কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) স্থগিতাদেশ (Stay) সত্ত্বেও তৃণমূল নেতা (TMC Leader) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) তলব করল সিবিআই (CBI)। আগামিকাল মঙ্গলবার সকালেই তাঁকে দেখা করার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নোটিস (Notice) দিয়েছে। এব্যপারে তৃণমূল আইনি পদক্ষেপ করতে চলেছে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার হাজিরা দিচ্ছেন না অভিষেক। সোমবারই সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। বলা হয়, ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত সেই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
গত ১৩ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। দরকার হলে এই দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রাক্তন তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ এবং অভিষেককে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: Jiban Krishna Saha | শুধু নিয়োগ দুর্নীতি নয়, গরু পাচারেও জীবন যোগ, দাবি সিবিআইয়ের
কেন অভিষেকের নাম উঠে এল? কুন্তল গত ১ এপ্রিল প্রেসিডেন্সি জেল থেকেই হেস্টিংস থানার অফিসার ইনচার্জকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানান, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করছে। দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে কুন্তল আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারককেও চিঠি দেন। কুন্তলের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই ইডি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় দুটি চিঠিই আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং দক্ষিণ কলকাতার জেলা বিচারককে। সেইমতো দুটি চিঠিই আদালতে পেশ করা হয়। মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য আদালতে জানান, ২৯ মার্চ শহীদ মিনার ময়দানে অভিষেক যে ভাষণ দিয়েছেন, তার সূত্রেই কুন্তল এই অভিযোগ করছেন।
প্রসঙ্গত, ওইদিন অভিষেক বলেন, সারদা-কাণ্ডে মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পরেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আমার নাম বলার জন্য তাঁদের উপর চাপ দিয়েছিল। তারপর থেকেই আদালতে যাতায়াতের পথে কুন্তল সাংবাদিকদের কাছে ইডি এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। শুধু তাই নয়, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানান কুন্তল।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ১২ এপ্রিল বলেন, তদন্তের গতি স্তব্ধ করার জন্য এসব করা হচ্ছে। এই অতিচালাকি বরদাস্ত করা হবে না। পরের দিন তিনি বলেন, অভিষেকের ভাষণের সূত্রেই কুন্তল এই অভিযোগ করছেন কি না, তা জানা দরকার। তার জন্য অভিষেকের ভাষণকেও তদন্তের আওতায় আনা দরকার। সেই কারণেই অভিষেককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত সিবিআইয়ের। তিনি নির্দেশ দেন, এখন থেকে কোনও থানায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে যুক্ত কেন্দ্রীয় এজেন্সির অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ আনা যাবে না, কোনও এফআইআর করা যাবে না।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধেই অভিষেক সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। ২৪ এপ্রিল তার শুনানি হতে পারে। এদিন সেই আবেদনের ভিত্তিতে সু্প্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে বলে, এখন অভিষেককে ডাকাডাকি করা যাবে না। ২৪ এপ্রিল শুনানি পর্যন্ত স্তগিতাদেশ বহাল থাকবে। সেই নির্দেশের পরেও কী করে সিবিআই অভিষেককে হাজিরার নোটিস পাঠায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।