সল্টলেক: সল্টলেকের নিখোঁজ স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুন! মৃত বছর পঞ্চাশের স্বপন কামিলা। চাঞ্চল্যকর এই খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে খোদ জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জের বিডিও–র। ব্যবসায়ীর এক আত্মীয় পুলিশকে জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে চুরি হওয়া সোনা কেনার সন্দেহে স্বপনকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করিয়েছে বিডিও। এই ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে অভিযুক্ত বিডিও–র নাম উল্লেখ করে বিধাননগর দক্ষিণ থানা পুলিশের কাছে একটি খুনের অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, সপ্তাহ খানেক আগে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন। আদতে তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। দীর্ঘ দিন সল্টলেকের দত্তাবাদ ফ্রেন্ডফ্ ক্লাবের কাছে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কারবার করছিলেন। দোকানটির নাম ‘বাসন্তী জুয়েলার্স’। গত ২৮ অক্টোবর সল্টলেকের দোকান থেকে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী। এই ঘটনার পরদিন সকালে নিউটাউন–যাত্রাগাছি বাগজোলা খালপাড়ে নির্জন জঙ্গলে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় পুলিশ একটি নিখোঁজ মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্তে নেমে মৃত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর পরিচয় সামনে আসতেই, ব্যবসায়ী খুনের ঘটনাটি স্পষ্ট হয়। মৃতের এক আত্মীয় বিধাননগর কমিশনারেটের দক্ষিণ থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, দত্তবাদের দোকান থেকে ‘নীল রঙের’ বাতি লাগানো গাড়িতে চাপিয়ে স্বপনকে রীতিমতো তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই গাড়িতে ছিলেন খোদ বিডিও। পরদিন সকালে নিউটাউনে রহস্যজনকভাবে ব্যবসায়ীর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুন: ফের SIR আতঙ্কে মৃত্যু বাংলায়!
পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি রাজগঞ্জের বিডিও-র বাড়ি থেকে বেশ কিছু সোনার অলঙ্কার সামগ্রী চুরি হয়। চুরি হওয়া সেই সোনার দ্রব্য সামগ্রী নাকি সল্টলেকের স্বপনের স্বর্ণ দোকানে বিক্রি হয়েছে। অভিযোগ, জলপাইগুড়ি পুলিশের থেকে সেই খবর নিয়ে নীল বাতি লাগানো গাড়ি চড়ে সোনার খোঁজে সল্টলেক দত্তাবাদে চলে আসেন বিডিও। সে দিন ভাড়ার দোকানটি বন্ধ ছিল। স্বপন অন্যত্র ছিলেন। ফলে দোকানের মালিক গোবিন্দ বাগকে ডেকে পাঠান বিডিও। এরপর গোবিন্দ ব্যবসায়ী স্বপনের এক আত্মীয়কে ফোন করে কলকাতায় আসার কথা বলেন। গত ২৮ অক্টোবর দোকান মালিকের সেই বার্তা পেয়ে স্বর্ণ কারবারি স্বপন তড়িঘড়ি দু’জন সঙ্গীকে নিয়ে দত্তাবাদে আসেন। স্বপনের শ্যালক দেবাশীষ কামিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, দত্তবাদে সোনার দোকানে পৌঁছানোর মিনিট দশেকের মধ্যেই দুটি গাড়ি করে বেশ কিছু লোকজন আসেন। যার মধ্যে একটি নীল বাতি লাগানো গাড়ি ছিল। সেই গাড়ি থেকে এক ভদ্রলোক নেমে নিজেকে বিডিও অফিসার বলে পরিচয় দেন। এর পর স্বপনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
ঘটনার পরদিন সকালে নিউটাউনের নির্জন খালপাড়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দেহ মেলে। মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর সেই ঘটনার খবর সামনে আসতেই এলাকা জুড়ে ব্যাপক শোরগোল তৈরি হয়। কি ভাবে একজন বিডিও চুরির তদন্তে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা থেকে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নিয়ে গেলেন? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানিয়েয়েছেন, ‘সব দিক খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’
দেখুন খবর:






