ওয়াশিংটন: ২০২৩ সালের ১ জুলাই। রাষ্ট্রসঙ্ঘের (United Nations) মতে, এই দিন ভারত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল (World’s Most Populous Country) দেশ হয়ে উঠবে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীন। যদিও বেসরকারি মতে ভারত ইতিমধ্যেই ছাপিয়ে গিয়েছে চীনকে (China)। কিন্তু তবুও, রাষ্ট্রসঙ্ঘ ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (United Nations and World Health Organization) দেওয়া তথ্যকেই মান্যতা দেওয়া হয় সারা বিশ্বে। ২০২৩ সাল শুরুর আগেই দুই আন্তর্জাতিক সংস্থা ভবিষ্যদ্বাণী করে দিয়েছে, জুন মাস পার হলেই, ভারত জনসংখ্যার দিক থেকে ছাপিয়ে যাবে চীনকে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের শিরোপা, তা সুখবর, না কাঁটার মুকুট হতে চলেছে, সে নিয়ে ইতিমধ্যেই তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, মার্কিন ধনকুবের ও টুইটার কর্ণধার এলন মাস্ক (Twitter CEO Elon Musk) বলছন, জনসংখ্যাই নিয়তি।
ওয়ার্ল্ড অফ স্ট্যাটিস্টিক্স (World of Statistics) ২২ এপ্রিল একটি মাইক্রো-ব্লগিং ওয়েবসাইট টুইটারে (Micro-blogging Website Twitter) একটি টুইট (Tweet) করেছে। সেখানে পৃথিবীর দশটি জনবহুল দেশের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে। ওই টুইটে মাস্ক তিনটি শব্দের একটি বাক্যে রিপ্লাই (Reply) করেছেন – জনসংখ্যাই নিয়তি(Demographics is Destiny)।
Demographics is destiny
— Elon Musk (@elonmusk) April 22, 2023
আরও পড়ুন: Russia – Germany | ২০ জনের বেশি জার্মান কূটনীতিবিদ রাশিয়া থেকে বিতাড়িত
সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘ তাদের এক ঘোষণা বলেছে, আনুমানিকভাবে এই মহূর্তে ভারতের জনসংখ্যা ১৪২৮.৬ মিলিয়ন এবং চীনের জনসংখ্যা ১৪২৫.৭ মিলিয়ন। জুলাইতে গিয়ে ভারত জনসংখ্যায় সত্যি সত্যিই ছাপিয়ে যাবে প্রতিবেশী দেশ চীনকে।
এর আগে, গত অগাস্টে এলন মাস্ক বলেছিলেন, কম প্রজনন হারের ফলে জনসংখ্যা কমেছে। মানবসভ্যতার জন্য এই বিষয়টি বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming) চেয়ে বড় ঝুঁকি। মাস্ক চিরকালই কম প্রজনন হারের (Low Birth Rate) বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। তাঁর বক্তব্য, প্রজনন হার কমলে জনসংখ্যায় বয়ষ্ক ব্যক্তির (Aged People) পরিমাণ বাড়বে, যা কোনওভাবেই কাঙ্খিত নয়। কারণ, আখেরে তাতে কর্মক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এইভাবে বয়ষ্ক জনগণ মারা গেলে আসতে আসতে জনসংখ্যাও কমতে থাকবে। কারণ, তরুণ লোকবল যত বেশি হবে, কাজের গতি ততটাই সচল থাকবে।
১৯৫০ সাল থেকে রাষ্ট্রসঙ্ঘ জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্র করা শুরু করেছে। বিগত ৭৩ বছরে এই প্রথমবার ভারত জনসংখ্যায় শীর্ষে উঠে এলো। আর উল্টো দিকে, চীনে জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছে। ১৯৬০ সালের পর এই প্রথম এমন ঘটনা। ১৯৮০ সালে চীন এক সন্তান নীতি চালু করেছিল জনসংখ্যায় রাশ টানার জন্য. কিন্তু ২০১৬ সালে তা চীন সরকার তুলে দিতে বাধ্য হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে চীনে যে নীতি চালু হয়েছে, তার ভিত্তিতে চীনা দম্পতিরা (Chinese Couple) সর্বাধিক তিনটি সন্তানের জন্ম দিতে পারেন। চীনের জন্য সমস্যার বিষয় হলো, একদিকে জনসংখ্যা কমছে, বয়ষ্ক মানুষের পরিমাণ বাড়ছে এবং প্রজনন হার কমছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্কবার্তা দিয়েই রেখেছেন, আগামী দিনে এর প্রভাব চীনের সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রে পড়বে। চীনের অর্থনীতিও প্রভাবিত এর ফলে।
উল্লেখ্য, ভারতে শেষবার জনগণনা হয়েছিল ২০১১ সালে। ২০২১ সালে আদমসুমারি (Census) হওয়ার কথা থাকলেও করোনা প্যানডেমিকের কারণে তা স্থগিত করে দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ভারতে দশ বছর অন্তর জনগণনা হয়।