চোপড়া: পঞ্চায়েতের (Panchayet Election 2023) টিকিট কারা পাবে, তাই নিয়ে গোলমাল শাসকদলের (TMC) অন্দরে। বৃহস্পতিবার ভরদুপুরে সেই গোলমাল গড়াল গুলির লড়াইয়ে। তাতে মৃত্যু হয়েছে দুই তৃণমূল কর্মীর। গুলিবিদ্ধ আরও তিন কর্মী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি। ওই ঘটনাকে ঘিরে দিনভর উত্তেজনা চলে চোপড়ায়। পুলিশ (Police) জানায়, নিহতরা হলেন ফইজুল রহমান এবং হাসু মহম্মদ। এমনিতেই চোপড়ায় শাসকদল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ।
স্থানীয় সুত্রের খবর, চোপড়ার দিঘাবানার পার্টি অফিসে এদিন তৃণমূলের বুথ কমিটির সভা চলছিল। পঞ্চায়েত ভোটে কাকে কাকে প্রার্থী করা যায় তা নিয়ে আলোচনার মাঝেই বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। তারপর রীতিমতো শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গুলির লড়াই চলে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক তৃণমূল কর্মীর। গুলিবিদ্ধ অন্য জনকে প্রথমে চোপড়া দলুয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। গুলিতে জখম হন আরও তিন তৃণমূল কর্মী। তাঁদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তৃণমুল সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Nisith Pramanik | নিশীথের কনভয়ে হামলায় পুলিশ সহযোগিতা করছে না অভিযোগ সিবিআইয়ের
আর অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা করতে পারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে দিন ঘোষণা হওয়ার আগেই শাসক-বিরোধী দু’পক্ষই ভোটের প্রাথমিক প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে। সেই প্রস্তুতি ঘিরেই এই প্রথম রাজ্যে গুলি চলার ঘটনা ঘটল শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে। আর তাতে প্রাণ গেল দুজনের।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির নেতা সজল ঘোষ বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম, এবারের পঞ্চায়েত ভোটে যত না বিরোধীদের উপর হামলা হবে, তার থেকে বেশি হামলা হবে তৃণমুলের উপর। সেই হামলা করবেও তৃণমূলেরই অন্য গোষ্ঠী। চোপড়ার ঘটনায় আমাদের আশঙ্কাই সত্যি বলে প্রমাণিত হল। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, সবে তো শুরু। দেখুন, কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
বিরোধীরা অবশ্য আগেই দাবি করেছে, পঞ্চায়েত ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করতে হবে। এই ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও হয়েছে। বিরোধীদের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত ভোট হবে হিংসাত্মক। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিইয়েছে, পঞ্চায়েত ভোট হবে রাজ্য পুলিশ দিয়েই।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক দিন আগেই ঘোষণা করেছেন, পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট তিনিই দেবেন। জেলায় জেলায় দলের গোষ্ঠীকোন্দলের কথা মাথায় রেখেই কালীঘাটের দলীয় বৈঠকে নেত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোথাও যেন নেতারা টিকিট দেওয়ার কথা না বলেন। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ঘোষণা করেছেন, দাদা ধরে পঞ্চায়েতের টিকিট মিলবে না। তাঁর দাবি, এবার পঞ্চায়তে ভোট হবে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ। গায়ের জোরে ভোট করা বরদাস্ত করা হবে না।