আলিপুরদুয়ার: অন্তঃসত্ত্বা বধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দুপক্ষের বচসায় উত্তাল আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল চত্বর। স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের উপর চড়াও হলেন বধূর পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই গৃহবধূর নাম নমিতা দাস।
জানা গিয়েছে, দেড় বছর আগে ফালাকাটার বাসিন্দা নমিতা দাসের সঙ্গে আলিপুরদুয়ার দুই নম্বর ব্লকের নুরপুরে়র বাসিন্দা বিপ্লব বিশ্বাসের বিয়ে হয়। অভিযোগ, কিছুদিন পর থেকেই ওই গৃহবধূর উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার শুরু করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। গৃহবধূ অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে সেই অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। অভিযোগ গৃহবধূ নমিতা দাস অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর দীর্ঘ ৯ মাসে মাত্র একবার গৃহবধূকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকি নিজের রান্না করতে না পারলে তাকে খাবার যোগান ও দেওয়া হতো না। মৃত গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, একাধিকবার গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের গৃহবধূকে চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে আগ্রহ দেখানো সত্ত্বেও জোরপূর্বক তাঁর চিকিৎসা আটকে রাখা হয়। এমনকী নিজের বাড়িতেই আঁতুর ঘর তৈরি করে সন্তান প্রসবের জন্য ব্যবস্থা করে।
আরও পড়ুন: রেশনে কারচুপি ও নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ, বিক্ষোভ গ্রাহকদের
শনিবার সকালে নমিতা গুরুতর অসুস্থবোধ করায় তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে প্রথমে যশোডাঙ্গা গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। তবে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ওই গৃহবধূ ও তাঁর গর্ভে থাকা শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মেয়ের মৃত্যুর খবর পৌঁছয়নি পরিবারের কাছে বলে অভিযোগ। পরে নমিতার অসুস্থতার কথা শুনে হাসপাতালে গেলে জানতে মেয়ে মারা গিয়েছেন বলে জানতে পারে পরিবার। এই ক্ষোত্রে গতকাল রাত ১০টা নাগাদ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের উপর চড়াও হয় নমিতার পরিবার। লাগাতার চলে চর ও ঘুষি। এমনকী শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জুতো পেটাও করেন মৃত গৃহবধুর পরিবারের লোকেরা। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে হাসপাতাল চত্বর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে আলিপুরদুয়ার থানার ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এই ঘটনায় শনিবার রাতেই স্বামী ও শশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে শামুকতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে গৃহবধুর পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী এবং শশুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
দেখুন আরও অন্যান্য খবর: