ওয়েব ডেস্ক: ইচ্ছে করলে একটি চাকরি জুটিয়ে নিশ্চিন্ত জীবন বেছে নিতে পারতেন অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhrapradesh) চিত্তুর জেলার তবনামপল্লি মণ্ডলের মাটিয়াম পাইপল্লে গ্রামের বাসিন্দা চলপতি রেড্ডি (Chalapati Reddy)। একটি তথ্য অনুযায়ী তিনি স্নাতকোত্তর (যদিও আবার একটি মত, তিনি স্কুল ছুট। সেই বয়স থেকেই মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত) সম্পন্ন করেছেন ১৯৮০-র দশকের শেষের দিকে। সেই তিনি হিংসার পথে মাওবাদীদের (Maoist) দলে নাম লিখিয়েছিলেন। সাধারণ কর্মী থেকে দেশে মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষ নেতৃত্ব। যার মাথার দাম ধার্য ছিল ১ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরে নাকানি চোবানি খাওয়াচ্ছিল নিরাপত্তাকর্মীদের। মাওবাদী কার্যকলাপের কৌশল রচনা, গেরিলা কায়দায় মাওবাদীদের অপারেশন পরিচালনায় যার জুড়ি মেলা ভার। ওড়িয়া, হিন্দি, তেলেগু, ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলতে পারতেন। সেই ১৯৯০-এর শুরু থেকে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন চলপতি। অভিযানে সশস্ত্র বাহিনীকে ধুলো দিতে একের পর এক জঙ্গলে আস্তানা বদলেছেন। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ছত্তিশগঢ়, সেখান থেকে ওড়িশা সীমান্ত। ঠান্ডা মাথার মাওবাদী মতার্শের সেই নেতাও সেলফি তোলার নেশা ছাড়তে পারেননি। স্ত্রীর সঙ্গে তোলা সেলফিই কাল হল। তাই তাঁকে নিরাপত্তা বাহিনীর নাগালে এনে দিল। ২০১৬ সালে পরিত্যক্ত জায়গায় পাওয়া একটি মোবাইল। যেখান থেকে তার ছবি ও ঠিকানার হদিশ মেলে। তার সূত্র ধরেই ২০ মাওবাদীর সঙ্গে কিষেণজির পরে দেশের সব থেকে কুখ্যাত এই মাওবাদীকে নিকেশ করা হয়েছে। মাওবাদী দমন অভিযানে যে সাফল্যের কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, মাওবাদী মুক্ত ভারত গড়তে বড় সাফল্য।
২০০৮ সালে নয়াগড়ে পুলিশের উপর হামলায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়। তার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন চলপতি। প্রবীণ এই মাওবাদী নেতা ও তাঁর টিমকে ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড, সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স, কোবরা বাহিনী সোমবার রাতে ওড়িশা ও ছত্তীশগঢ় সীমান্তের কুলারিঘাট জঙ্গলে নিকেশ করে। উল্লেখ্য, মাওবাদীদের নাশকতা কাজ সব রাজ্যেই এখন কমে এসেছে। শান্তির পথে ফিরতে অনেকে মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে। তবু এখনও ছত্তিশগঢ়, ওড়িশা সীমান্ত, আন্ধ্রপ্রদেশে মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের কয়েকটি জায়গায় এখনও রয়ে গিয়েছে মাওবাদী বিপদ। একমসময় পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলে ঘুম ভাঙত মাওবাদী কার্যকলাপে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৌশলী পদক্ষেপে নকশাল আমলের মতো মাওবাদীদের অসামাজিক কার্যকলাপ এখন এই রাজ্যে অতীত কাহিনী। কেন্দ্রীয় সরকারও ২০২৬ সালের মধ্যে দেশকে মাওবাদী মুক্ত করতে জোর পদক্ষেপ করেছে।
আরও পড়ুন: বুধবারই সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি
দেখুন অন্য খবর: