কলকাতা: পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার পর বজবজের মহেশতলা। বেআইনি বাজি কারখানার বলি হল প্রাণ। এগরায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। বজবজের বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৩ জনের। এবার বেআইনি বাজি নিয়ে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি নবান্নের। বেআইনি বাজি কারখানা করতে দেওয়া যাবে না। কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমনই জানিয়েছেন তিনি। নবান্ন সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। এদিকে জানা গিয়েছে, বজবজে যেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে এদিনই সেই এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে গত কয়েক দিনে রাজ্যের একাধিক জেলায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ফলে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ঘরে বাইরে তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন ওঠায় এবার নড়েচড়ে বসল রাজ্য প্রশাসন। বাজি কারখানাগুলির উপর নজর রাখার জন্য নজরদারি কমিটি গঠন করল নবান্ন। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সোমবার এই কমিটির কথা জানিয়ে বলেন, দুমাসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তিনি জানান, সবুজ বাজির কারখানাগুলিকে একত্রিত করার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বাজি শিল্পকে বাঁচানোর জন্যই এই উদ্যোগ। রাজ্য সরকার মনে করছে, এর ফলে বেআইনি বাজি কারখানার উপর নিয়ন্ত্রণ আনা যাবে। মন্ত্রী বলেন, বাজি কারখানাগুলিতে ক্লাস্টার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। ক্লাস্টারে সুযোগ দেওয়ার পরও যারা বেআইনি কাজ করবে তারা শাস্তির মুখে পড়বে। মন্ত্রী আরও বলেন, কোথায় কোথায় বেআইনি বাজি তৈরি হচ্ছে, পুলিশকে তার খবর রাখতেই হবে।
আরও পড়ুন: Suvendu vs TMC | ‘শুভেন্দু প্রতিষ্ঠিত তোলাবাজ’, তীব্র আক্রমণ তৃণমূলের
সোমবার থেকেই বজবজের নন্দরামপুরে বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে পড়েছে সিআইডি। সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে প্রায় ৩৭ হাজার কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়। উদ্ধার হয় বেশ কিছু বারুদের ড্রাম। সেগুলি বজবজ থানায় রাখা হয়। অতিরিক্ত গরমের জন্য বারুদের ড্রাম থেকে ধোঁয়া বেরোতে থাকে। তা নিয়ে ফের আতঙ্ক ছড়ায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল। এদিন অকুস্থলে যায় ফরেন্সিক দলও। এদিকে সারা বাংলা আতশবাজি সমিতি অভিযোগ করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিরোধীরা ৭ লক্ষ বাজি ব্যবসায়ীকে খেপিয়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলেন, বজবজের ঘটনা নিছকই দুর্ঘটনা। তা নিয়ে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে। আতসবাজি ব্যবসায়ীদের বিপথে চালনা করার জন্য এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সমিতির চেয়ারম্যানের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে কোনও বোমার মশলা পাওয়া যায়নি। সোমবার ঘটনাস্থলে যান রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়। তাঁর দাবি, বজবজের ওই বাড়িতে বাজি তৈরি হত না। বিক্রির জন্য বাজি রাখা হয়েছিল। কোনও কারণে তাতে আগুনের ফুলকি লেগে যায়। তারপরেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যায় মহেশতলার একটি বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের (Explosion) ঘটনার তদন্তে নেমে ৩৭০০০ কেজি বাজি (Firecrackers) উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে তা বাজেয়াপ্ত করেছে। পাশাপাশি বজবজ ও মহেশতলা দুটি থানা মিলিয়ে পুলিশ ৩৪ জনকে গ্রেফতার (Arrested) করেছে।