নয়া দিল্লি: ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে রাহুল গান্ধীই (Rahul Gandhi) হবেন বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister) পদপ্রার্থী। এমনটাই দাবি করলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং মধ্যপ্রদেশের (Madhyapradesh) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ (Kamal Nath)। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক ইন্টারভিউয়ে কমল নাথ বলেন, ক্ষমতায় আসার জন্য রাহুল গান্ধী রাজনীতি করছেন না, দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কাজ করছেন। ভারত জোড়ো যাত্রাও সেই লক্ষ্যেই হচ্ছে।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বলেন, ২০২৪ সালে রাহুল শুধু বিরোধীদের প্রধান মুখই হবেন না। তিনি বিরোধীদের (Opposition) প্রধানমন্ত্রীরও মুখ হবেন। তাঁর দাবি, পৃথিবীর ইতিহাসে এর আগে কেউ কখনও এত দীর্ঘ পদযাত্রা করেননি। গান্ধী পরিবার ছাড়া দেশের আর কোনও পরিবার এত ত্যাগ করেনি। রাহুল কোনও ক্ষমতা বা পদের জন্য লালায়িত নয়।
সম্প্রতি কংগ্রেসের (Congress) আর কোনও নেতা এত খোলাখুলি ২০২৪ (2024) সালের ভোটের (Loksava Vote) জন্য রাহুলের পক্ষে গলা ফাটাননি। কমল বলেন, কংগ্রেসে বিশ্বাসঘাতকদের কোনও জায়গা নেই। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার দলে ফেরার কোনও সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাওয়া হলে প্রবীণ এই নেতা বলেন, আমি ব্যক্তিগত কারও সম্পর্কে কিছু বলব না। তবে যে সব নেতা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, সংগঠনে তাঁদের জায়গা হবে না। প্রসঙ্গত, সিন্ধিয়ার সঙ্গে কমলের বিরোধ চলছিল বহুদিন ধরে। এই বিরোধে পিছন থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছিল বিজেপি। সিন্ধিয়া অনেক কংগ্রেস বিধায়ক ভাঙিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে। কংগ্রেস সরকার ভেঙে যায়। বিজেপির সরকার তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: Suu Kyi: আন সান সু চি-র ৩৩ বছরের কারাদণ্ড, তীব্র নিন্দা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের
লোকসভা ভোটের আগে এই মুহূর্তে জাতীয় স্তরে বিরোধীরা এখন পর্যন্ত ছন্নছাড়া। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিরোধী দলের প্রধানমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদার। দৌড়ে রয়েছেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে সি আর, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। লড়াইয়ে আছেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারও। যদিও মুখে সবাই বলছেন, আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোট চাই। কিন্তু সেই জোটের নেতৃত্ব কোন দলের কে দেবেন, তা নিয়ে নানা টানাপড়েন চলছে। জাতীয় এবং আঞ্চলিক কিছু দল কংগ্রেসকে বিরোধী জোটের নেতৃত্ব নিতে বলছে বটে। তবে তৃণমূল, অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি, কে সি আরের বিআরএসের মতো দলগুলি কংগ্রেসের নেতৃত্ব মানবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কমল নাথ তাঁর দলের নবীন নেতা রাহুলকেই বিরোধী জোটের প্রধান মুখ এবং তাদের প্রধানমন্ত্রী পদের প্রধান মুখ বলে দাবি করে বিতর্ক উসকে দিলেন। কেন দেড় বছর আগেই কমল নাথের মতো পোড় খাওয়া নেতা বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসেবে রাহুলের নাম ভাসিয়ে দিলেন, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।