কলকাতা: বারবার বাংলা ভাগের ইস্যুতে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। কখনও উত্তরবঙ্গ ভাগ, তো কখনও মুর্শিদাবাদ-মালদহকে আলাদা করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলেছে বিজেপির বিধায়করা। সোমবার বাংলা ভাগ বিরোধী প্রস্তাবটি বিধানসভায় পেশ করেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এদিন বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই শাসক এবং বিরোধীর বাগ্যুদ্ধে বার বার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভার অধিবেশন (Assembly session)। এদিন বিধানসভায় বাংলা ভাগ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, পশ্চিমবঙ্গ এক থাকবে। রাজ্যকে ভাগ হতে দেব না। শুভেন্দু বলেন, বিজেপি বাংলা ভাগ চায় না।
মমতা বলেন, বাংলা ভাগ ইস্যুটি স্পর্শকাতর বিষয়। বিরোধী দলনেতা যা বলেছেন তাতে আমি কিছু কথা যোগ করতে চাই। প্রথমত পশ্চিমবঙ্গ এক থাকবে। বাংলাকে ভাগ হতে দেব না। আসুন সবাই মিলে এই প্রস্তাব নিই। বিরোধী দলনেতাও একটা প্রস্তাব দিয়েছেন। রাজ্যের প্রস্তাব কিছুটা সংশোধন করে গ্রহণ করা হোক। আমি মনে করি রাজ্য শক্তিশালী হলে কেন্দ্র শক্তিশালী হবে। রাজ্য এবং কেন্দ্র একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলবে। তিনি আরও বলেন, ইউ পি,বিহার এরপর বাংলা বড় রাজ্য। বাংলা সাউথ ইস্ট এশিয়ার গেটওয়ে। আমরা কেন নর্থ ইষ্ট কাউন্সিলে যাব। বাংলা নাসা থেকে ভাষা সব জায়গায় আছে। আমি সব জায়গায় যেতে পারি আপনি ডাকুন আপনার বাড়িতেও যেতে পারি। এককাপ চা খেতে যেতে অসুবিধা কোথায় অনন্ত মহারাজের কাছে। অপনাদের কাছে কোনও প্রস্তাব থাকলে আমাদের প্রস্তাব নিয়ে শুভেন্দু যা বলল তা দিয়ে পাঠানো হোক। অখন্ড বাংলা হোক। আমরা বা়ংলা ভাগ চাই না।
মমতা বলেন, আমরা নতুন জেলা ভাগ করেছি,সাব ডিভিশন বাড়ানো হয়েছে,কমিশনারেট করা হয়েছে।পুলিশ জেলা ভাগ করা হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য পোর্টাল করেছে। ২৮ লক্ষ মানুষের সাথে পরতিনিয়ত যোগ আছে। আপনারা বলছেন না ১ কোটি অন্য রাজ্যের পরিযায়ী মানুষ এখানে আছে তাদের সব রকম সুবিধা তারা এখান থেকে পাচ্ছে। আমি মনে করি ইউনাইটেড ইন্ডিয়া। সবার দেশের সব জায়গায় থাকার অধিকার আছে। যত বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী আন্দামানে ছিল তাদের ফলক নিয়ে এসে আলিপুর মিউজিয়ামের মানুষকে দেখার জানার সুযোগ করে দিন।
আরও পড়ুন: সময় চেয়ে ইডিকে চিঠি বালু ঘনিষ্ঠ বারিকের
এদিন বিধানসভায় বাংলার বঞ্চনা নিয়েও সরব হন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী নীতি আয়োগের প্রসঙ্গে টেনে বলেন, নীতি আয়োগের বৈঠকে গিয়েছিলাম। আমাকে আরো ২মিনিট দিলেই মিটে যেত। আমরা কাউকে বঞ্চিত করে আমরা কিছু করিনি। বাংলা তার বকেয়া টাকা পাক বিভিন্ন খাতে। এখনও অনেক জায়গায় স্টাকচার আছে। ৩বছরের একটা পরিকল্পনা করে বিধায়করা ২টো করে স্কুল ডেভলপমেন্ট এর পাশাপাশি রাজ্যসভার সদস্যদের ৭৫ শতাংশ টাকা সেই খাতে খরচ করতে বলবো। গুজরাট ছোট রাজ্য। ওদের বেশীর ভাগ ব্যাবসায়ী,তাই ওদের হিরে তে ট্যাক্স নেই রাজ্যে জিরে তে ট্যাক্স আছে।
এদিন বিধানসভায় অভিভক্ত বাংলা নিয়ে সওয়াল করেন শুভেন্দু অধিকারী। এ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ১৮৫ এ এর আগেও আলোচনা হয়েছে। আমরা বিজেপির পক্ষ থেকে পরিস্কার জানিয়েছি বাংলা ভাগ হোক সেটা আমরা চাই না। আজকের প্রস্তাবের বয়ান একটি রাজনৈতিক লিফলেট এর মতো। সরকার ১০০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। তাই তাদের আরও বেশী সংবেদনশীল হওয়া উচিত ছিল। আমার প্রস্তাব তার একটি ভাষা পরিবর্তন করুন। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা অবিভক্ত পশ্চিমবঙ্গ তৈরি হোক। আমরা বঙ্গভঙ্গ, বাংলা ভাগ, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বা আলাদা রাজ্য এ সব চাই না। দলগত ভাবে আমি এটা বলতে পারি।
দেখুন ভিডিও