কাতার: তিনি হতে পারতেন অর্জুন, কিন্তু ভাগ্যের ফেরে হয়ে উঠলেন কর্ণ। ‘যোদ্ধা’ হিসেবে তাঁর দক্ষতা প্রশ্নাতীত, তবু কাতারের কাপযুদ্ধে (Qatar World Cup) শেষ পর্যন্ত পরাজিতদের দলেই রয়ে গেলেন। সহজেই অনুমেয়, বলা হচ্ছে ফ্রান্সের ২৩ বছর বয়সি তারকা কিলিয়ান এমবাপের (Kylian Mbappe) কথা। একদিকে জোড়া গোল করে কাপ জিতে লিওনেল মেসি পাচ্ছেন অর্জুনের সম্মান। অন্যদিকে ‘কর্ণ’ এমবাপের প্রাপ্তি শুধুই হতাশা।
শুধুই হতাশা বললে একটু ভুল বলা হবে। এই বিশ্বকাপে মোট আট গোল করে সোনার বুট (Golden Boot) জিতেছেন তিনি। সেই ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ইংল্যান্ডের জেফ হার্স্ট (Geoff Hurst)। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত এই কীর্তি করে দেখাতে পারেননি কেউ। পেলে (Pele), মারাদোনা (Maradona), গার্ড মুলার, জিদান থেকে এখনের রোনাল্ডো (Ronaldo), মেসি (Messi) কারও বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক নেই। ২৩ বছর বয়সি ফরাসি তারকা সেটাই করে দেখালেন।
আরও পড়ুন: Qatar World Cup: মেসিকে ‘বিস্ত’ কেন পরানো হল? কী তাৎপর্য ওই পোশাকের?
বিশ্বকাপের আসরে মোট ১৪টা ম্যাচ খেলেছেন তিনি, গোল করেছেন ১২টা। সর্বোচ্চ গোলদাতা মিরোস্লাভ ক্লোজেকে (Miroslav Klose) ছুঁতে আর চারটে গোল প্রয়োজন এমবাপের। তাঁর সামনে সময় তো পড়ে আছে। কমপক্ষে আরও দুটো বিশ্বকাপ তো খেলবেনই। তাঁর রেকর্ড যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা কেউ জানে না। এহেন দুর্ধর্ষ ফরোয়ার্ডকে সর্বত্র চর্চা চলবে তাতে আর আশ্চর্য কী। কিন্তু শুধুই প্রশংসিত হচ্ছেন এমবাপে, এমন কিন্তু নয়। হচ্ছেন সমালোচিতও।
না, ফুটবলীয় কারণে তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট নয় কেউ, সেরকম জায়গাই রাখেননি তিনি। বিতর্ক উঠেছেন তাঁর আচরণে, মন্তব্যে। একটা নয়, ঘটনা একাধিক। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড বনাম ফ্রান্স (England vs France) ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেন হ্যারি কেন (Harry Kane)। সে সময় খুবই অসম্মানজনক মুখভঙ্গি করেন এমবাপে। এরপর ফাইনালের আগে তিনি প্রকাশ্যে বলেন, লাতিন আমেরিকার (Latin America) থেকে ইউরোপের (Europe) ফুটবল অনেক উন্নত। সেই কারণে ইউরোপের দেশ শেষ চারটে বিশ্বকাপ জিতেছে। এরপর ফাইনাল ম্যাচ চলাকালীন ক্লাব সতীর্থ লিওনেল মেসির (Lionel Messi) সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ রয়েছে এমবাপের বিরুদ্ধে।
তিনি বড়মাপের ফুটবলার তাতে কোনও সন্দেহ নেই। সেই কারণেই হেরে গিয়েও একদল মানুষের কাছে বীরের সম্মান পাচ্ছেন, সহানুভূতি পাচ্ছেন। কিন্তু আচরণে সংশোধন না আনলে সমালোচিত হতেই থাকবেন। আর এই সমালোচনার জেরে নষ্ট হতে পারে ফোকাস।