কলকাতা: কল্যাণী থানার ওসি (OC) অনির্বাণ বসুর (Anirban Bose) বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) দায়ের করে সিআইডি (CID) তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৩ এপ্রিল। ওইদিন সিআইডিকে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট না হলে আদালত সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দেবে বলেও বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
ওসির বিরুদ্ধে মূল মামলাটি করেন কল্যাণী পুরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লক্ষ্মী ওরাও। বিভিন্ন সূত্র থেকে তাঁর কাছে অভিযোগ আসে, ইশ্বর গুপ্ত সেতুতে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন থেকে ওসির নির্দেশে সিভি ভলান্টিয়াররা নিয়মিত টাকা তোলেন। কাউন্সিলর খোঁজখবর নিয়ে আরও জানতে পারেন, ওই টাকা তোলার জন্য কল্যাণীতে বালির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। গত ৮ অক্টোবর কাউন্সিলর আচমকাই ওই সেতু পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তিনি চার সিভিক ভলান্টিয়ারকে টাকা তোলার সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তাঁদের কাছ থেকে নগদ ৮০০ টাকা এবং একটি হিসেবের খাতাও পাওয়া যায়। তিনি বিষয়টি জেলার পুলিশ সুপারকে জানান। অভিযোগ, তার পরও পুলিশের ওই তোলাবাজি বন্ধ হয়নি। গত জানুয়ারি মাসে কাউন্সিলর তথ্য জানার অধিকার আইন অনুযায়ী পুলিশ সুপারের কাছে জানতে চান, তার অভিযোগের ভিত্তিতে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার কল্যাণী থানার কাছে এ ব্যাপারে রিপোর্ট তলব করেন।
আরও পড়ুন:Anubrata Mandal | অনুব্রতর জামিনের আবেদন খারিজ দিল্লি হাইকোর্টে
এসপির এই ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হয়ে কাউন্সিলর হাইকোর্টে মামলা করেন। তাঁর বক্তব্য, খোদ ওসি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। অথচ পুলিশ সুপার তাঁর কাছেও রিপোর্ট তলব করেছেন। বুধবার মামলার শুনানি চলাকালীন সরকারি আইনজীবী জানান, ঈশ্বর গুপ্ত সেতু থেকে যে টাকা তোলার অভিযোগ করা হচ্ছে, তার সঙ্গে কল্যানী থানার পুলিশের কোনও সম্পর্ক নেই। সেতুর টোল যারা আদায় করে তারাই ওই টাকার ভাগ নেয়। যে হিসেবের খাতার কথা বলা হচ্ছে সেটি একটি চায়ের দোকানের খাতা। উদ্ধার হওয়া ৮০০ টাকা ইতিমধ্যে নিম্ন আদালতে পুলিশ অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, হিসেবের কাগজে গাড়ির নম্বর ও কত টাকা তোলা হচ্ছে, তার উল্লেখ রয়েছে। সেটি কী করে চায়ের দোকানের খাতা হয়। একজন কাউন্সিলর যখন অভিযোগ করছেন, তখন বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এতে পুলিশের গাফিলতি আছে বলেই আদালত মনে করছে।