কলকাতা: রাজ্যপালের প্রধান সচিব (Principal Secretary) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল নন্দিনী চক্রবর্তীকে (Nandini Chakraborty)। রাজভবন (Raj Bhawan) সূত্রে খবর, সোমবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের আগে রবিবার এই সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল (Governor) সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। রবিবার রাতেই নন্দিনীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যপাল নবান্নকে (Nabanna) জানিয়ে দেন। যদিও নন্দিনীর অপসারণ নিয়ে রাজভবন বা নবান্নের তরফে সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই জানানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankar) উপরাষ্ট্রুতি (Vice President) হলে দিল্লি চলে যান তাঁর প্রধান সচিব সুনীলকুমার গুপ্ত (Sunil Kumar Gupta)। দিল্লিতে উপরাষ্ট্রপতির প্রধান সচিব হন তিনি। এই সময়ে পশ্চিবঙ্গের অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেন লা গণেশন (La Ganeshan)। তখন তাঁর প্রধান সচিব হন ১৯৯৪ ব্যাচের আইএস অফিসার (1994 batch IAS officer) নন্দিনী চক্রবর্তী। এর পর গত বছর নভেম্বরে পশ্চিবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল হন সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। প্রধান সচিব হিসেবে দায়িত্বে থেকে যান নন্দিনী।
আরও পড়ুন: Earthquake in Sikkim: সাতসকালে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সিকিমের মাটি, রিখটার স্কেলে মাত্রা ৪.৩
উল্লেখ্য, রাজ্যপাল হিসেবে সিভি আনন্দ বোসের রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে বিরোধী বিজেপি। বিশেষ করে এই নিয়ে বিষয়ে মুখর হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যপালেপ শপথ অনুষ্ঠান থেকে শুরু কপে সরস্বতী পুজোয় রাজ্যপালের হাতেখড়ি, সেন্ট জেভিয়ার্সের অনুষ্ঠান, এমনকী বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণ- এ সবই নিয়ে অভিযোগ তোলের বিরোধী বিজেপি। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই শাসক তৃণমূলের প্রতি রাজ্যপালের নমনীয় মনোভাবের জন্য তৃণমূল ঘনিষ্ঠ নন্দিনী চক্রবর্তীকেই কাঠগড়ায় তোলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
প্রথন দিকে এই নিয়ে শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারী সরব হলেও পরে বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেইমতো শনিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজভবনে দেখা করতে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। প্রায় ঘন্টা দুয়েক বৈঠক করেন দু’জনেই। রাজভবনে বৈঠক সেরে বেরিয়ে রাজ্য রাজনীতি নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্যে রাজ্যপালের মনোভাব বদলের খানিকটা আভাস মেলে। এরপরই ওই দিন সন্ধে রাজভবনের তরফে রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এবং রাজ্যপালের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কড়া বিবৃতি দেওয়া হয়। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস যে তাঁর পথ বদলেছেন তাতেই স্পষ্ট হয়ে বলে মত দেয় অভিজ্ঞমহল। শনিবারের পর রবিবার রাতেই রাজ্যপালের প্রধান সচিব নন্দিনীর অপসারণ আরও পোক্ত করল বিষয়টি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।