খার্তুম: গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সুদান (Sudan)। দেশের সেনা এবং আধা সেনার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে খার্তুমের (Khartoum) রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বির্পযস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গুলির শব্দে ঘুম ভাঙছে রাজধানীর মানুষের। ইতিমধ্যেই সেদেশ থেকে ১১০০ জন ভারতীয়কে উদ্ধার করা হয়েছে। জানিয়েছেন ভারতীয় (India) বিদেশ সচিব বিনয় মোহন কোত্রা।
সুদানে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করতে সোমবার অপারেশন কাবেরীর সূচনা করে ভারত। তারপর থেকে মোট ছয় দফায় সেদেশে আটক নাগরিকদের বের করে আনা হয়েছে। ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy) দু’টি জাহাজ পাঠানো হয়েছিল সুদানে। বৃহস্পতিবার আরও একটি জাহাজ পাঠানো হয়েছে ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য। উদ্ধারকাজ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিদেশ সচিব। তিনি বলেন, সুদানে আটকে পড়ে প্রত্যেক ভারতীয়কে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। সুদান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবারই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। প্রত্যেক ভারতীয় যেন সুষ্ঠ ভাবে দেশে ফিরতে পারেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে আধিকারিকদের বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:Karnataka Assembly Election | মোদিকে বিষাক্ত সাপ বলে ফের বিতর্কে মল্লিকার্জুন খাড়্গে
সুদান সেনা ও সেখানকার আধা সেনার মধ্যে যে লড়াই চলছে, তা ৭২ ঘণ্টার জন্য বিরতির (Ceasefire) সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুপক্ষ। সেদেশে বসবাসকারী বিদেশিদের নিরাপদে দেশে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দিতেই এই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত। গত সপ্তাহেই সুদানের গৃহযুদ্ধের প্রাণ হারিয়েছেন অ্যালবার্ট অগাস্টিন নামে কেরালার এক প্রাক্তন সেনাকর্মীর। তাঁর পরিবারকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু তাঁর দেহ এখনও খার্তুমেই রয়ে গিয়েছে। বিদেশ সচিব বিনয় কোয়াত্রা জানান, সুদানে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার ভারতীয় রয়েছেন। প্রায় ৩,৫০০ ভারতীয় নাগরিক এবং ১০০০ জনের মতো ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুদানে আটকে আছেন। সেদেশের পরিস্থিতির দিকে দিনরাত নজর রাখা হচ্ছে।
দুই বাহিনীর মধ্যে চলতে থাকা এই সংঘর্ষের জেরে দেশে খাদ্য এবং জরুরি প্রয়োজনের জিনিসেরও সংকট শুরু হয়েছে৷ সংঘর্ষে আতঙ্কে দিন কাটছে সুদানের রাজধানী খার্তুমের বাসিন্দাদের। রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ট্যাঙ্ক, বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে এলাকা। শুধু তাই নয়, আকাশপথেও প্রতিপক্ষ শিবিরে হামলা চালাছে উভয় পক্ষই। চলছে গোলাগুলি। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ একপ্রকার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েকটি দোকান খোলা রয়েছে, প্রয়োজনীয় জিনিস, জ্বালানি এবং পাউরুটির মতো খাবারের জন্য প্রাণ হাতে নিয়ে ভিড় করছেন বাসিন্দারা। পানীয় জল ও বিদ্যুতের সংকটে জেরবার সাধারণ মানুষ। গোলাগুলি এবং আকাশপথে হামলার জেরে সুদানের রাজধানীতে একাধিক হাসপাতালও ক্ষতিগ্রস্ত (Hospital Was Also Damaged) হয়েছে।