মুম্বই: অন্য কারর হাতে দলের রাশ নয়, শরদ পাওয়ারই (Sharad Pawar) থাকছেন এনসিপির (Nationalist Congress Party’s) সভাপতি। শুক্রবার এনসিপির বৈঠকে এমলই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে আচমকাই দলের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন এনসিপি প্রধান পাওয়ার। তাঁর পরবর্তীকালে দলের ব্যটন কার হাতে থাকবে তা ঠিক করতেই শুক্রবার এনসিপির দফতরে বৈঠকে বসেন দলের অন্যান্য সদস্যরা। সূত্রের খবর, শরদ পাওয়ারই যাতে এনসিপি সভাপতি থাকেন, তার জন্য দলের কোর কমিটির তরফে একটি প্রস্তাবনা পাশ করানো হয়েছে।
সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান প্রবীণ রাজনীতিবিদ শরদ পাওয়ার প্রবীণ এই রাজনৈতিকবিদ শরদ পাওয়ার ১৯৯৯ সাল এনসিপির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দলের শুরু থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি দলের মধ্যে ভঙনের জল্পনা শুরু হয়েছিল। শোনা গিয়েছিল পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দিতে পারে। জল্পনার মাঝেই হঠাৎ শরত পাওয়ারের ইস্তফায় দলের নেতা ও কর্মীদের স্তব্ধ করে দিয়েছিল। শারদ পাওয়ার বৃহস্পতিবার বলেছিলেন যে তিনি দলের ভবিষ্যতের জন্য এবং নতুন নেতৃত্ব তৈরির জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি সাহেবের সঙ্গে আছি’- এই বার্তা লেখা ক্যাপ পরা বেশ কিছু এনসিপি কর্মীরা পাওয়ারের পদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু পাওয়ার সভাপতি পদ ছাড়ার জন্য যে ইস্তফাপত্র দিয়েছিলেন, তাও খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল।
এনসিপির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান প্রবীণ রাজনীতিবিদ শরদ পাওয়ার। প্রবীণ মরাঠা রাজনীতিবিদের বদলে তাঁর জায়গায় কাকে বসানো হচ্ছে তা নিয়ে এনসিপির পক্ষ থেকে খোলসা না করায় নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল। দলের অন্দরের খবর, মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে (Supriya Sule) এবং ভাইপো অজিত পাওয়ারের (Ajit Pawar) মধ্যে দলের কর্তৃত্ব ভাগ করে দিতে চাইছেন মরাঠা স্ট্রংম্যান। তবে এই জল্পনার মাঝে উঠে আসছে নতুন একটি নামও। সম্পর্কে শরদ পাওয়ারের নাতি রোহিত পাওয়ার (Rohit Pawar)। বিধায়ক এবং মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রোহিত এনসিপি সুপ্রিমোর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। দলের পরবর্তী সভাপতি কে হবেন তা চূড়ান্ত করার জন্য মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে, ভাইপো অজিত পাওয়ার, প্রফুল্ল প্যাটেলকে নিয়ে একটি প্যানেল তৈরি করে দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের চার বারের মুখ্যমন্ত্রী। অজিত পাওয়ার, সুপ্রিয়া সুলে, পারফুল প্যাটেল এবং ছগান ভুজবল সহ সিনিয়র এনসিপি নেতারা সকালে বৈঠকে বসেছিলেন। তারপরই সভাপতির পদে শরদ পাওয়ারই থাকছেন এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের শেষভাগে মহারাষ্ট্রের সরকার (Govt of Maharashtra) গড়া নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। যদিও নির্বাচনের ফল অনুসারে শিবসেনা-বিজেপি জোটেরই সরকার গড়ার কথা ছিল। কিন্তু শিবসেনার প্রস্তাব ছিল, পাঁচ বছরের সময়কালের অর্ধেক সময় তাঁদের দলীয় সদস্যকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। এই প্রস্তাব মানেনি বিজেপি। ফলে ফাটল ধরে তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কে। আর সেই সময়ই সরকার কারা গড়বে তা নিয়ে তীব্র অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়। ২০১৯-এ নির্বাচনের পর মহারাষ্ট্রের সরকার গড়া নিয়ে টালবাহানা চলছিল সেই সময়ই সদ্য প্রাক্তন জোটসঙ্গী শিবসেনাকে (Shiv Sena) হারিয়ে এনসিপির দিকেই জোটের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল বিজেপি। ‘লোক মাঝে সংগতি’ আত্মজীবনীতে দাবি করেছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ শরদ পাওয়ার (Sharad Pawar)। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে বিজেপি (BJP) জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির(এনসিপি)(NCP) সঙ্গে নির্বাচনের পরে আঁতাঁত করতে চেয়েছিল। কিন্তু বিজেপির হাত ধরে সরকার গঠনের মত আমার ছিল না। আমি নাকচ করে দিয়েছিলাম এই প্রস্তাব, দাবি করেছেন পাওয়ার।