বনগাঁ: মতুয়াদের প্রয়াত বড়মা বীণাপাণিদেবীর (Binapani Devi) ঘর দখল ঘিরে উত্তপ্ত ঠাকুরবাড়ি। সোমবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের (Union Minister of State Shantanu Thakur) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর (Trinamool Rajya Sabha MP Mamatabala Thakur)। শান্তনুর বিরুদ্ধে মমতাবালার ঘরের তালা ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। তিনি জানান, জোর করে শান্তনু ঘর দখল করেছে। গাইঘাটা থানায় শান্তনু ঠাকুর-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু সাফ জানান, তিনি ঠাকুমার ঘরে ঢুকেছেন। এখানে কোনও দখলের অভিযোগ হতেই পারে না।বরং মমতাবালাই ঘর দখল করে রেখেছিলেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদ সোমবার সকাল থেকে ধরনায় বসেছেন মমতাবালা। মিছিলেরও ডাক দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে বীণাপাণিদেবীর মৃত্যুর পর থেকে তাঁর বড় ছেলে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুর ওই ঘরে থাকেন। কিন্তু ওই ঘর নিয়েই দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ। সোমবার শান্তনুর মা রেখাদেবী এবং বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর অভিযোগ করেন, তৃণমূলের মদতে মমতাবালা ঠাকুর পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করছেন। এক ধাপ এগিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ বলেন, আমি মুখ খুললে মমতাবালা-সহ অনেকের মুখোশ খুলে যাবে। দাদার মৃত্যুর পিছনে কার হাত ছিল, সময়মতো সব বলব।
রবিবারের ঘটনাকে হাতিয়ার করে তৃণমূলও ময়দানে নেমে পড়েছে। তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। হাতুড়ি দিয়ে গেট ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে। তৃণমূলের অভিযোগ, বড়মার ঘর দখল করতেই হামলা চালায় শান্তনু। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে মতুয়া ঠাকুর বাড়িতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দলে দলে মতুয়া ভক্তরা আসছেন খোঁজখবর নিতে। মতুয়দের মধ্যে এখন দুটি গোষ্ঠী। একটি নিয়ন্ত্রণ করেন মমতাবালা। অন্যটি শান্তনুর অনুগামী। সম্প্রতি দুই গোষ্ঠীর বিবাদ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: সাতসকালে খড়গপুরে চলল গুলি
গতকাল রাতে মমতাবালা গাইঘাটা থানায় শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ-সহ ১৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। যে ঘরের তালা ভাঙা হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই ঘরে থাকতেন বীণাপাণি ঠাকুর ও পি আর ঠাকুর। ১৯৯০ সালে পি আর ঠাকুর মারা যান। ২০১৯ সালে মৃত্যু হয় বীণাপাণি ঠাকুরের। মমতাবালার অভিযোগ, গতকাল রাতে তাঁকে ঘর থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। এই সম্পত্তি দেবোত্তর, এখানে সবার অধিকার রয়েছে। শান্তমু ঠাকুর সন্ত্রাস চালাচ্ছে।
যদিও শান্তনু বলেন, এই ঘরটি আমার দাদু-ঠাকুমার ঘর। এখানে আমাদের অধিকার রয়েছে। তাই আমি ঘরে গিয়েছি। অনেকবার ঢুকতে চেয়েছি। ওরা দখল করে রেখেছিল। শান্তনুর বাবা-মা জানান, এই ঘরটি হেরিটেজ করা হবে। এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। মমতাবালা বলেন, আজকে অধিকার দেখাচ্ছে, অধিকার থাকতেই পারে, আমি কী অন্যায় করেছি, আমার বাচ্চাগুলোকে নিয়ে কীভাবে থাকব? সব মিলিয়ে চরম উত্তেজনা রয়েছে ঠাকুরবাড়িতে। মতুয়ামেলা শুরু হয়েছে গত শনিবার থেকে। দূরদূরান্ত থেকে যে সমস্ত মতুয়া ভক্ত এসেছিলেন, তাঁরা অনেকেই আবার বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। রবিবার ওই গোলমাল দেখে অনেকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে্ দেন আতঙ্কে।
A day after Sri Sri Harichand Thakur’s birth anniversary, this is how @BJP4India minister @Shantanu_bjp chose to show respect to the revered leader.
By allowing central forces to desecrate Thakurnagar Thakurbari just as they had done in June last year, while marching inside the… pic.twitter.com/S2Igohdkoy
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) April 7, 2024
দেখুন ভিডিও