Wednesday, June 18, 2025
HomeআজকেAajke | ছাগলের দাড়ি এবং রাজ্যপালের কিসসা 

Aajke | ছাগলের দাড়ি এবং রাজ্যপালের কিসসা 

Follow Us :

আমাদের শিক্ষাজগতে এক ঘোর শনির প্রকোপ লেগেছে। হ্যাঁ, এভাবেও অনেকে ব্যাখ্যা করছেন, একে তো অর্ধেকের বেশি শিক্ষা দফতরের কর্তাব্যক্তিরা জেলে। পরীক্ষা, তার নম্বর, তাই নিয়ে জালিয়াতি, মাস্টারমশাইদের চাকরি বিক্রি, হবু ও বর্তমান শিক্ষকদের ধরনা, বিচারকদের মুহুর্মুহু গর্জন ইত্যাদি তো আছেই। অন্যদিকে ধরুন তবুও গ্রামীণ উন্নয়ন বিভিন্ন প্রকল্প, রাস্তাঘাট, কিছুটা হলেও হাসপাতাল ইত্যাদির কিছুটা হলেও অগ্রগতির পাশে শিক্ষা, প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চ তা সে যে ধরনেরই হোক না কেন, আমাদের রাজ্যে তার মান যে খুব একটা বাড়েনি, তাও আমরা সব্বাই জানি। তবুও যেটুকু চলছিল সেখানে এক রাজ্যপালের কমল বনে মত্ত গস্তীর তাণ্ডবের ফলে ওঁ গঙ্গাযাত্রা হওয়ার কাছাকাছি। তিনি যে মানে এই আমাদের রাজ্যপাল যে প্রকৃত অর্থেই শিক্ষিত তা নিয়ে তো কোনও সন্দেহ নেই, তবে শিক্ষিত হলেই বিবেচক হবেন, শিক্ষিত হলেই বুদ্ধিমান হবেন, শিক্ষিত হলেই বিচক্ষণ হবেন এমন গ্যারান্টি তো বৈকুণ্ঠলোক থেকে দেওয়া হয়নি। ইনি সেই ব্যতিক্রমের মধ্যেই পড়েন। এবং আমাদের কপাল যে সেই ব্যতিক্রম এখন বাংলার রাজ্যপাল। প্রথম প্রথম ভাবা হয়েছিল ওঁর কিছুটা প্রচার বাতিক আছে, মিডিয়া বাতিক, ক্যামেরা বাতিক যাকে বলে, অঞ্জন দত্তের পরে তিনিই সেই একমাত্র বাংলার সেলিব্রিটি যিনি ভরদুপুর বা ভর সন্ধেয় একইভাবে নাকের ডগায় কালো চশমা ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। ফারাক হল অঞ্জন দত্ত সেই চশমার সঙ্গে এমন গলাবন্ধ কোট পরেন না আর লালমোহন গাঙ্গুলি সুলভ ইতিউতি তাকানোর অভ্যেস ওঁর নেই। কাজেই সব মিলিয়ে এক চমৎকার মিডিয়া খাদ্য হাজির দেখে মিডিয়াও হা রে রে রে রে করে নেমেছিল, কিন্তু তারাও এখন থমকে গেছে। আমাদের রাজ্যপাল হিংসার ধারাবাহিক ঘটনা না পেয়ে আপাতত শিক্ষাজগতে ধারাবাহিক হস্তক্ষেপ করেই চলেছেন। ওদিকে মন্ত্রী নট ও নাট্যকার, ব্রাত্য বসু, খাসা মজাদার মন্তব্য দিয়েই চলেছেন। শেষ মন্তব্যটিও ভারি সরেস, যিনিই চালভাজা তিনিই মুড়ি। দৃশ্যকল্পটি ভাবুন, এল নিনো তাড়িত এই অসম্ভব ভ্যাপসা গরমে আমাদের রাজ্যপালের গলাবন্ধ কোট এবং কালো চশমা সমেত ইন্দ্রলুপ্তখানি কল্পনা করুন, মনে পড়েই যাবে এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ তবু রঙ্গে ভরা। সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, ছাগলের দাড়ি এবং রাজ্যপালের কিসসা।

এক পুরোদস্তুর পরিকল্পনা মাফিক মোদি–শাহ জমানায় রাজ্যপালেদের নিয়োগ করা হচ্ছে। যে মোদিজি নিজে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, রাজ্যপাল পদে নিয়োগ যেন রাজনৈতিক দুনিয়া থেকে না হয়, রাজ্যপাল নিয়োগের আগে যেন রাজ্যের নির্বাচিত প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। গদিতে বসেই অন্য আরও দশটা বিষয়ের মতো এই কথাগুলোও বিলকুল ভুলে মেরেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। 

আরও পড়ুন: Aajke | সেলিম-অধীরের কেরালায় কুস্তি, বাংলায় দোস্তির গল্প 

প্রত্যেক রাজ্যে কিছু তাঁবেদার রাজ্যপাল নিয়োগ করে নির্বাচিত রাজ্য সরকারের প্রতিটা কাজে কীভাবে বাগড়া দেওয়া যায় তার এক ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চলছে দেশজুড়ে। বিহার থেকে ঝাড়খণ্ড, বাংলা থেকে কেরল, তামিলনাড়ু থেকে ছত্তিশগড়, একই ছবি প্রত্যেক রাজ্যে। এর মধ্যে আবার কিছু সেয়ানা পাগল গোত্রের মানুষ আছেন, তাঁরা জানেন কী করছেন, কতটা করা যায়, কতটা করা উচিত। অন্যদিকে চরম নির্বোধের মতো কাণ্ডকারখানাও আমরা কম দেখছি না। নির্বাচিত রাজ্য সরকার আছে, তার মুখ্যমন্ত্রী আছেন, সেই সরকারের শিক্ষামন্ত্রী আছেন। কিন্তু আমাদের রাজ্যপাল তাঁদের ঊর্ধ্বে, তিনি তাঁরই সার্কুলার, তাঁরই নির্দেশনামা অনুসারে একটি নয় বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একইসঙ্গে আচার্য, এবং উপাচার্য হয়ে গেলেন। ওই যে, যিনি চালভাজা তিনিই মুড়ি হলেন। তা হল, কিন্তু মুড়ি চালভাজাকে নির্দেশ দেবে না চালভাজা মুড়িকে নির্দেশ দেবে সে প্রশ্ন তো থেকেই যাচ্ছে, কাজেই সবমিলিয়ে এক কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা। তারপর তা শুধরে নিয়ে আবার সার্কুলার, শিক্ষা দফতর নয়, নির্বাচিত শিক্ষামন্ত্রী নয়, উপাচার্য নিয়োগ করছেন দিল্লির পাঠানো এক খাঞ্জা খাঁ। কাজেই যা হওয়ার তাই হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে একেই দুরবস্থায় আকার লেগেই ছিল, এখন আরও সঙ্গিন অবস্থা। অবস্থা এতটাই খারাপ যে শিক্ষা দফতরের সিনিয়র বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন কর্মচারীরা রোজ এসে মেল চেক করছেন, তাঁকে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হল কি না। ৫০ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছেন, অ্যাকাডেমিক ছবি খুবই খাস্তা, তারপরেও তাঁকে রাজ্য, নয়, দেশ নয় পৃথিবী বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করে দেওয়া হল। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, নির্বাচিত সরকার, শিক্ষামন্ত্রী বা মন্ত্রককে এড়িয়ে রাজ্যপালের এই নির্বিচার উপাচার্য নিয়োগ কতটা সঠিক বলে মনে করছেন? শুনুন আমাদের দর্শকরা কী মনে করছেন। 

আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রশাসনিক ক্ষেত্রের প্রত্যেক জায়গায় হয় কিছু যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ বা মানুষের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দেখা যায়। প্রত্যেক ক্ষেত্রে, মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন, পুলিশ কমিশনার যোগ্যতার ভিত্তিতে নিযুক্ত হন, সরকারি অফিসের কেরানির ক্ষেত্রেও তাই, আবার পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হন। একমাত্র পদ হল এই রাজ্যপাল, যা নির্দিষ্ট যোগ্যতার ভিত্তিতেও নয়, আবার এই পদ নির্বাচিত প্রতিনিধিরও নয়। এটা হল এক ধরনের জো হুজুর নিয়োগ, এ নিয়ে আজ নয় স্বাধীনতার পর থেকেই বহু প্রশ্ন উঠেছে। বহু ঠাট্টা ব্যঙ্গ করা হয়েছে, পদ্মজা নাইডু এই পদকে হোয়াইট এলিফ্যান্ট, সফেদ হাতি বলেছিলেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সবথেকে সরস তুলনা দিয়েছিলেন দক্ষিণের প্রবীণ নেতা সি আন্নাদুরাই। তিনি বলেছিলেন, রামছাগলের দাড়ি এবং রাজ্যপাল পদ দুটোই অপ্রয়োজনীয়। তো সেই ছাগলের দাড়ি, থুড়ি রাজ্যপালেই আটকে রয়েছে বাংলার উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Iran-India | ইরান থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার কাজ শুরু, কী কী সিদ্ধান্ত ভারতের? দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
FATTAH-1 | কী এই FATTAH-1? প্রথমবার আ/ঘা/ত করে ইজরায়েলকে চ/রম বার্তা, মাথায় হাত আমেরিকার?
00:00
Video thumbnail
FATTAH-1 | বিগ ব্রেকিং, তেল আভিভে FATTAH-1 হা/ম/লা ইরানের, কার্যত শেষ ইজরায়েল!
00:00
Video thumbnail
Mamata Banerjee | নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী, দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Weather Update | বুধবার তোলপাড় হবে কোন কোন জেলা? বর্ষা আসার পরই বিরাট খবর
00:00
Video thumbnail
100 Days Work | ১০০ দিনের কাজ নিয়ে বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের, দেখুন বড় খবর
00:00
Video thumbnail
TMC | Election | ২৬-এর আগে বাংলায় ফের সবুজ ঝড়, বিরাট জয় তৃণমূলের বিরোধীরা কোথায়?
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | পুতিনের সমর্থনে চাঙ্গা খামেনি, ট্রাম্পকে চরম হু/ঙ্কার, ইজরায়েলের কী অবস্থা করবে ইরান?
03:29
Video thumbnail
Iran-Israel | পুতিনের সমর্থনে চাঙ্গা খামেনি, ট্রাম্পকে চরম হু/ঙ্কার, ইজরায়েলের কী অবস্থা করবে ইরান?
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | Indian | ইরান থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার কাজ শুরু, কী কী সিদ্ধান্ত ভারতের?
03:25