জয়পুর: রাজস্থানের পদত্যাগী কংগ্রেস বিধায়করা (Rajasthan Congress MLAs) তাঁদের ইস্তফাপত্র ফিরিয়ে (withdraws resignation letter) নিতে চলেছেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের (Chief Minister Ashok Gehlot) নির্দেশেই বিক্ষুব্ধ বিধায়করা পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। তাঁদের একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাটে স্পিকার সি পি যোশির (Speaker CP Joshi) কাছে চিঠি লিখতে বলা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সরকারিভাবে দল কিছু জানায়নি।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাজস্থানের(Rajasthan) প্রায় ৯০ জন কংগ্রেস বিধায়ক হাইকমান্ডের (Congress High Command) একতরফা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ইস্তফা দেন একযোগে। তাঁরা স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। রাজস্থানে অশোক গেহলটের সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী (Deputy Chief Minister) সচিন পাইলটের (Sachin Pilot) বহুদিন ধরে বিরোধ চলছে। পাইলট মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসার জন্য অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছেন। কংগ্রেস সভাপতি (Congress President) হিসেবে গান্ধী (Gandhi’s first choice) পরিবারের পছন্দ ছিলেন গেহলট (Gehlot)। গান্ধী পরিবার তাঁকে এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বলেছিল। কিন্তু গেহলট মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে নারাজ হন। তাঁর দাবি ছিল, দুটি পদই তিনি সামলাবেন। তা নিয়ে দর কষাকষি চলে। এরই মধ্যে হাইকমান্ড পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর তোড়জোড় শুরু করে।
দিল্লি থেকে দুই পর্যবেক্ষককে পাঠানো হয় জয়পুরে (Jaipur)। হাইকমান্ডের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বেঁকে বসেন গেহলটের অনুগামী বিধায়করা। তাঁরা দুই পর্যবেক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে কিংবা বৈঠকে বসতে অস্বীকার করেন। উল্টে ৯০ জন বিধায়ক স্পিকারের বাসভবনে গিয়ে ইস্তফা দিয়ে আসেন। তাঁদের অভিযোগ, কোনও আলোচনা না করেই শীর্ষ নেতৃত্ব পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতে চাইছে। দুই পর্যবেক্ষক দিল্লিতে ফিরে যান। গান্ধী পরিবার ক্ষুব্ধ হয় গেহলটের উপর। রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi), সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) ধারণা হয়, বিধায়কদের এই বিদ্রোহের পিছনে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর মদত আছে। সোনিয়া গান্ধী গেহলটকে দিল্লিতে ডেকে পাঠান। তিনি নেত্রীকে জানান, এর পিছনে তাঁর কোনও হাত নেই। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী এর জন্য ক্ষমাও চান। শেষ পর্যন্ত গান্ধী পরিবারের অনুগত হলেও গেহলটকে আর কংগ্রেস সভাপতি পদে প্রার্থী করেননি রাহুল, সোনিয়ারা। হাইকমান্ডের প্রার্থী হন মল্লিকার্জুন খা্ড়্গে (Mallikarjun Kharge)।
আরও পড়ুন: Gautam Adani: নরসীমা রাও, রাজীব গান্ধি এবং মনমোহন সিংয়ের ভূয়সী প্রশংসা আদানির মুখে
হাইকমান্ড রাজস্থানে গেহলট (Gehlot) এবং পাইলট (Pilot), কাউকেই চটাতে চায়নি। ভারত জোড়ো যাত্রার মাঝেই রাহুল গান্ধী বিবদমান দুই নেতার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, সমস্যা মিটে যাবে। এদিকে তিন মাস কেটে গেলেও বিদ্রোহী বিধায়কদের ইস্তফার বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। সামনে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। এখন দলের নেতৃত্ব নড়েচড়ে বসেছেন। আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে বিধানসভার অধিবেশন শুরু। রাজস্থান হাইকোর্ট সম্প্রতি স্পিকার যোশিকে বিধায়কদের ইস্তফার ব্যাপারে পদক্ষেপ করার জন্য নোটিস দেয়। দলের নতুন রাজ্য সভাপতি সুখজিন্দর সিং রনধাওয়া রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই বিদ্রোহী বিধায়কদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। সেইমতো নির্দিষ্ট ফরম্যাটে বিধায়করা স্পিকারকে চিঠি দিতে চলেছেন ইস্তফা ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য।