কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: সেনা বাহিনীতে অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে অগ্নিগর্ভ আন্দোলনের মধ্যেই আত্মঘাতী হলেন হরিয়ানার এক যুবক। পুলিস জানায়, বৃহস্পতিবার হরিয়ানার রোহতকে এই প্রকল্পের প্রতিবাদে শচীন নামে ওই যুবক আত্মহত্যা করেন। রোহতকের একটি বাড়িতে শচীন পেয়িং গেস্ট হিসেবে ভাড়া থাকতেন। নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন জিন্দ জেলার লিজওয়ানা গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরে সেনা বাহিনীতে যোগদানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই নয়া প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে জাতীয় পতাকা হাতে প্রতিবাদে নামে যুব সম্প্রদায়। রোহতকেও বিক্ষোভে যোগ দেন বহু যুবক। শচীনও এই বিক্ষোভে অংশ নেন বলে জানান তাঁর সহপাঠীরা। পালওয়ালে উত্তেজিত ছাত্ররা পুলিসের তিনটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। হরিয়ানার পালওয়ালে পুলিসের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে বিক্ষোভকারীদের। পুলিসের দিকে সমানে পাথর বৃষ্টি হয়। পুলিস লাঠি চালিয়েও জনতাকে বাগে আনতে পারেনি। তারা বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, হরিয়ানা-সহ একাধিক রাজ্যে যুবকরা এই প্রকল্পের প্রতিবাদে পথে নেমে পড়েছেন। রাস্তা, ট্রেন অবরোধ থেকে শুরু করে ভাঙচুর আগুন কিছুই বাদ যায়নি এই প্রতিবাদী আন্দোলনে। বিহার থেকেই সূত্রপাত হয়েছে এই প্রতিবাদের। পরে তা ছড়িয়ে যায় বিভিন্ন রাজ্যে। সেনা বহিনীতে নিয়োগের এই নয়া প্রকল্পের ঘোষণা মাত্রই যে পরিস্থিতি এরকম উত্তাল হয়ে উঠবে তা কেন্দ্রীয় সরকারের ভাবনার বাইরে ছিল।
মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে বিক্ষোভ আটকাতে পুলিস ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। বিভিন্ন ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, পুলিস কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে ফাটাতে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করছে। রাজ্যের একধিক জেলায় সড়ক এবং রেলপথ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: CBI SSC Recruitment: মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ডিরোজিও ভবনে তল্লাশি সিবিআইয়ের
মঙ্গলবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং অগ্নিপথ প্রকল্পের সূচনা করেন। এই প্রকল্পের অধীনে সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছরের ভারতীয় তরুণ-তরুণীদের চার বছরের জন্য সেনা বাহিনীতে নিয়োগ করা হবে। বছরে ৪৫ হাজার তরুণ-তরুণীকে নেওয়া হবে অগ্নিপথ প্রকল্পে। মেয়াদ শেষে ২৫ শতাংশ সেনাকে সরাসরি সেনা বাহিনীতে স্থায়ী পদে যোগদান করা হবে। বাকি ৭৫ শতাংশকে এককালীন আর্থিক সাহায্য করে কার্যত বিদায় দেওয়া হবে।