কলকাতা: রাজ্যে ইতিমধ্যেই চার দফার ভোট পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। বাকি আর তিন দফা। আগামী সোমবার ২০ মে রাজ্যে পঞ্চম দফার ভোট। তারপর ২৫ মে ষষ্ঠ এবং ১ জুন শেষ অর্থাৎ সপ্তম দফায় ভোট হবে। তার আগেই তৃণমূলের দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবি করল রাজ্য বিজেপি (BJP)। গেরুয়া শিবিরের দাবি, দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় ও বসিরহাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের মনোনয়নপত্রে একাধিক অসঙ্গতি আছে।
বুধবার রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে জানান, মালা রায় (Mala Roy) ও হাজি নুরুলের মনোনয়নপত্রে গুরুতর গলদ আছে। তা ছাড়া সঠিক আইন মেনে মনোনয়নপত্র জমা করা হয়নি। তাই ওই দুই তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দুই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীরা। বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের অভিযোগ, হাজি নুরুল ইসলাম পঞ্চদশ লোকসভার সদস্য ছিলেন। সেই পঞ্চদশ লোকসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৪ সালের ১৮ মে।
হাজি নুরুল ইসলাম (Haji Nurul Islam) এবারে মনোনয়ন দাখিল করেছেন ২০২৪-এর ৭ মে। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, কোনও প্রার্থীর শেষ দশ বছরে যদি কোনও ধরনের সরকারি পরিষেবা নেওয়া বা সরকার পক্ষ থেকে নেওয়া বিধিবদ্ধ বিল যদি বাকি থাকে সেই বিল তাঁর মিটিয়ে দেওয়ার কথা। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সরকারের ঘরে যেকোনও রকমের কোনও বকেয়া নেই তা নির্বাচনী হলফনামায় জানানোর কথা। কিন্তু হাজি নুরুল ইসলাম লোকসভার সদস্য পদে মেয়াদের ১০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই মনোনয়ন দাখিল করেছেন। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, তাঁর হলফনামায় নো ডিউ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া উচিত। কিন্তু হাজি নুরুলের মনোনয়নের হলফনামা অনুযায়ী, তিনি কোনও নো ডিউ সার্টিফিকেট জমা দেননি। সেই অভিযোগ সমানে রেখেই বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র নির্বাচন কমিশনের কাছে হাজি নুরুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিলের আবেদ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: অন্নপূর্ণা ভাণ্ডার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সৌমিত্রর
অন্যদিকে, দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন। কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন থাকার যে বিধিবদ্ধ আইনগুলি রয়েছে তাতে তা একটি অফিস অফ প্রফিট। পশ্চিমবঙ্গের যেসব অফিসের নাম অফিস অফ প্রফিটের তালিকায় আছে তার মধ্যে কলকাতা পুরসভার নাম নেই। তাই কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন থাকাকালীন সেখান থেকে পদত্যাগ না করে দক্ষিণ কলকাতার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা করে অফিস অফ প্রফিট আইন লঙ্ঘন করেছেন। সেই কারণে দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের মনোনয়ন বাতিলের আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত. হলফনামায় নো ডিউজ সার্টিফিকেট না দেওয়ায় নির্বাচন কমিশন বীরভূম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন আইপিএস অফিসার দেবাশিস ধরের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেয়। রাজ্য সরকার তাঁকে নো ডিউজ সার্টিফিকেট দেয়নি বলে্ অভিযোগ ছিল। এরকম হতে পারে আঁচ করেই রাজ্য বিজেপি বীরভূম কেন্দ্রে্ দেবতনু ভট্টাচার্যকে দিয়েও মনোনয়নপত্র দাখিল করিয়ে রেখেছিল। শেষ পর্যন্ত তিনিই প্রার্থী থেকে যান বীরভূম কেন্দ্রের।
আরও খবর দেখুন