দেশের সংবিধানের (Constitution) প্রস্তাবনায় উল্লিখিত জনগণের জন্য জনগণের শাসনের পরিবর্তে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এজেন্সির শাসন চালাচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন। কেন ধর্ম, সম্প্রদায় রাজনীতির ভিত্তিতে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। শুক্রবার বিধানসভায় (WBLA) সংবিধান দিবসের প্রাক্কালে ঐতিহাসিক ওই দিনের স্মরণে গৃহীত একটি সরকারি প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এই অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার অভিযোগও তোলেন তিনি। এর আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সহ বিরোধী বিধায়কেরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী ও সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, শিক্ষা ও আমলা তন্ত্রের রাজনীতি, বিরোধীদের মর্যাদা না দেওয়ার অভিযোগ করেন।
আর তাঁর বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দেন, রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক বজায় রাখা প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান রাজনীতিক তথা বিরোধী দলনেতার বাবা শিশির অধিকারীর প্রতি ব্যাক্তিগত শ্রদ্ধার কথা তিনি উল্লেখ করেন।
তার আগে প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সূচনা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় (Federal Structure) কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নিজস্ব দায়িত্ব আছে। তবে সংবিধানে মানুষের জন্য মানুষের শাসনের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু তা বেশিরভাগ সময়েই পার্টির জন্য পার্টির শাসনে পরিণত হচ্ছে। নির্বাচনে মানুষের মত প্রতিফলনের কোনও সুযোগ থাকে না। বিরোধী দলকে প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর (Chief Minister) প্রশাসনিক সভায় বিরোধী বিধায়কদের ডাকা হয় না। পুরসভা থেকে কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দীর্ঘদিন বকেয়া থাকছে।
বিরোধী দলনেতা বিচার বিভাগ সহ নানা ক্ষেত্রে যাতে কোনও ভাবেই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না হয় তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ব্যাহত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর পরে মনোজ টিগ্গা, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, নৌসাদ সিদ্দিকী বক্তব্য রাখেন।