Sunday, June 1, 2025
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar | এলাটিং বেলাটিং সই লো, অথ সিবিআই কথা
Fourth Pillar

Fourth Pillar | এলাটিং বেলাটিং সই লো, অথ সিবিআই কথা

কেন বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ৩৫ জন ঋণখেলাপির মধ্যে ৩৩ জন গুজরাতবাসী

Follow Us :

এলাটিং বেলাটিং সই লো, কিসের খবর আইল? রাজা মশায় একটি বালিকা চাইল, কোন বালিকা চাইল? প্রচলিত ছড়া, রাজামশাইয়ের ইচ্ছে হলেই যে কোনও বালিকাকে চাইতে পারত, নবাব ইচ্ছে করলেই পারত, মধ্যযুগীয় সামন্ততান্ত্রিক সমাজ আর রাষ্ট্র ব্যবস্থার তো এটাই ছিল রীতিনীতি। তো মোদি সাম্রাজ্যে সেই মধ্যযুগীয় ব্যবস্থা ফিরে এসেছে, এখন এলাটিং বেলাটিং সই লো, কার ঘরে ইডি আইল? কাকে সিবিআই ডাকিল, ইনকাম ট্যাক্স কার ঘাড়ে চাপিল? এই চলছে। মোদি সাম্রাজ্যের ভরসা এখন সবকা সাথ, সবকা বিকাশ নয়, বিকাশ তো গঙ্গাঘাটে ভিক্ষে করছে, তাদের ভরসা এখন ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স, পুলিশ, থানা, জেলহাজত। সাধারণ মানুষ বিরোধিতা করলে ওয়াটার ক্যানন, লাঠিচার্জ, বুদ্ধিজীবীরা সরব হলে ইউএপিএ, আর্বান নকশাল। পয়সা আছে, ফুর্তি করো, ব্যাঙ্কের টাকা মেরে বিদেশে চলে যাও, আরামসে থাকো, রোজ কালাধন ফিরিয়ে আনার বাওয়াল দেব, কিন্তু কিচ্ছু করবো না। হাত মেলালে রেল, এয়ারপোর্ট, জাহাজ বন্দর থেকে তাজমহল, লালকেল্লা, কী চাই? হাত মেলালে পরিবেশ দূষণের দায়ে প্রজেক্ট আটকে যাবে না, সময়মতো দক্ষিণা পেলে তোলাবাজ পুলিশ যেমন ওভারলোডেড ট্রাক ছেড়ে দেয়, সেরকম ছেড়ে দেওয়া হবে, চাই কি লোনে হেয়ার কাট দেওয়া হবে, মানে ধার করেছেন? সুদ তো দিতে তো হবেই না, চাই কি আসলেও থাকবে বিরাট ছাড়। রামদেব বাবাকেই দেখুন না, রুচি সোয়া কোম্পানি কিনলেন, মাছের তেলে মাছ ভেজে, পাবলিকের পয়সায় ঢেঁকুর তুলছেন। ইডি গেছে? সিবিআই? কোটালপুত্রের ব্যালেন্স সিটের দিকে তাকান, জয় শাহ, ফুটবলের মতো চেহারা নিয়ে, ক্রিকেট কর্তা, তাঁর ৩৫০ শতাংশ সম্পদ বৃদ্ধি, সিবিআই গেছে? ইডি গেছে? প্রশ্নই নেই।

কেন বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ৩৫ জন ঋণখেলাপির মধ্যে ৩৩ জন গুজরাতবাসী, তাদের মধ্যে মেহুল ভাই, নীরব ভাই তো মোদিজির খুব পরিচিত, ইডি গেছে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে? ডেকেছে দফতরে, সিবিআই ডেকেছে? আসুন, বলুন, তাঁরা আপনার পরিচয় ভাঙিয়ে এত টাকা নিয়ে পালাল, তাতে আপনার ভূমিকা কী? প্রশ্ন করেছে? সবার চোখের সামনে, হাত পেতে টাকা নিল কাঁথির খোকাবাবু, দেখেননি? ডেকেছে এঁকে সিবিআই? ইডি? ধক আছে? না নেই। দু’ বেলা খেতে দিলে ডালকুত্তা কামড়ায় না, এই সহজ সরল সত্যটা সবাই জানে। তো এটাই নিও নর্মাল, বিরোধিতা করলে হয় পানসারে, গৌরী লঙ্কেশ, দাভোলকরের মতো গুলি খেয়ে লাশকাটা ঘরে ঢুকে যাও, না হলে গৌতম নওলাখা, সুধা ভরদ্বাজ, উমর খালিদের মতো জেলে পচে মরো, আর না হলে ইডির নোটিস, ইনকাম ট্যাক্সের রেড, সিবিআই-এর জেরার জন্য প্রস্তুত থাকো, জীবন অতিষ্ঠ করে দেওয়ার রাষ্ট্রীয় ছক। রোজই কারও না কারও ডাক পড়ছে, মন্ত্রী থেকে ছোট বড় নেতা, তৃণমূলের রাষ্ট্রীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী, কারও ছাড় নেই, ভোটে হারিয়েছিস? ঠিক হ্যায়, এবার দেখ কেমন লাগে! সেই জেলে পুরে দেওয়ার তালিকায় গতকাল বহু মানুষের নাম ছিল, আছে, তারা সব্বাই ওই রাজার বিরোধী, তারা সমস্বরে মাঝেমধ্যেই বলে রাজা তুই উলঙ্গ, রাজা তোর কাপড় কোথায়? সেই তালিকায় কলকাতা টিভির সম্পাদক কৌস্তুভ রায়ও আছেন। আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালও ছিলেন, ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল যাঁর কথা গতকালই আলোচনা করেছি। ম্যারাথন জেরা করে ছেড়ে দেওয়া হবে বা গ্রেফতার করা হবে, আবার ছাড়া হবে, আবার ডাকা হতেই পারে। এবার ছেড়ে দেওয়া হল, এর পরের বার ছেড়ে না দেওয়াও হতে পারে।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | কেষ্ট মোড়ল জামিন পেলেন, ফাঁপরে শুভেন্দু?

বিরোধী নেতারা বলেই যাচ্ছেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তস্য পুরনো মামলার কাগজ তুলে এনে ঘেউ ঘেউ, পরিচিত পদ্ধতি। কৌস্তুভ রায়কে ডাকা হল কেন? প্রথমে বলা হয়েছিল, ব্যাঙ্ক ঋণ এবং সেই সংক্রান্ত মামলার জেরে ডাকা হয়েছে, মামলা কবে হয়েছিল? মোদিজির সরকার, ২০১৪-তে ক্ষমতায় এসেছেন, মামলা তার পরেই হয়েছে। মোদিজির সরকার বা ব্যাঙ্কের কাছে এমন কোনও তথ্য নেই যে উনি ব্যাঙ্ক জালিয়াতি করেছেন, করলে ওঁকে এতদিনে নিশ্চিত জেলে থাকতে হত, অভিযোগ উঠেছিল, গ্রেফতার করা হয়েছিল, প্রমাণ হয়নি, এক মাসের মধ্যে জামিন পেয়ে বাইরেই আছেন। আবার গ্রেফতার করা হল, এবারে জেলে পোরা হল, অভিযোগ এক জেলখাটা অপরাধীর কাছ থেকে পাওয়া এক কাগজে দেখা যাচ্ছে যে সেই পিনকন নামে কোম্পানির মালিক, যিনি চিট ফান্ড জালিয়াতিতে ধরা পড়ে জেল খাটছেন তাঁর কাছ থেকে কলকাতা টিভি বিজ্ঞাপন পেয়েছে। কী কাণ্ড, সেই আসামির কাছ থেকে এই বঙ্গের বাকি সমস্ত সংবাদমাধ্যম ৬০-৭০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন পেয়েছে, কিন্তু দেড় লক্ষ টাকার মতো বিজ্ঞাপন নেওয়ার অপরাধে দু’ বছর ধরে একজন সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক জেলে। সব তথ্য সব্বার কাছে, কিন্তু রাজার ইচ্ছেয় তিনি জেলে। আসল কারণ আমাদের ভূমিকা, কলকাতা টিভির ভূমিকা, আমাদের এই চতুর্থ স্তম্ভের ভূমিকা। আমরা নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের পরে, এখনও রোজ মাথা সোজা করে, শিরদাঁড়া না বেচে, চোখে চোখ রেখে রোজ এই এলাটিং বেলাটিং হবুচন্দ্র রাজা আর গবুচন্দ্র মন্ত্রীদের বিরোধিতা করছি, আমরা প্রতিদিন এই রাজত্বের দুর্নীতি, দেশকে বেচে দেওয়ার চেষ্টা, ধর্মীয় মেরুকরণ, আর তীব্র সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি।

কারও সমর্থনে নয়, এই আরএসএস–বিজেপির বিরোধিতায় লড়ে যাচ্ছি, স্বদেশের জন্য লড়ে যাচ্ছি। দেশের জল জমিন, আসমান বেচে দেওয়ার যে পরিকল্পনা, তা রোখার জন্য লড়ে যাচ্ছি, কাঁথির খোকাবাবুদের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর যে পরিকল্পনা আছে বলে আমরা মনে করি, তার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি। কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়ার যে পরিকল্পনা মোদি–শাহ সরকার করছেন, তার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি, কাশ্মীরের মানুষজনকে দেশের থেকে আলাদা করে রাখার চেষ্টার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি। কোন মানুষ কী খাবে, কী পরবে তা নিয়ে ফতোয়া দেওয়ার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বিশ্বাসঘাতকদের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি, লড়ব। এটা আমাদের সম্পাদকীয় নীতি, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব, করছি। তাই সম্পাদক জেলে, তাই নোটিস আসছে। আজ নোটিস আসছে, কাল চ্যানেল বন্ধ করার হুমকি আসবে, পরশু সিবিআই আসবে আমরা জানি। মোদি–শাহের এই নির্লজ্জ হুমকি দেওয়ার পদ্ধতি আমরা বুঝে গেছি। কিন্তু ওঁরা বোঝেননি যে সবাই নীরব মোদি বা কাঁথির খোকাবাবু নয়। ক’ পয়সার জন্য দল বদলানো সাতেপাঁচে দাদাও আমরা নই, আমরা চতুর্থ স্তম্ভের মর্যাদা বুঝি, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তা বুঝি। বুঝি বলেই এই অপদার্থ সরকারের নীতি, এই আরএসএস–বিজেপির দর্শনের বিরুদ্ধে আমরা সরব আছি থাকব। দেখতে চাই ইডি, ইনকাম ট্যাক্স আর সিবিআই-এর কাছে কত শক্তি আছে, দেখতে চাই, শেষ পর্যন্ত দেশটা কারা চালাবে? ইডি আর সিবিআই দিয়ে ভয় দেখিয়ে, কতদিন জন-বিক্ষোভ সামলানো যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আপনারা দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ধ্বংস করতে চান, আমরা তা হতে দেব না। এবার আসি অন্য খবরে, গত পরশু, ২২ সেপ্টেম্বর ছিল বিশ্ব গন্ডার দিবস। তো এই দিবসের আগেই খবর পাওয়া গেল, আমাদের দেশে গন্ডারের সংখ্যা বেড়েছে, গন্ডারসুমারি করেই এ তথ্য আধিকারিকরা জানাচ্ছেন। ওই গন্ডার সুমারি না করলেও, অনায়াসেই বলা যায়, সত্যিই আমাদের দেশে গন্ডার বাড়ছে, সেই গন্ডার যাদের আজ সুড়সুড়ি দিলে ছ’ মাস পরে হাসে, সেই গন্ডার যাদের অনুভূতি শক্তি খুব ক্ষীণ, গন্ডারের চামড়া যাদের তাদের কানে সব কথা ঢোকে না। এই বাংলার মানুষ, সজোরে থাপ্পড় মেরেছে খোকাবাবুর গালে, সজোরে সশব্দে জানিয়ে দিয়েছে, এই বাংলায় দুর্বৃত্তদের ঠাঁই নেই, তবুও তারা ছলে বলে কৌশলে এই বাংলার দখল চায়। সম্ভবত গন্ডারের চামড়া বলেই, তাদের কানে বাংলার মানুষের আওয়াজ পৌঁছয়নি, তাদের থাপ্পড় গালে লেগেছে, অনুভূতিতে নয়।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Siliguri Incident | Modi | মোদির সফরের পরেই শিলিগুড়িতে হি/ন্দুত্ববাদীদের তা/ণ্ডব, দেখে নিন বড় খবর
00:00
Video thumbnail
India-Pakistan | ভারতের যু/দ্ধবিমান ধ্বং/স করেছিল পাকিস্তান? মেনে নিলেন সেনাপ্রধান!
00:00
Video thumbnail
BJP | Byelection | কালীগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী হয়ে তৃণমূলকে কী বার্তা আশীষ ঘোষের?
00:00
Video thumbnail
Sheikh Hasina | ফের সরাসরি বক্তব্য রাখছেন হাসিনা, কী বলছেন শুনুন
00:00
Video thumbnail
Sheikh Hasina | এই প্রথম সরাসরি বক্তব্য রাখছেন শেখ হাসিনা, দেখুন Live
00:00
Video thumbnail
Siliguri Incident | Modi | মোদির সফরের পরেই শিলিগুড়িতে হি/ন্দুত্ববাদীদের তা/ণ্ডব, দেখে নিন বড় খবর
08:40:01
Video thumbnail
Sheikh Hasina | ফের সরাসরি বক্তব্য রাখছেন হাসিনা, কী বলছেন শুনুন
11:52:35
Video thumbnail
ICC | Test Cricket | ক্রিকেটের নিয়মে বিরাট পরিবর্তন, কী কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ICC? দেখুন বড় খবর
08:53:05
Video thumbnail
BJP | Byelection | কালীগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী হয়ে তৃণমূলকে কী বার্তা আশীষ ঘোষের?
11:55:01
Video thumbnail
India-Pakistan | ভারতের যু/দ্ধবিমান ধ্বং/স করেছিল পাকিস্তান? মেনে নিলেন সেনাপ্রধান!
11:55:01