কলকাতা: হাইকোর্টের রায়ে ক্ষুব্ধ কামদুনির প্রতিবাদীরা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছেন। একইসঙ্গে আবরাও তাঁরা কামদুনির পথে নামার পরিকল্পনা নিয়েছেন। নির্যাতিতার পরিবার শুক্রবারই জানিয়েছে, এই রায়ে তারা খুশি নয়। হাইকোর্টের রায়কে চ্য়ালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কামদুনির প্রতিবাদী আন্দোলনের অন্যতম মুখ প্রদীপ মুখোপাধ্যায় এদিন বলেন, এই রায় কামদুনির মানুষ মানতে রাজি নয়। আবার আমরা আগের মতো আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই।
নিহত কলেজছাত্রীর দুই বাল্যবন্ধু টুম্পা কয়াল এবং মৌসুমি কয়াল এদিন কলকাতা হাইকোর্টে ছিলেন। আদালতে আসার আগে তাঁরা নির্যাতিতার মূর্তিতে মালা দেন। হাইকোর্টের রায় শুনে দুজনেই আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। অসুস্থ হয়ে পড়েন নির্যাতিতার ভাইও। সকলেরই বক্তব্য, সরকারি আইনজীবীরা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছিলেন। তবে টুম্পা এবং মৌসুমি বলেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি। এর শেষ দেখে ছাড়ব।
টুম্পা বলেন, গত ১০ বছর ধরে আমরা দোষীদের চরম শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করে চলেছি। পাশাপাশি আদালতেও লড়াই চালাচ্ছিলাম। নিম্ন আদালতের রায়ে কিছুটা ভরসা পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আমাদের আন্দোলন সফল হল। কিন্তু আজ হাইকোর্টের রায় আমাদের হতাশ করে দিয়েছি। তাঁর আরও অভিযোগ, গত ১০ বছর ধরে আন্দোলন করার জন্য তাঁকে নানা হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। এমনকী তাঁকে বড় অঙ্কের টাকার অফারও দেওয়া হয়েছিল আন্দোলন থেকে সরে আসার জন্য। টুম্পা বলেন, আমার বাবা সেই অফার ঘৃণার সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, মেয়ে কখনও টাকার বিনিময় বিক্রি হবে না। ও এই আন্দোলন থেকে সরেও আসবে না।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে না সুপ্রিম কোর্টের
কামদুনি আন্দোলনের আর এক প্রতিবাদী মুখ মৌসুমি কয়ালকেও গত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করার মাসুল দিতে হয়েছে। তাঁকে এবং টুম্পাকে ঘটনার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কামদুনিতে গিয়ে সিপিএম এবং মাওবাদী বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন। তবু তাঁরা দুজন আন্দোলন থেকে সরে আসেননি। টুম্পার বাড়িতে বোমা পর্যন্ত মারা হয়েছে একাধিকবার। মৌসুমি বলেন, সরকারি আইনজীবীরা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছিলেন। তাছাড়া দোষীদের শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছারও অভাব ছিল। টুম্পা এবং মৌসুমি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতু দিয়েছিলেন ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে দোষীদের দ্রুত বিচার করে শাস্তি দেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল?
দেখুন আরও অন্যান্য খবর: