বালুরঘাট: পুজোর আগেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বিগত চার দিন ধরে নিখোঁজ ভারত-চীন সীমান্তে বাঙ্কার বানানোর কাজে যাওয়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ৯ জন শ্রমিকের। ৪ অক্টোবর প্রকৃতির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয় সিকিম। তার আগের দিন অর্থাৎ ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার শেষ বারের মত এই নয়জনেরই তাঁদের পরিবারের সাথে কথা বলেন। এর পরদিন থেকেই সকলেরই সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এতদিন যে ঠিকাদার সংস্থা ওই শ্রমিকদের কাজে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের আশ্বাসে অপেক্ষা করার পর, এদিন অধৈর্য হয়ে বালুরঘাট থানায় এসে ওই পরিবার গুলি তাদের নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই এদিন প্রকাশ্যে আসে ওই শ্রমীকদের নিখোঁজের ঘটনা। এদের মধ্যে কুমারগঞ্জ ব্লকের চারজন ও বালুরঘাট ব্লকের বিভিন্ন এলাকার পাঁচজন শ্রমীক রয়েছেন।
সিকিমে নিখোঁজ শ্রমিকদের নাম, বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম কৃষ্ণপুর গ্রামের নয়ন মার্ডি, জয়ন্ত মুর্মু ও সুজয় টুডু, চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নওপাড়া গ্রামের বিজয় মুর্মু। কুমারগঞ্জ ব্লকের কুড়ালডাঙ্গা গ্রামের নগেন মুর্মু, বিক্রম সরেন ও বদন সরেন। আরও দু’জনের নাম এদিন জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: টিফিন খরচ বাঁচিয়ে বই কিনলেন পড়ুয়ারা
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সেপ্টেম্বর মাসের ২২ তারিখে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার ২৭ জন শ্রমিক একসাথে শিলিগুড়ির এক ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে উত্তর সিকিমের জিরো পয়েন্ট এলাকায় কাজে গেছিল। তাদের সেখানে ভারতীয় সেনার হয়ে চীন সীমান্তে বাঙ্কার নির্মাণের কাজ করানো হচ্ছিল। প্রচন্ড ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টের কারণে আগেই ১৮ জন শ্রমিক বাড়ি ফিরে এসেছিল। অন্যান্য জেলার আরও প্রায় ৬০-৭০ জন শ্রমিকের সাথে দক্ষিণ দিনাজপুরের ওই ৯ জন শ্রমিক সেখানে শেষ পর্যন্ত কাজ করছিলেন। মঙ্গলবার রাতে শেষবার তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছিল পরিবারের। তারপর থেকেই কোনও খোঁজ নেই। সিকিমের ভয়াবহ ছবি দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা।
গ্রামের সমস্ত বাসিন্দা ওই ৯ জন নিখোঁজ শ্রমিকের পাশে দাঁড়াতে চেয়ে এ বছর পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই কারণেই এবারে পুজো নেই বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত পশ্চিম কৃষ্ণপুরে।
এদিকে এ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল বলেন, চেষ্টা চলছে। তাঁদের লোকেশন যেখানে ছিল সেই কমিউনিকেশন নষ্ট হয়ে গেছে। সিকিমের বিভিন্ন এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, তাদের খোঁজ করার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।
দেখুন আরও খবর: