কলকাতা: মুখ্যসচিবের সঙ্গে কুড়মি সমাজের বৈঠকেও মিলল না কোনও সমাধানসূত্র। আদিবাসী কুড়মি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্ত করা, সারনা ধর্মের স্বীকৃতি, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা-সহ একাধিক দাবিতে কুড়মি সমাজ অনেক দিন ধরেই আন্দোলন করছে। সম্প্রতি তারা রেল এবং রাস্তার রোকো আন্দোলনে নামে। চারদিন পর তাদের অবরোধ ওঠে। মঙ্গলবার ওই সব দাবিতেই কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গ নবান্নে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠকে বসে। রাজেশ মাহাতর নেতৃত্বে ২০ জনের এক প্রতিনিধিদল ওই বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠক থেকে বেরিয়ে রাজেশ বলেন, এই বৈঠকে আমরা খুশি নই। আমাদের দাবি দেওয়ার বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট আশ্বাস মেলেনি। কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।
কুড়মিদের অভিযোগ, ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকারকারের কাছে রাজ্যের তরফে একটি সিআরআই রিপোর্ট গিয়েছিল। তার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৩ সাল পর্যন্ত জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট পাঠাতে বললেও রাজ্য সরকার তা পাঠায়নি। এর আগে ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রক রিমাইন্ডার দিলেও রাজ্য সরকার ২০১৭ সালের একটি পুরনো রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয়।
রাজেশ বলেন, আমাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনার জন্য কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই দাবি মানেনি। এছাড়া অন্যান্য দাবি দাবা নিয়েও মুখ্যসচিব কোনও আশ্বাস দেননি। সেই কারণেই আমরা বলছি বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। সোমবার বাঁকুড়ার খাতরায় এক সমাবেশে আদিবাসী একতা মঞ্চ কুড়মি সমাজের দাবি দাওয়ার প্রতিবাদ করে। তাদের তফসিলি উপজাতিভুক্ত করারও প্রতিবাদ জানানো হয়। ওই মঞ্চের নেতারা বলেন, কুড়মিরা তফসিলি জাতিভুক্ত হতে পারে না। একতা মঞ্চের ওই দাবি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে রাজেশ বলেন, ওরা কি ঠিক করে দেবে, কারা এসসি, এসটি? ওরা কি দেশের সংবিধান তৈরি করেছে? ওরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। সারা দেশেই কুড়মিরা তফসিলি উপজাতিভুক্ত। রাজেশ জানান, তাদের আন্দোলন চলবে। খুব শীঘ্রই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডেকে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
এদিকে আদিবাসী নেতা সনগিরি হেমব্রম বলেন, আজ নবান্নে কুড়মি সমাজকে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল, কিন্তু সেখানে আদিবাসীদের নিন্দা করা হয়েছে। ওরা আদিবাসী হওয়ার জন্য আন্দোলন করছে। আমরা এই বিরোধিতা করছি। কুড়মিরা যদি তফসিলি উপজাতিভুক্ত হয় তাহলে ভবিষতে ওদের অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। সেই কারণেই আমরা এই দাবি তীব্র বিরোধী।