেন ক্লেটন সিলভা। ডান পায়ের বাঁক খাওয়ানো শটে গোল করলেন বেঙ্গালুরু এফ সি থেকে আসা ক্লেটন সিলভা। যখন মনে হচ্ছিল ইস্ট বেঙ্গল গোলের মালা পরাবে মুম্বইকে, তখনই একটা গোল শোধ করে দিলেন গ্রেগ স্টূয়ার্ট। ২৭ মিনিটে বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে উঠেছিলেন বিপিন সিং। ক্রস করলেন দিয়াজকে। বুক দিয়ে স্টূয়ার্টকে বল নামিয়ে দিলেন দিয়াজ। দুর্দান্ত ভলিতে গোল শোধ করলেন গ্রেগ স্টূয়ার্ট। সাত মিনিটের মধ্যে আবার গোল করে এগিয়ে গেল ইস্ট বেঙ্গল। ক্লেটন সিলভা বল পেয়ে দেন সুমিত পাসিকে। পাসি সেন্টার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুম্বই গোলকিপার নওয়াজের ভুলে সেই সেন্টারটাই গোলে ঢুকে যায়।
দু মিনিটের মধ্যে একটা বাজে গোল খেয়ে যায় ইস্ট বেঙ্গল। ছাংতে বক্সের বাইরে থেকে যে শটটা নিয়েছিলেন তা গোল হওয়ার মতো নয়। কিন্তু কমলজিত সিংয়ের বাজে গোলকিপিংয়ের জন্য গোল খেতে হয় ইস্ট বেঙ্গলকে। ৪৩ মিনিটে আবার গোল খায় ইস্ট বেঙ্গল। দিয়াজের শট কমলজিৎ বাঁচিয়ে দেন। সেই বল পেয়ে বিপিন সেন্টার করেন ছাংতেকে। দুর্দান্ত ভলিতে গোল করেন ছাংতে। বিরতির সময় ম্যাচ ৩-৩। বিরতির পর ক্লেটন সিলভার পাশে নামানো হয় এলিয়ান্দ্রোকে। সঙ্গে তো লিমা ছিলেনই। তিন ব্রাজিলিয়ান মিলে আক্রমণে বেশ ছন্দ আসে ইস্ট বেঙ্গলে। ৮১ মিনিটে ক্লেটন সিলভা মাঝ মাঠে বল দেন অমরজিৎ কিয়ামকে। তিনি সেটা আবার বাড়িয়ে দেন ক্লেটনকে। এর পর বক্সে ঢুকে দুর্দান্ত শটে গোল করে ইস্ট বেঙ্গলকে জিতিয়ে দেন ক্লেটন সিলভা। চার ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে ডুরান্ডের গ্রুপ লিগ শেষ করল ইস্ট বেঙ্গল। চার ম্যাচে মুম্বইয়ের পয়েন্টও সাত। এটিকে মোহনবাগানেরও তাই। তবে তিন ম্যাচে রাজস্থান ইউনাইটেডের পয়েন্ট চার। তারা সোমবার যদি ইন্ডিয়ান নেভিকে হারাতে পারে তাহলে তাডেরও পয়েন্ট হবে সাত। কিন্তু নিজেদের মধ্যে ম্যাচে মোহনবাগানকে তারা হারিয়েছিল। তাই ইন্ডিয়ান নেভিকে হারালেই রাজস্থান চলে যাবে শেষ আটে। বিদায় নিতে হবে মোহনবাগানকে।