ওয়েব ডেস্ক: টার্গেট আন্তর্জাতিক নারী দিবস (International Womens Day)। প্রাণপণ চেষ্টা মহিলাদের মন জয়ের। রাজধানী দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের (Delhi Assembly Election) শেষ দিনের প্রচারে এই সুরেই সোমবার ঝাঁপিয়ে পড়ল সব দলই। পাঁচ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন। ফল আট ফেব্রুয়ারি। নতুন সরকারের শপথ আট মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন। সেটাই অন্যতম হাতিয়ার এবারের দিল্লি বিধানসভা ভোটে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার মহিলাদের হাতে নগদ উপহার তুলে দেওয়ার পথ দেখিয়েছিল। সেই একই পথে সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে হেঁটেছে সব দলই। একই ছবি দিল্লিতেও। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind kejriwal) আম আদমি (AAP) পার্টির সরকার চতুর্থবার ক্ষমতায় আসতে মরিয়া। তাঁরা ইতিমধ্যে মহিলাদের জন্য এই প্রকল্প চালু করেছে। কংগ্রেসও ক্ষমতায় এলে তাতে টাকার অঙ্ক বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথাতেও উঠে এসেছে, দিল্লিতে ক্ষমতায় এলে সব বোনেদের ২৫০০ টাকা করে প্রতি মাসে দেওয়া হবে। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তিনটি সভা করেন। কেজরিওয়াল দুটি সভা করেন। কংগ্রেসও জোরদার প্রচার করে।
তৃতীয়বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার। তবে গত ২৬ বছর রাজধানীর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতার বাইরে ভারতীয় জনতা পার্টি। নির্বাচনী সমীক্ষাতে কেজরিওয়ালের দল এগিয়ে। মরিয়া চেষ্টা বিজেপিরও। গেরুয়া শিবিরের মূল টার্গেট বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিল্লিতে জমি শক্ত করা। যমুনার জলে বিষ থেকে সরকারের দুর্নীতি ইস্যু হয়েছে এবারের ভোটে। আবগারি কেলেঙ্কারিতে জেল খেটেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী, উপ মুখ্যমন্ত্রী। প্রচারে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে কেজরিওয়ালকে বিঁধেছে বিজেপি। এদিন অমিত শাহ অভিযোগ তুলেছেন, কেজরিওয়ালের বাসভবনে ৫১ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। সেই শিসমহল জনতার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। কেজরিওয়াল বিজেপির হয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লির পুলিশ ও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। আগের মতোই এদিন কেজরিওয়াল সরাসরি দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসির) রাজীব কুমারকে আক্রমণ করেছেন। তবে ঝাঁঝ বাড়িয়ে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবকুমারজির মেয়াদ এই মাসেই শেষ হচ্ছে। এরপর পর তাঁকে কোন পোস্ট উপহার দেওয়া হবে, যে তিনি দেশকে বন্ধক রাখতে প্রস্তুত? কোন পদ পাওয়ার জন্য আপনি দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে পারেন? রাজ্যপাল না রাষ্ট্রপতি?’
আরও পড়ুন: মহাকাশে বিপর্যয়, প্রযুক্তিগত ত্রুটির মুখে ইসরোর শততম অভিযান
এমনিতে বাজেটে চাকুরিজীবীদের মন জয়ে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর ছাড়ের ঘোষণা হয়েছে। দিল্লিতে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ সরকারি কর্মচারী রয়েছে। রাজধানীর অর্ধেক বাসিন্দা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা। তাঁদের বড় অংশ চাকুরিজীবী। তাঁদের জন্য নানা প্রতিশ্রুতিও এদিন শেষ প্রচারে শোনা গিয়েছে। তৃণমূল সাংসদ তথা বলিউড অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা আপের সমর্থনে সভা করেছেন। রবিবার দিল্লির বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী আতিশীকে পাশে নিয়ে সভা করেন তিনি। রাহুল গান্ধী একযোগে আপ ও বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন। শেষ প্রহরে আপের আটজন বিধায়ক দল ছেড়েছেন। তবে সামগ্রিকভাবে রেউড়ি সংস্কৃতি, দুর্নীতির অভিযোগের প্রচার রাজধানীর বিধানসভা দখলের লক্ষ্যেও মূল ইস্যু। যা শীতের দিল্লির উত্তাপ বাড়িয়েছে।
দেখুন অন্য খবর: