কলকাতা: করোনায় (Covid-19 Kolkata) আক্রান্ত খোদ স্বাস্থ্য ভবন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য সহ ৭০ জন করোনায় ভুগছেন। তাঁরা দুজনেই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। চিকিৎসক সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে স্বাস্থ্য ভবনের বহু কর্মী আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলিকে রোজই জুনিয়র-সিনিয়র চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীদের কোভিড পজিটিভ (Covid-19) হওয়ার সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
জেলার হাসপাতালগুলিতেও একই অবস্থা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে কলকাতা ও আশেপাশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সাতশোরও বেশি চিকিৎসক করোনার কবলে পড়েছেন। কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি। অধিকাংশ চিকিৎসকই হোম আইসলেশনে রয়েছেন।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের এরকম ব্যাপক হারে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যমহল। এই অবস্থা ছলতে থাকলে অচিরেই সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের।
আরও পড়ুন Covid19 Vaccine: ‘ভ্যাকসিন নিতে ভাল লাগে’ ১১ বার টিকা নিলেন বিহারের ব্রহ্মদেব
সরকারি চিকিসকদের অন্যতম সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেস ডক্টরস এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটাও সম্প্রতি আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। তিনি বলেন ‘পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপের দিকে যাচ্ছে। একাধিক সরকারি হাসপাতালে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা দাঁড়িয়েছে।’ তাঁর অভিযোগ, প্রয়োজন মতো করোনা টেস্ট হচ্ছে না। বহু মানুষ মৃদু উপসর্গ নিয়ে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। টেস্ট করলে অধিকাংশেরই করোনা ধরা পড়বে। সরকারকে অবিলম্বে টেস্টের পরিণাম বাড়াতে হবে বলে দাবি মানসবাবুর।
আরও পড়ুন Covid Bengal: বসিরহাটে ২টি সেফ হোম, পশ্চিম মেদিনীপুরে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে গঙ্গাসাগর মেলা- মামলার শুনানিতেও সরকারি হাসপাতালের পরিষেবারও প্রসঙ্গ ওঠে। ওই মামলায় পার্টি হয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামও। ফোরামের আইনজীবী অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, এন আর এস হাসপাতালে ১৯৮ জন, আরজি করে ১২৯, চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজে ১০৩ জন, স্বাস্থ্য ভবনে ৬৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক আক্রান্ত। এছাড়া এস এস কে এম ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেরও বহু চিকিৎসক করোনায় ভুগছেন। অনিরুদ্ধ আদালতে আরও জানান, সাগর হাসপাতালে মাত্র ৬০ টি বেড রয়েছে, চিকিৎসক আছেন মাত্র ১১ জন। সাগরের আশপাশে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে বেডের কোনও ব্যবস্থা নেই। এই অবস্থায় কোনও ভাবেই গঙ্গাসাগর মেলা করা ঠিক হবে না।