কলকাতা: ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে আসন পুনর্বিন্যাসের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ২০১৮তে রাজ্যে জেলা পরিষদের সংখ্যা ছিল ৮২৫টি। পঞ্চায়েত সমিতি ছিল ৯২১৭টি ও গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল ৪৮ হাজার ৬৫০টি। ২০২২ এ তা বেড়ে জেলা পরিষদের সংখ্যা হল ৯২৮টি। পাশাপাশি বেড়েছে পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাও। ৯ হাজার ৪৯৮টি পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত বেড়েছে ৬২ হাজার ৪০৪টি।
২০১৮ সালের তুলনায় এ বার গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন বেড়েছে ১৩ হাজার ৭৫৪টি। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে আসন বেড়েছে যথাক্রমে ২৮১ এবং ১০৩টি। আগামী ৭ ডিসেম্বর কমিশন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদের সংরক্ষণের খসড়া প্রকাশ করবে। এ নিয়ে আপত্তি থাকলে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে। আপত্তি থাকলে শুনানির ভিত্তিতে এ বছরই তা নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন। এর ফলে আগামী বছরে নির্দিষ্ট সময়ে ভোট করাতে কোনও আইনি সমস্যা না হয়।
প্রসঙ্গত, বিজেপি আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। বিশেষ করে গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন পুনর্বিন্যাস ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণের প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি ছিল তাদের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কমিশনে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়ে এসেছিলেন।
আগামী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখে শাসক-বিরেধী দুই শিবিরই ময়দানে নেমেছে। কোনও পক্ষই এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। শাসকদলের একাধিক ইস্যুকে হাতিয়ার করে বিরোধীরা প্রতিবাদে সরব হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরু পাচার কাণ্ডে তৃণমূলের প্রথম সারির দুই নেতা রয়েছে জেলে। তাই বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে শাসকদল। তাই সংগঠনকে জোর দিতে ইতিমধ্যে জেলা সফর শুরু করেছেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েকদিন আগেই নদিয়া সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই সুন্দরবন সফরে যান তিনি। সেখানকার গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাও বলেন। তাঁদের অভাব অভিযোগ শুনে সমাধানেরও আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বসে ভাতও খান তিনি।
আরও পড়ুন:Howrah TMC: বিধায়কের বোধোদয়, গত পঞ্চায়েতে পেশিশক্তির প্রয়োগ হওয়াতেই লোকসভায় খারাপ ফল
অন্যদিকে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও নেমে পড়েছেন ময়দানে। শনিবারই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির ২০০ মিটারের মধ্যে জনসভা করেন। জনসভায় যোগ দেওয়ার আগে মারিশদার একটি গ্রামে আচমকাই চলে যান তিনি। সেখানকার স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। অভিষেকের কাছে স্থানীয়রা একাধিক সমস্যার কথা জানান। পাশাপাশি পঞ্চায়েত প্রধান সহ উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাতির বিরুদ্ধে অভিযোগও করেন তাঁরা। এরপরই সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মারিশদার পঞ্চায়েত প্রধান সহ উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাতির ইস্তফার নির্দেশ দেন অভিষেক। সেইমতো রবিবার তাঁরা ইস্তফাও দিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, দুর্নীতিকে ঢাকতে জনসংযোগের মাধ্যমে দলের ইমেজকে ভালো করতে চাইছে শাসকদল।