ওয়েব ডেস্ক: নাম আত্মা প্রেম গিরি (Atma Prem Giri)। উচ্চতা সাত ফুট। আদতে রাশিয়ার (Russia) বাসিন্দা। থাকেন নেপালের গুহায়। যাঁকে ঘিরে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে (Mahakumbh 2025) ভক্তদের (Devotees) উন্মাদনা চরমে। মহাকুম্ভের পবিত্র মঞ্চে এমন এক সাধুর আগমন ঘটেছে যাঁকে দেখে মনে হচ্ছে যেন তিনি সত্যযুগ থেকে উঠে এসেছেন। কপালে তিলক। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। ১০৮টি রুদ্রাক্ষের দানা দিয়ে তৈরি মালা। সঙ্গে থাকা পুঁটলিতে আছে শিবলিঙ্গ, পবিত্র ভস্ম। মহাভারতের যুগের এক বলিষ্ঠ দেহ নিয়ে তিনি সবার মনোযোগ কেড়ে নিয়েছেন।
রাশিয়ায় অ্যালেক্সিন গার্শিন নামে পরিচিত ছিলেন। নেপালের গুহাগুলিতে তিরিশ বছর ধরে তপস্যারত এই সাধু। যাঁর মধ্যে ভগবান পরশুরামের মতো তেজ প্রতিফলিত হয়। গেরুয়া বসন। অন্তরে গভীর আধ্যাত্মিকতার শক্তি। তাঁর উপস্থিতি এক মহাজাগতিক পরিবেশ তৈরি করেছে। এই আত্মা প্রেম গিরি সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ জনপ্রিয়। ইনস্টাগ্রামে তাঁর উপস্থিতি লক্ষাধিক মানুষকে প্রভাবিত করেছে। তিনি কীভাবে ভক্তদের ভগবান শিবের পথের কথা জানাচ্ছেন তার ভিডিও ভাইরাল। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে তিনি মহাকুম্ভে যোগ দিয়ে ভক্তদের তিলক পরাচ্ছেন। ভিডিয়োটি শুরু হয় এক রাশিয়ার শিষ্যার সঙ্গে তাঁর কথোপকথন দিয়ে। যেখানে মহাকুম্ভ সম্পর্কে তাঁকে বিশদে বলতে শোনা যায়। তাঁর সঙ্গে থাকা পুঁটলির রহস্য নিয়েও বলেত শোনা যায়। নেপালে গুহায় তপস্যা করার সময় এই পুঁটলি তাঁর সঙ্গে ছিল। তাঁর কথায়, মহাকুম্ভের স্নান শুধু পাপমোচন নয়। এটি আত্মার শুদ্ধির কার্যকলাপ। ইউনেস্কো স্বীকৃত মহাকুম্ভে মোক্ষলাভের ভিড়ে বিদেশি ভক্ত, সাধুরা চোখ টানছেন। স্পেনের সাধ্বী অঞ্জনা গিরি ৩০ বছর ধরে মহাকুম্ভে আসছেন। তবে এবছরের মহাকুম্ভের পরিবেশ ও আয়োজন তাঁকে অন্যরকম অনুভূতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: টিন এজ থেকেই ভারতের আধ্যাত্মিকতা টানত স্টিভ জোবসকে, কুম্ভমেলায় যোগ দিতে লেখেন চিঠিও
অবাক করা বিষয় হচ্ছে আত্মা প্রেম গিরি প্রতিদিন জিম করেন। তাঁর অপার সৌন্দর্য। তাঁকে দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন মহাকাব্যের বর্ণনায় থাকা স্বয়ং পরশুরাম আসছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, শারীরিক শক্তি ও আধ্যাত্মিক শক্তির মধ্যে ভারসাম্য থাকা খুব জরুরি। নিরামিষাশী। প্রতিদিন সকালে শরীর ঠিক রাখতে বিশেষ ভেষজের পানীয় পান করেন। যা তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সজীব রাখে। যোগ, প্রাণায়াম দিয়ে দিন শুরু হয়। তাঁর শিষ্যরা অনেকেই রাশিয়া, জাপান, ফ্রান্স থেকে এসেছেন। এই সাধুর ভারতে জুনা আখড়ায় আধ্যাত্মিক জীবনের সূচনা। তাঁর গুরুর নাম মহামণ্ডলেশ্বর পাইলটবাবা। যাঁর প্রকৃত নাম ছিল কপিল সিং। যিনি একসময় ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার ছিলেন। এই সন্ন্যাসী নেপালের পশুপতিনাথ মন্দির ও তার পাশের অঞ্চলে এখন তপস্যা করেন। তাঁর এই পরম জীবনে দিন শুরু হয় ওং নমঃশিবায় মন্ত্রোচ্চারণে।
দেখুন অন্য খবর: