প্রত্যাশামতোই অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হলেন প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবে। শুক্রবার দিল্লিতে সভাপতি পদে নির্বাচনে তিনি বাইচুং ভুটিয়াকে হারালেন ৩৩-১ ভোটে। কল্যাণ চৌবে জিতবেন এটা জানাই ছিল, কিন্তু ব্যবধান যে এতটা হবে তা মনে হয় তিনি নিজেও ভাবেননি। বাইচুং মাত্র একটি ভোট পেয়েছেন। আশ্চর্যের কথা, তাঁকে যে রাজ্য প্রস্তাব করেছিল সেই অন্ধ্র প্রদেশ এবং যে রাজ্য সমর্থন করেছিল সেই রাজস্থানের মধ্যে অন্তত একটা রাজ্য তাঁকে ভোট দেয়নি। দিলে অন্তত দুটি ভোট পেতেন তিনি। এভাবে গোহারা হারতে হত না কল্যাণ চৌবের কাছে। কল্যাণের জয় মানে বিজেপির জয়। কারণ তিনি এখন পুরোপুরি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বিজেপির উত্তর কলকাতার সভাপতি। বাইচুং অতীতে যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে লোক সভা এবং বিধান সভা ভোটে দাঁড়িয়ে হেরে গিয়েছিলেন, কল্যাণও তেমনই বি জে পি-র প্রার্থী হয়ে লোক সভা এবং বিধান সভার প্রার্থী হয়ে হেরে গিয়েছিলেন। এবার তিনি সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হলেন। দেশের ফুটবলের দায়িত্ব বর্তাল একজন ফুটবলারের হাতে। সাম্প্রতিক অতীতে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হয়েছেন মিশেল প্লাতিনি। ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল ফুটবলের সভাপতি হয়েছেন গণেশ থাপা। ভারতে এই প্রথম ফুটবলারের জয় হল ফেডারেশন নির্বাচনে। সহ সভাপতি পদে কর্নাটকের এন এ হ্যারিস হারিয়েছেন রাজস্থানের মানবেন্দ্র সিংকে। আর কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন অরুণাচল প্রদেশের কিপা অজয়। তিনি হারালেন অন্ধ্র প্রদেশের গোপালকৃষ্ণ কাসারাজুকে।
কল্যাণের বয়স এখন ৪৫। ডানকুনির এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম। ১৯৯৫ সালে টাটা ফুটবল আ্যাকাডেমি থেকে গ্রাজুয়েট হয়ে তিনি ১৯৯৬ সালে মোহনবাগানে যোগ দেন। পরের বছরেই চলে যান ইস্ট বেঙ্গলে। সেই বছরের বাইচুং ছিলেন তাঁর টিম মেট। এর পর থেকে কল্যাণ ভারতের বিভিন্ন ক্লাবে খেলেন। সেই তালিকায় আছে সালগাওকর, জেসিটি, মহীন্দ্রা, বেঙ্গল মুম্বই ক্লাব। ফুটবল ছেড়ে তিনি মোহনবাগান ক্লাবের ফুটবল স্কুলের দায়িত্ব নেন। সেখান থেকে কিছূ দিন মডেলিং করে যোগ দেন রাজনীতিতে। মোহনবাগানের প্রাক্তন সচিব প্রয়াত অঞ্জন মিত্রের তিনি জামাই।
ফুটবল জীবনে দু বার দেশের সেরা গোলকিপার মনোনীত হলেও এবং এক গুচ্ছ টুর্নামেন্টে জাতীয় দলের স্কোয়াডে থাকলেও কল্যাণ কখনও দেশের জার্সি পরে মাঠে নামেননি। এখন তিনিই ভারতীয় ফুটবলের ডণ্ডমুন্ডের কর্তা। কল্যাণের প্রথম দায়িত্ব হবে ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া অনূর্ধ্ব ১৭ মেয়েদের বিশ্ব কাপ ভাল ভাবে সংগঠন করা। তার আগে অবশ্য তাঁকে ফেডারেশনের সচিব মনোনয়ন করতে হবে। এখন পর্যন্ত যা খবর দিল্লির সাজি প্রভাকরণ নতুন সচিব হতে পারেন।