Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeIPL 2024হলুদ সাম্রাজ্য ছিনিয়ে নীলের রাজপাট

হলুদ সাম্রাজ্য ছিনিয়ে নীলের রাজপাট

Follow Us :

চেন্নাই থেকে গৌতম ভট্টাচার্যের সুইচ হিট

চেন্নাই: এক মাঠ। এক টুর্নামেন্ট। এক প্রতিপক্ষ। এক বংশ। ভিন্ন সময়। অদৃষ্ট কী ভয়ঙ্কর বদল নিয়ে একই পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের অপেক্ষায় থাকতে পারে, মিচেল মার্শ রোববার আবিষ্কার করলেন। ছত্রিশ বছর আগে ভারত -বিশ্বকাপ ম্যাচে সেঞ্চুরি এবং ম্যাচ জয়ে দিনসেরার পুরস্কার নিয়ে গেছিলেন তাঁর বাবা জিওফ মার্শ। অথচ মিচেল এবারের বিশ্বকাপে অন্যতম সেরা অজি ভরসা শুধু শূন্যই করলেন না। বিরাট কোহলির লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দিলেন। যুবরাজ সিংকে দ্রুত টুইট করতে দেখলাম। সম্রাটকে ফেলার মূল্য চুকোতে হতে পারে অস্ট্রেলিয়াকে। বিরাট তখন ১২। প্রযুক্তি এমন করে দিয়েছে যে ভালো-খারাপ দুয়েরই সংরক্ষণ থেকে যায়। আর ইউ টিউবে যতবার ক্যাচ মিসটা দেখবেন জুনিয়র মার্শ। ততবার তাঁর মনে হবে জেতা ম্যাচএক মাঠ। এক টুর্নামেন্ট। এক প্রতিপক্ষ। এক বংশ। ভিন্ন সময়। অদৃষ্ট কী ভয়ঙ্কর বদল নিয়ে একই পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের অপেক্ষায় থাকতে পারে, মিচেল মার্শ রোববারটা তখনই চেন্নাই মাঠে ফেলে দিয়েছি। বিশ্বকাপটাও একই সঙ্গে গলিয়েছিলাম কিনা মাসখানেক বাদে জানতে পারব।

এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন বত্রিশ হাজারের কিছু বেশি দর্শক। আসন সংখ্যা আটত্রিশ হাজার। বাকি সাড়ে পাঁচ হাজার সিট ফাঁকা থাকল কেন ? যেখানে বুক মাই শো দেখিয়েছিল একটাও টিকিট পড়ে নেই ? একইরকম বিস্ময়কর অস্ট্রেলিয়ার এদিনের ফিল্ডিং। ক্যাচ ছাড়াও আউটফিল্ডে বেশ কিছু বল গলাল। আর ২ রানে তিন উইকেট থেকে ভারতের উদ্ধার পাওয়া । প্রথম তিন ব্যাটসম্যান শূন্য করার পর ভারত কখনো ওয়ানডে জিতেছে ? তা-ও বিশ্বকাপে ? তা-ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। স্ট্যাটসগুরুটুরু দেখছি না। হয়নি সিওর। টানব্রিজ ওয়েলস আরও মহাকাব্যিক হতে পারে। কিন্তু বিপক্ষে স্টার্ক-কামিন্স -হ্যাজলউড ছিল না ভাই।

ম্যাচে পরে যাওয়া যাবে । আগে এক আপাত অজানা ভদ্রলোকের কথা বলি। সি ডি গোপীনাথকে অবশ্যই হুমড়ি খেয়ে রবিবাসরীয় বিশ্বকাপ দেখতে বসা আধুনিক সময় চেনে না। অথচ তিনি ভারতীয় ক্রিকেট লাইব্রেরির গুরুত্বপূর্ণ চটি বই। বিভিন্নভাবে ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে পঞ্চাশ বছরের বেশি জড়িত থেকেছেন। কখনো টেস্ট ক্রিকেটার। কখনো নির্বাচক। কখনো প্রশাসক। নির্বাচক হিসেবে যুগান্তকারী এক বৈঠকে তাঁর জড়িত থাকার কথাও অনেকের মনে নেই। একাত্তরের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের অধিনায়ক নির্বাচন। যেখানে পতৌদিকে সরিয়ে ওয়াদেকরকে ক্যাপ্টেন করা হয়েছিল। আরও একটা অমর স্মৃতিচিহ্নের সঙ্গে চেন্নাইয়ের কার্পাকম গার্ডেনের অধিবাসী জড়িত। ভারতের প্রথম টেস্ট জয়ের সোনার এগারোর তিনি আপাতত একমাত্র জীবিত সদস্য। বাংলার কাছে বিশেষ স্মরণীয় সেই জয়। কারণ দুই বঙ্গসন্তান সেই জয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নেন। পঙ্কজ রায় আর কিপার প্রবীর সেন। রোববার চিপক মাঠের সেই ঐতিহাসিক সেই জয়ের স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে ভারতের একমাত্র ইনিংসে ৩৫ রান করা গোপীনাথ বলছিলেন, “শেষ দিনে ভিনু মানকড় আর গুলাম আমেদ যে কী বল করেছিল বোঝাতে পারব না। ”

আরও পড়ুন: ইতিহাসের পুরনো পাতা ফেরত না এলেই হয়

যে সময়ের কথা হচ্ছে , ভারত-অস্ট্রেলিয়া আজকের বিশ্বকাপ ম্যাচ থেকে ৭১ বছর পিছিয়ে। গোপীনাথ বাইশ বছরের তরুণ আর আজ তিরানব্বই বছরের প্রপিতামহ টাইপ। ভারতের দ্বিতীয় প্রবীণতম টেস্ট ক্রিকেটার। কিন্তু মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ ফিট। টি টোয়েন্টি এবং সিএএসকে পাগলামির গ্রাহক নন কখনো। মনে করেন চিপকের ক্রিকেটশিক্ষিত লোকেরা যারা ব্যাটসম্যান প্রয়োজনে মেডেন ওভার খেললে হাততালি দিত তারা গেল কোথায় ? তারা লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথের সময়োত্তীর্ণ অপরাজিত ৯৭ ভূলে কীভাবে টি টোয়েন্টির ধোনিকে হলুদ সাম্রাজ্য সমর্পণ করল ? তা বলে গোপীনাথ সাদা বলের দু ফর্মাটেরই বিরোধী নন। টিভিতে ওয়ানডে ক্রিকেট দেখেন। আর এদিন সকাল থেকে চাইছেন বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ভারত হারাক অস্ট্রেলিয়াকে । বললাম আপনিও তো সাধারণ দর্শকের মতো কথা বলছেন। সেঞ্চুরি কি মেরিনা বিচে পাওয়া যায় ? আবার বিশ্বকাপে। গোপীনাথের কণ্ঠস্থ ক্রিকেট স্ট্যাটাস। থামিয়ে দিয়ে বলেন, রান চেজে যার গড় ৬৫। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যার এত ভালো রেকর্ড তার কাছে চাওয়াটা অন্যায্য কেন ?

মধ্যদুপুরে যখন গোপীনাথের সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছে ,টস অবধি হয়নি। ভারত যে টস হেরে পরে ব্যাট করবে জানা সম্ভব ছিল না। কেমন যেন কাকতালীয়। গোপীনাথের কাঙ্খিত সেঞ্চুরি থেকে ১৫ রান দূরে ফিরলেন বিরাট । কিন্তু অবধারিত হারা ম্যাচ ড্রেসিংরুমকে জিতিয়ে দিলেন এল রাহুলের সঙ্গে ১৬৫ রানের পার্টনারশিপে। এমন একটা সময় যখন বাউন্ডারিকে মনে হচ্ছে ফেরারি গাড়ির মতো দূরের বলাকা। তখন হলুদ জার্সির সম্মিলিত চাপ আর মাঠের নৈঃশব্দ মিশিয়ে তৈরি হওয়া ককটেল সহ্য করলেন। মনে হচ্ছিল যেন টেস্ট ক্রিকেট খেলছেন। এটাই বিরাট। সাদা বলের মুকুটহীন সম্রাট হয়েও চাপে মাথা নিচে রাখতে জানেন। চ্যাম্পিয়ন বলতে যে শুধু অনাবিল স্ট্রোক প্লে আর ট্যালেন্ট বোঝায় না তার ভ্রাম্যমান মূর্তি হলেন কোহলি ! ভারত তাঁর চেয়ে বড় ব্যাটসম্যান দেখেছে। কিন্তু চাপের মুখে কাউকে এমন ধারাবাহিকতার সঙ্গে বছরের পর বছর ম্যাচ জেতাতে দেখেনি। কোহলিয়ানা দেখাটাও একটা ভারতীয় অভিজ্ঞতা !

তিনি যদি ভারতীয় ব্যাটিংয়ের রামচন্দ্র হন। ভ্রাতা লক্ষণ অবশ্যই রাহুল। কোহলি তা-ও সুযোগ দিয়েছেন। হেলমেটে বল লেগেছে। কিন্তু পাঁচ নম্বরে নামা রাহুল খুঁতহীন। অনাবিল । আডাম জাম্পাকে এক ওভারে মারা তাঁর তিন বাউন্ডারি আজকের অপরাজিত ৯৭ ভারতীয় বিশ্বকাপ ইতিহাসে ঢুকে থাকল। হলুদ জার্সির চিরন্তন সাম্রাজ্য থেকে এই মাঠকে ঢেকে দিল নতুন রাজপাটে। পঞ্চাশ ওভার খুঁতহীন কিপিং এবং এত ভাল
ব্যাটিংয়ের পর অন্য কাউকে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ বাছা সম্ভব ছিল না। বিশ্বকাপের কোনও পর্যায়ে এসে তিনি এনসিএর ডাক্তারদের ধন্যবাদ দিলে আশ্চর্য হব না। চোটগ্রস্ত। বিশ্বকাপে পারবেন কি পারবেন না ? তার মধ্যে কিপিং করতে হবে। এত সব কুয়াশাকেও আজ খেলছিলেন। আর মেঘ চিরে সমালোচকদের রোদ্দুর দেখিয়ে দিয়েছেন।

ম্যাচ জেতার মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিলেন কিন্তু বোলাররা। দুরন্ত গতির বুমরা এবং তার পর তিন স্পিনার। অশ্বিন-জাদেজা-কুলদীপকে দেখে মনে হচ্ছিল সাদা বলের পৃথিবীতে তাঁরা নব যুগের বেদি-প্রসন্ন-চন্দ্র। স্পিনের জালে এমন বেধেছিলেন যে অস্ট্রেলিয়া বহু চেষ্টাতেও জালের ফাঁস আলগা করতে পারেনি। রোহিত শর্মা দারুণ ভাবে ব্যবহার করলেন তাঁর বোলারদের। ব্যাটসম্যান তিনি সম্পূর্ণ ব্যর্থ। পুরস্কার বিতরণে এমন কালো মুখে এলেন যে তাঁর টিম জিতেছে বলে বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু ক্যাপ্টেন তিনি আজ অনবদ্য। কুলদীপ এবং অশ্বিন–দুজনের পুনর্বাসন স্রেফ তাঁর জন্যই হয়েছে। নইলে আগের জমানায় দুজনই ছিলেন ব্রাত্যের ব্রাত্য।

এঁদের মধ্যেও মাতিয়ে দিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। কী ব্যাট। কী বল। সব ফর্ম্যাটে তাঁর যা পারফর্মেন্স ,নেহাত পেছনে ভালো প্রচারসচিব নেই বলে ভারতজুড়ে জয়ডঙ্কা বাজে না। নইলে আজকের দুরন্ত বোলিং বাদ দিলাম। আইপিএল ফাইনাল তো শেষ দু বলে ১০ রান করে তাঁর জেতানো।স্টেডিয়াম গেটের বাইরে এক অটোচালককে আবিষ্কার করলাম যে বাহনের ওপর পোস্টার মেরেছে ভারত বিশ্বকাপ জিতলে ২০-২১ নভেম্বর টানা দু দিন ফ্রিতে যাত্রী তুলবে। চালকটি ব্যাখ্যা করে দিল,থালা হচ্ছেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। জাদেজা উপমুখ্যমন্ত্রী। চেন্নাই মাঠে উনি হারেন কী করে ? সত্যি তো ! পরিবর্তনের মধ্যে শুধু হলুদের বদলে তাঁর বোলিংয়ে এদিন নীল সাম্রাজ্যের আবাহন ঘটল !

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Soumendu Adhikari | সৌমেন্দু অধিকারীর মিছিলে 'বোমা 'বর্ষণ, TMC-র বিরুদ্ধে বোমা মারার অভিযোগ BJP -র
03:05
Video thumbnail
Irfan Pathan | বহরমপুরে দাদার প্রচারে ভাই, ইউসুফ পাঠানের হয়ে প্রচারে ইরফান পাঠান
06:39
Video thumbnail
Yusuf Pathan | Irfan Pathan | ইউসুফ পাঠানের প্রচারে ভাই ইরফান পাঠান, দেখুন ভিডিও
00:17
Video thumbnail
TMC | তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার প্রচারে কৌশানি, প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা অভিনেত্রীর
02:33
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | রামপুরহাটে ভোটপ্রচারে অভিষেক, কী বললেন দেখুন ভিডিও
05:11
Video thumbnail
৪টেয় চারদিক | যিনি ১০০ দিনের টাকা দেননি, তাঁর গ্যারান্টি বীরভূমের মানুষ বিশ্বাস করবেন না: অভিষেকের
43:44
Video thumbnail
Sandeshkhali | 'মহিলাদের নিয়ে যায় বিজেপি নেতা অনুপ দাস', সন্দেশখালির আরেক ভিডিয়ো ভাইরাল
06:45
Video thumbnail
পলিট্রিক্সের গ্রিনরুম (পর্ব ৫) | Pranab Mukherjee | ‘যুধিষ্ঠির’ মুখোপাধ্যায়
59:11
Video thumbnail
Dilip Ghosh | 'দমবন্ধ করে দেব, ঘর থেকে বেরোতে দেব না', ফের বেলাগাম দিলীপ ঘোষ
06:58
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধের দামামা | 'শাসকদলকে নিশানা করে অনেক আলোচনা হচ্ছে', সন্দেশখালি ইস্যুতে TMCর পাশে কংগ্রেস
21:33