skip to content
Saturday, April 19, 2025
HomeScrollFourth Pillar | মোদিজি গদি ছাড়ুন
Fourth Pillar

Fourth Pillar | মোদিজি গদি ছাড়ুন

নির্বাচন আর নির্বাচন কমিশন দুটোকে নিয়েই বহু সংশয় বহু প্রশ্ন

Follow Us :

সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রথম কথাই হল মানুষের মতামত, আর সেই মতামত মানুষ দেয় নির্বাচনের সময়ে। কিন্তু সেই নির্বাচন আর নির্বাচন কমিশন দুটোকে নিয়েই বহু সংশয় বহু প্রশ্ন। ২০২৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সময়েই নির্বাচন কমিশন নিয়ে বেশ ঝামেলা হয়েছে। সবাই বলছেন, নির্বাচনের তথ্য কতটা স্বচ্ছ আর সঠিক? দুটো বড় প্রশ্ন, একটা হল ফর্ম ১৭সি তথ্য প্রকাশ নিয়ে বিতর্ক, আর একটা হল ভুয়ো ভোটার তালিকার ঝামেলা। এই দুটো ঝামেলা আর তার প্রেক্ষিতে বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়াই বুঝিয়ে দেয় যে, নির্বাচন সুষ্ঠু আর নিরাপদ করতে গেলে সবার ভরসা রাখাটাও খুব জরুরি।

প্রথম সমস্যা ফর্ম ১৭সি নিয়ে। এটা একটা জরুরি কাগজ, যেটা আজ নয় সেই ১৯৬১ সালের নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ীই বাধ্যতামূলক। এই ফর্মে প্রতিটা ভোট কেন্দ্রের ভোটের তথ্য থাকে। যেমন—কতজন ভোটার ছিল, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) কত ভোট পড়েছে, কতজন ভোট দিতে চায়নি বা দেওয়ার অনুমতি পায়নি, আর কোনও তথ্যে গরমিল হলে সেটাও লেখা থাকে। এছাড়া টেন্ডারড ব্যালট পেপার আর পেপার সিলের তথ্যও থাকে। ফর্ম ১৭সি-এর প্রথম অংশে ভোটের হিসেব লেখেন ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার, আর ভোট শেষে সেটার একটা কপি দেওয়া হয় প্রতিটা পোলিং এজেন্টকে। এই ফর্মে প্রিসাইডিং অফিসার আর পোলিং এজেন্টরা সই করেন, তারপর সেটা সিল করে ইভিএম-এর সঙ্গে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো হয়। ভোট গণনার দিন ফর্ম ১৭সি-এর দ্বিতীয় অংশে প্রতিটা প্রার্থীর পাওয়া ভোট লেখা হয়। রিটার্নিং অফিসার দেখেন যে প্রথম অংশের ভোট আর গণনার ভোট মিলছে কি না, আর কোনও গরমিল থাকলে সেটা লিখে দেন।

এই ফর্ম ১৭সি নিয়ে বিতর্কের মূল বিষয়টা হল নির্বাচন কমিশন (ECI) এই ফর্মের প্রথম অংশটা, যেখানে প্রতিটা ভোটকেন্দ্রের ভোটার উপস্থিতির তথ্য থাকে, সেটা ভোটের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে কি না। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (ADR) আর বিরোধী দলগুলো বলছে, এই তথ্য সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ করা উচিত। কারণ, ভোটের দিন যে অস্থায়ী ভোটার উপস্থিতির তথ্য দেওয়া হয়, আর কয়েক দিন পর যে চূড়ান্ত তথ্য দেওয়া হয়, তার মধ্যে অনেক গরমিল দেখা যাচ্ছে। যেমন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে কিছু দফায় ৫-৬ শতাংশ গরমিল হয়েছে। প্রথম দফার ভোট ১৯ এপ্রিল হয়, কিন্তু তথ্য প্রকাশ করা হয় ১১ দিন পর। দ্বিতীয় দফার ভোট ২৬ এপ্রিল হয়, তথ্য প্রকাশ করতে ৪ দিন লাগে। এত দেরি কেন, আর কেন সঙ্গে সঙ্গে তথ্য দেওয়া হল না, এটা নিয়ে সবাই প্রশ্ন তুলছে। আর ECI যে তথ্য দেয়, সেটা শতাংশে দেয়, ফর্ম ১৭সি-তে যে আসল সংখ্যা থাকে, সেটা দেয় না। তাই সবাই বলছে, আসল তথ্য প্রকাশ করো। কেবল পার্সেন্টেজ কেন? কত ভোট পড়ল, পুরো ফিগারটা দিতে অসুবিধে কোথায়? কিন্তু কেন জানা নেই, ECI এটা প্রকাশ করতে চায় না। তারা বলছে, আইন অনুযায়ী এই ফর্ম শুধু পোলিং এজেন্টদের দেওয়া বাধ্যতামূলক, সাধারণ মানুষ বা মিডিয়ার সঙ্গে শেয়ার করার দরকার নেই। ECI একটা ২২৫ পাতার এফিডেভিটে বলেছে, ফর্ম ১৭সি প্রকাশ করলে সেটা বদলে ফেলা যেতে পারে। যেমন, কেউ ছবি বদলে গণনার ফল বদলে দিতে পারে, তাতে মানুষের মধ্যে অশান্তি আর নির্বাচনের উপর ভরসা কমে যাবে। ECI আরও বলেছে, ফর্ম ১৭সি-তে পোস্টাল ব্যালটের ভোটও থাকে, তাই ভোট চলাকালীন এটা প্রকাশ করলে গোলমাল হতে পারে। তারা সুপ্রিম কোর্টে বলেছে, “এভাবে তথ্য প্রকাশ করলে হট্টগোল হবে।”

এই উদ্ভট বক্তব্যের পেছনে তো কোনও যুক্তিই নেই। অন্যদিকে, ADR আর কমন কজ নামে দুটো সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। তারা বলে, ফর্ম ১৭সি আর ভোটকেন্দ্রের তথ্য সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ করা উচিত। এটা প্রকাশ করলে নির্বাচন আরও স্বচ্ছ হবে, আর কেউ গোলমাল করলে সেটা ধরা যাবে। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর জুলাই ২০২৪-এ ADR একটা বিশ্লেষণ করে। তারা দেখে, পুরো দেশে মাত্র ৫টা লোকসভা কেন্দ্রে পড়া ভোট আর গণনার ভোট মিলেছে। বাকি ৫৩৮টা কেন্দ্রে গরমিল আছে। ৩৬২টা আসনে ৫.৫ লাখ ভোট কম গণনা হয়েছে, আর ১৭৬টা আসনে ৩৫,০০০ ভোট বেশি গণনা হয়েছে। এবং বোঝা যাচ্ছে যে এটা যদি ইচ্ছাকৃতই হয়ে থাকে তাহলে পুরো ফলাফল বদলে দেওয়ার একটা চক্রান্ত এর পেছনে আছে। ECI বলেছে, এটা প্রিসাইডিং অফিসারদের ভুল, বা মক পোলের ভোট মুছে ফেলতে ভুলে যাওয়ার জন্য হয়েছে। কিন্তু ADR-এর জগদীপ ছোকর এক্কেবারে ঠিক বলেছেন, “প্রতিটা ভোট গুরুত্বপূর্ণ, সব ভোটের হিসেব থাকা উচিত।” আসলে, ফর্ম ১৭সি-এর তথ্য প্রকাশ করলে কোন কেন্দ্রে গরমিল হয়েছে, সেটা ধরা যাবে, আর দায়ীদের ধরা যাবে, এই জন্যই কি নির্বাচন কমিশন এই তথ্যগুলো প্রকাশ করছে না? সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা উঠেছিল, কিন্তু ২৪ মে ২০২৪-এ তারা ECI-কে তথ্য প্রকাশের নির্দেশ দেয়নি। তারা বলে, নির্বাচন চলছে, মাত্র দুটো দফা বাকি, এখন এটা নিয়ে নির্দেশ দেওয়া ঠিক হবে না। অন্য ব্যাপারে অতি সক্রিয় আদালত এ ব্যাপারে কুঁকড়ে গেল কেন? এটাই দেখায়, যে নির্বাচনের স্বচ্ছতা আর নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য রাখাটা রাষ্ট্রের মাথায় থাকা কর্তাদের পছন্দ নয়। প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ওপি রাওয়াত বলেন, দেশে নির্বাচন করতে প্রায় এক কোটি লোক কাজ করে। এদের অনেকে বেশি পড়াশোনা করা নয়, আর ভোটকেন্দ্রে তাদের উপর অনেক চাপ থাকে। তাই নানান ভুল হয়েই যায়। ফর্ম ১৭সি রাতের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো হয়। পরের দিন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা সেটা প্রিসাইডিং অফিসারের ডায়েরি আর ভিডিও রেকর্ডিংয়ের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে। কয়েক দিন ধরে তারা তথ্য ঠিক করে, কিন্তু পোলিং এজেন্টদের সই নেওয়া হয় কি না, সেটা পরিষ্কার নয়। রাওয়াত বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো তো তাদের পোলিং এজেন্টদের কাছ থেকে ফর্ম ১৭সি-এর কপি পায়, তারা চাইলে নিজেরা প্রকাশ করতেই পারে। এর সঙ্গে জুড়েছে ভুয়ো ভোটার তালিকার ঝামেলা।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | ভারত একদা ধর্মনিরপেক্ষ থেকে আজ সাম্প্রদায়িক

এটারও দুটো দিক আছে, প্রথমটা হল এক ধরনের ফ্রড, কেউ কেউ ভুয়ো ভোটার আইডি বানিয়েছে, বানাচ্ছে, বানানো সহজ। আর রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি ভোটার তালিকায় গোলমাল হচ্ছে। মধ্যপ্রদেশে একটা ঘটনা হয়। ২০ বছরের একটা ছেলে, রঞ্জন চৌবে, ভুয়ো ওয়েবসাইট বানিয়ে ভুয়ো ভোটার আইডি বানায়। সে ইউটিউব থেকে এটা শিখে নিয়েছিল আর সেটা করার জন্য ভুয়ো সিম কার্ড আর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিল। প্রতিটা ভুয়ো আইডি সে ২০ টাকায় বিক্রি করেছে, এবং বকায়দা কিউআর কোড দিয়ে। ১৬ এপ্রিল ২০২৪-এ তাকে গ্রেফতার করা হয়। ECI-এর অভিযোগের পর তদন্ত শুরু হয়, আর দেখা যায় এটার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নও জড়িয়ে আছে। বিদেশি হাত আছে কি না, সেটাও দেখা হচ্ছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোও ভোটার তালিকায় গোলমালের অভিযোগ আজকের নয়। দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি আর আম আদমি পার্টি (AAP) একে অপরের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগিয়ে অভিযোগ করে। বিজেপি বলে, AAP একই ঠিকানায় শত শত ভুয়ো ভোটার যোগ করেছে, বিশেষ করে ৪০-৮০ বছরের কিছু সম্প্রদায়ের লোককে। তারা বলে, হঠাৎ ভোটার সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এটার প্রমাণ। AAP বলে, বিজেপি ‘অপারেশন লোটাস’ দিয়ে ভোটার তালিকায় গোলমাল করছে। তারা বলে, নিউ দিল্লি কেন্দ্রে ভোটার তালিকায় কাটা নামগুলো আবার যোগ করা হয়েছে। AAP নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছিলেন, বিজেপি টাকা দিয়ে পূর্বাঞ্চলী আর দলিত ভোটারদের নাম কাটছে। কেজরিওয়াল অভিযোগ জানান, কিন্তু বিজেপি বলে, এটা AAP-এর রাজনৈতিক চাল। কিন্তু দু’ দলের কেউই এটাকে সেই উচ্চতায় নিয়ে যায়নি, ভোটের সময়ে তু তু ম্যায় ম্যায় হয়েই রয়ে গিয়েছিল।

সাধারণ মানুষের মধ্যেও চিন্তা আছে। কিছু যোগেন্দ্র যাদবের মতো কিছু অ্যাকটিভিস্ট বলছেন, ভোটার তালিকা থেকে মুসলিম আর দলিতদের নাম কাটা হচ্ছে, যাতে তারা ভোট দিতে না পারে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ফর্ম ১৭সি আর ভুয়ো ভোটার তালিকার ঝামেলা কিন্তু একে অপরের সঙ্গে জড়িত। দুটোই দেখায় যে নির্বাচন স্বচ্ছ আর নিরাপদ রাখার জন্য যা যা করা উচিত তা করা হচ্ছে না। ECI বলছে, ফর্ম ১৭সি প্রকাশ করলে সেটা বদলে ফেলা যেতে পারে, যেমন ছবি বদলে গণনার ফল বদলানো যায়। এটা ভুয়ো ভোটার আইডি আর ভুয়ো খবরের ঝামেলা আরও বাড়াতে পারে। আর ভুয়ো ভোটার তালিকার ঝামেলা দেখায় যে ভোটার তালিকায় গোলমাল হতে পারে, যেটা ফর্ম ১৭সি-এর তথ্যের ভিত্তিটাই নষ্ট করতে পারে। এই অভিযোগ আর প্রমাণগুলো দেখায়, ডিজিটাল যুগে নির্বাচন করা কত কঠিন। টেকনোলজি দিয়ে কাজ সহজ হয়, কিন্তু গোলমালের সুযোগও বাড়ে। এআই আর ডিপফেক দিয়ে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে নির্বাচনের ফল বদলানো যায়, এই ধারণা ক্রমশ জমি পাচ্ছে। এবারে আসুন তৃণমূল দলের প্রতিবাদের কথা নিয়েও দু’ চারটে কথা বলা যাক, কারণ লোকসভা রাজ্যসভাতে তৃণমূলের প্রথম সারির প্রত্যেক নেতাই এই ইস্যু নিয়ে সরব হয়েছেন, এবং তাঁদের কথায়, সংসদের মধ্যেই কিছু দাবি পেশ করেছেন। তৃণমূলের বক্তব্য বা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল কমিশন ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) পক্ষে কাজ করছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই এই অভিযোগ জোরালো হয়েছে। তখনও তৃণমূল দল বলেছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নির্বাচনের আচরণবিধি (Model Code of Conduct বা MCC) ভঙ্গ করছেন, কিন্তু ECI কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

যেমন, মোদি একবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে ভারতের অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল টেস্টের কথা বলেছিলেন, নির্বাচন চলাকালীন এই ধরনের প্রচারকে স্বাভাবিকভাবেই সরকারি কাজের প্রচার হিসেবে দেখা হয়। বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল, এটা MCC ভঙ্গ, কিন্তু ECI বলেছিল, এতে কোনও সমস্যা নেই। আর একটা বড় ঝামেলা হয়েছিল ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গে। তখন লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার আগে কলকাতায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোড শোর সময়ে সেই ঘটনা সব্বার মনে আছে। বিজেপি কর্মীরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছিল, হ্যাঁ এটাই বলেছিল তৃণমূল। এরপর ECI একটা অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নেয়—তারা পশ্চিমবঙ্গের নয়টা লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারের সময় এক দিন কমিয়ে দেয়। কেন? কেউ বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙবে, আর কেউ শাস্তি পাবে, বেড়ে বিচার তো? তো তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ECI নিরপেক্ষ নয়, এটা বিজেপির পক্ষে কাজ করছে। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি প্রশাসন আর পুলিশের এত বন্দোবস্তের পরেও, ECI ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের প্রচারের সময় কমিয়ে দিয়েছে, যাতে বিজেপি লাভ পায়। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও বিতর্ক হয়। তখন কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ চলছিল, আর মাদ্রাজ হাইকোর্ট পর্যন্ত বলেছিল, ECI কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী, কারণ তারা নির্বাচনের সময় বড় বড় র‍্যালি আর ভিড়ের অনুমতি দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সময় প্রতিবাদ করে বলেন, ECI বিজেপির পক্ষে কাজ করছে, কারণ মোদি আর অমিত শাহ বড় বড় র‍্যালি করছেন, কিন্তু তৃণমূলের প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি এটাও বলেন, ECI কোভিডের সময় নির্বাচনের দিনগুলো বাড়িয়ে দিয়েছে, যাতে বিজেপি বেশি সময় পায়।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও পশ্চিমবঙ্গে বিতর্ক হয়। তখন তৃণমূল অভিযোগ করেছিল, ECI সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানোর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যেমন, একটা ভুয়ো ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী নাকি বলছেন, লোকে বিজেপিকে ভোট দিক, তৃণমূলকে নয়। বিজেপি নেতারাই নাকি এই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়, আর পরে জানা যায় এটা ভুয়ো। তৃণমূল বলে, ECI এই ধরনের ভুয়ো খবর বন্ধ করতে পারেনি, যেটা নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। মমতা ব্যানার্জি বা তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস বহুবার ECI-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ২০১৯ সালে যখন ECI পশ্চিমবঙ্গে প্রচারের সময় কমিয়ে দেয়, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ECI নিরপেক্ষতার ভানও করছে না। সরাসরিই বিজেপির পক্ষে কাজ করছে।” ECI সেবার মোদিজির বিরুদ্ধে নির্বাচনি বিধিভঙ্গের ১১টা অভিযোগকে পাত্তাও দেয়নি, যেগুলো কংগ্রেস দিয়েছিল। তৃণমূলের সঙ্গে সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব আর ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিনও প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন। অখিলেশ বলেন, “এটা গণতন্ত্রের নিয়মের বিরুদ্ধে,” আর স্ট্যালিন বলেন, “বিজেপির একটা প্যাটার্ন আছে— তারা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার মতো কাজ করে, আজ নয় বহুকাল ধরেই।” এই কদিন আগে ২০২৫ সালের মার্চে তৃণমূল আবার ECI-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। এবারে তাঁদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে ‘ভুয়ো ভোটার’ বা ‘ঘোস্ট ভোটার’ আছে, যেটা বিজেপি তৈরি করছে। তৃণমূলের একটা প্রতিনিধি দল, যার মধ্যে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস, আর রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের বক্তব্য, বিজেপি ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়ে নির্বাচনের ফল বদলাতে চায়। বিজেপি দিল্লি আর মহারাষ্ট্রে এটা করেছে। তারা অন্য রাজ্য থেকে ভুয়ো ভোটার এনে পশ্চিমবঙ্গে ভোট দিচ্ছে। ECI-এর উচিত প্রত্যেক ভোটারকে একটা ইউনিক আইডি দেওয়া, যাতে একই আইডি দিয়ে একাধিক ভোট না হয়। আমরা হাজার হাজার ভুয়ো ভোটার খুঁজে পেয়েছি।” মজার কথা হল, এই অভিযোগের সপক্ষে এত প্রমাণ ছিল যে তাকে এড়িয়ে যেতে পারেনি আমাদের শীতঘুমে বসে থাকা নির্বাচন কমিশনার। তাঁরা জানিয়েছেন, মাস তিনেকের মধ্যেই এই গরমিল ঠিক করা হবে। তাহলে প্রশ্ন তো উঠবেই যে এর আগে তাহলে যে ভোট হয়েছিল, সেগুলোকে আমরা কি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন বলতে পারি? আর মাদার অফ ডেমোক্রেসিতে ফাদার অফ ডেমোক্রেসির দেখরেখে যদি নির্বাচনে এত গন্ডগোল থাকে তাহলে সেই নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারকে আমরা মেনে নেব কেন? কাজেই দাবি তো উঠবেই, মোদিজি গদি ছাড়ুন।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Russia - Ukraine | Donald Trump | রাশিয়া-ইউক্রেন যু*দ্ধ নিয়ে বিরাট মন্তব‍্য ট্রাম্পের
00:00
Video thumbnail
C. V. Ananda Bose in Murshidabad | মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদে রাজ্যপাল, দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Bangladesh News | মুর্শিদাবাদের অশান্তি নিয়ে বাংলাদেশের বি*স্ফো*রক মন্তব্য, কড়া জবাব ভারতের
00:00
Video thumbnail
C. V. Ananda Bose | র*ণক্ষেত্র বৈষ্ণবনগর,রাজ্যপালকে ঘিরে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ,দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Murshidabad Unrest | মুর্শিদাবাদে পৌঁছল জাতীয় মহিলা কমিশন, কী কথা বললেন স্থানীয়দের সঙ্গে?
00:00
Video thumbnail
CPIM Brigade Sabha | রবিবার বামেদের ব্রিগেড সভা, আজ থেকেই শুরু জোর প্রস্তুতি, দেখুন সেই ছবি
00:00
Video thumbnail
America | Russia | রাশিয়া-ইউক্রেনের শান্তি চুক্তি থেকে সরে আসতে পারে আমেরিকা, কারণ কী?
00:38
Video thumbnail
Murshidabad | Congress | মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে যাচ্ছে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল
03:21
Video thumbnail
Murshidabad | স্বাভাবিক ছন্দে সামসেরগঞ্জ, শান্তি আর সম্প্রীতির বার্তা দিল মুর্শিদাবাদের আম জনতা
02:09