আউসগ্রাম: আদিবাসী মহিলা খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চালাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ (Police)। গ্রামবাসীদের (Villagers) হাতে বেধড়ক মার খেলেন আউসগ্রাম থানার আইসি (IC) আবদুর রব খান ও সেকেণ্ড অফিসার উত্তম মণ্ডল। তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার আউসগ্রামের সোমাইপুরে এক আদিবাসী বিধবা মহিলা সুমি সোরেন খুন হন৷ বুধবার গ্রামের একটি মাঠ থেকে ওই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷ সেই ঘটনার পরই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারির দাবিতে থানা ঘেরাও কর্মসূচী করেন আদিবাসীরা। এরপর রবিবার রাতে সোমাইপুর গিয়ে আদিবাসীপাড়ার একজন যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করে নিয়ে আসছিল পুলিশ। অভিযোগ, তখনই পাড়ার লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশকে ঘিরে ধরে মারধর করে৷ আইসি, সেকেণ্ড অফিসার সহ এক কন্সটেবলকেও মারধর করা হয়।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নখকুনির যন্ত্রণার জন্য গ্রামেই এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে ওষুধ আনতে গিয়েছিলেন সোমাইপুর লাইকিংপাড়ার বাসিন্দা বিধবা মহিলা সুমি সোরেন (৪৫)। দীর্ঘক্ষণ নিখোঁজ থাকার পর বুধবার সকালে বাড়ির কাছের একটি মাঠ থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনার পর থেকে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। সেই থেকেই এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছিল। এনিয়ে দু’দিন আগে পুলিশের কাছে ডেপুটেশন দিয়েছিলেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। রবিবার মৃতার ছেলে মিঠুন সরেনকে পুলিশ আউস গ্রাম থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায়। পুলিশের দাবি, জেরায় মিঠুন মাকে খুনের কথা কবুল করে। এরপর রাত পৌনে আটটা নাগাদ সোমাইপুর গ্রামে মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে যায় পুলিশ। তখনই তাঁদের উপর চড়াও হয় গ্রামের লোকজন।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার ছেলে মিঠুন গ্রামে গিয়ে পাড়ার বাসিন্দাদের জানায় তাকে থানায় ব্যপক মারধর করা হয়েছে। এই কথা শুনে পাড়ার বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। চড়াও হয় পুলিশের ওপর। শুরু হয় বেধড়ক মার। আউসগ্রাম থানার আইসি, সেকেণ্ড অফিসার সহ ৮ জন পুলিশ কর্মী আহত হন। অন্যান্য পুলিশকর্মীরা তাঁদের কোনওরকমে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে এলাকায় যায় আরও পুলিশবাহিনী।
পূর্ব বর্ধমান জেলার ডিএসপি (ডিএনটি) বীরেন্দ্র কুমার পাঠক বলেন, মৃতার ছেলে মিঠুন পুলিশী জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে। তার মায়ের সঙ্গে গ্রামের এক বাসিন্দার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই নিয়ে তাদের মধ্যে অশান্তি হয়। ছেলে মিঠুন এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। তাই সে মাকে কোদাল দিয়ে আঘাত করে খুন করেছে। তিনি আরও জানান, আমাদের পুলিশকে আক্রমণ করা হয়েছে৷ আমরা পুরোও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।