কলকাতা: ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পরদিনই ফের বিভাস অধিকারীকে (Bibhas Adhikari) তলব করল সিবিআই (CBI)। আজই নিজাম প্যালেসে (Nizam Palace) তাঁকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, শনিবার তল্লাশি চালিয়ে যে সমস্ত নথি উদ্ধার হয়েছে সেই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই এ দিনের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। তবে তলবের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের (TMC) প্রাক্তন ব্লক সভাপতি। তিনি বলেন, তলবের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি কোন নোটিশ বা ফোন পাইনি।
নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় দীর্ঘদিন ধরে সিবিআই ও ইডির স্ক্যানারে নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি বিভাস অধিকারী। আগে তাঁর কলকাতার একটি ফ্ল্যাট সিল করে দিয়েছিলেন ইডি আধিকারীরা। পরবর্তীতে অনুমতি নিয়ে সিল ভেঙে ঘরে ঢোকেন বিভাস। এসবের মঝেই গতকাল অর্থাৎ শনিবার সকাল থেকেই নলহাটিতে বিভাসের বাড়ি ও আশ্রমে সাড়ে ৭ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালায় সিবিআই। একইসঙ্গে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কাছে কলকাতায় বিভাসের ফ্ল্যাটেও চলে তল্লাশি। দফায় দফায় জেরা করা হয় বিভাসকে।
আরও পড়ুন:Jagadish Shettar | Submits Resignation | টিকিট না পেয়ে বিজেপি ছাড়লেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
সিবিআই পয়লা বৈশাখের দিন থেকেই বাংলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় চষে বেড়িয়েছেন অফিসাররা। দফায় দফায় তল্লাশি করেছেন। বিভাস অধিকারীকে নানা কথা জিজ্ঞাসা করেছেন। কিন্তু তাঁর জবাবে সন্তুষ্ট নন সিবিআই অফিসাররা। তাই কতজন অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়েছে বিভাস সেটাই এখন জানতে চান গোয়েন্দারা। বিভাসের যে ট্রেনিং কলেজ আছে, সেখানেই দুর্নীতির আসল আখড়া কিনা সেটাও জানতে চায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকদের দাবি, বিভাস অধিকারী অন্যতম মাস্টার মাইন্ড। কারণ ২০১২ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশনের মাথায় ছিলেন বিভাস। শুধু নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি নয়, বিএড, ডিএলএড, কলেজে অনুমোদন পাইয়েও দিতেন তিনি। সব মিলিয়ে বেশ কয়েক কোটি টাকা নিজের পকেটে পুরেছিলেন বিভাস এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা বিভাস অধিকারী। স্ত্রী, সন্তান রয়েছে। তাঁর দুটি পরিচয়। প্রথমত, অত্যন্ত ধার্মিক হিসেবেই এলাকায় পরিচিত বিভাস। নিজের হাতে তৈরি আশ্রম রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি রাজনীতিতেও সক্রিয়। প্রথমে সিপিএম নেতা, পরে নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন তিনি। নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলের মুখে বিভাসের নাম প্রথম শোনা যায়। শনিবার বিভাস বলেন, চোর, ডাকাতরা নিজেরা বাঁচার জন্য অনেক আজেবাজে কথা বলে। ওদের কথায় গুরুত্ব দিয়ে লাভ নেই। ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভাস বীরভূমে তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। অপারেশনের কারণে তিনি পদ ছেড়ে দেন বলে দাবি বিভাসের। নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর নাম আগেই জড়িয়েছে। ধৃত তাপস মণ্ডল-সহ একাধিক শিক্ষাকর্তার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ। তিনি জানান, তাঁর, ছেলের এবং পরিবারের আরও অনেক সদস্যর ব্যাঙ্কের নথি, বিএড কলেজের কাগজপত্র সিবিআই নিয়ে গিয়েছে। তিনি সব প্রস্তুত করে রেখেছিলেন।