আমেদাবাদ: নারোদা গাম হত্যাকাণ্ড (2002 Naroda Gam Massacre) মামলায় সমস্ত ৬৮ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস (Acquit) করে দিয়েছে গুজরাতের আমেবাদের বিশেষ আদালত (Special Court)। ২০০২ সালে গুজরাতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলাকালীন নারোদা গাম হত্যাকাণ্ডে মুসলিম সমাজের (Muslim Community) ১১ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় মোট ৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল আদালতে। বৃহস্পতিবার তাঁদের মধ্যে সমস্ত ৬৮ জীবিত অভিযুক্তকে মুক্তি দিয়েছে বিশেষ আদালত। গুজরাতে গোধরা দাঙ্গার পর এটি অন্যতম বড় দাঙ্গার ঘটনা সেরাজ্যে। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নিয়োগ করা বিশেষ তদন্তকারী দল, সংক্ষেপে সিট (Special Investigation Team – SIT) এই দাঙ্গার তদন্ত (Probe) করেছে। সিট মামলার রায় দেওয়া বিশেষ আদালত নারোদা গাম হত্যাকাণ্ড মামলার শুনানি চালিয়েছে। এদিন সমস্ত ৬৮ অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করে দিয়েছে সিটের বিশেষ আদালত।
বেকসুর খালাস হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক মায়া কোদনানি (Former BJP MLA Maya Kodnani), প্রাক্তন ভিএইচপি নেতা জয়দীপ প্যাটেল (Former VHP Leader Jaydeep Patel) এবং প্রাক্তন বজরঙ্গ দল নেতা বাবু বজরঙ্গি (Ex-Bajrang Dal Leader Babu Bajrangi)। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (Indian Penal Code – IPC) ধারা ৩০২ (খুন), ধারা ৩০৭ (খুনের চেষ্টা), ধারা ১৪৩ (বেআইনি সমাবেশ), ধারা ১৪৭ (দাঙ্গা), ধারা ১৪৮ (মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা), ধারা ১২০ (খ) (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) এবং ধারা ১৫৩ (দাঙ্গার উসকানি) ইত্যাদি বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মোট ৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিন। এরমধ্যে ১৮ জন মামলা চলাকালীন মারাও গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: India | Heritage Sites | ঘুরে আসুন হরপ্পা সভ্যতার প্রাচীন শহর থেকে
২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরাতে ট্রেনে আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় ২৭ জন মহিলা ও ১০ শিশু সহ মোট ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই করসেবক (Karsevaks) ছিলেন। তাঁরা অযোধ্যা (Ayodhya) থেকে ফিরছিলেন। তারই প্রতিবাদে পরদিন বনধ (Bandh) ডাকা হয়েছিল। সেদিন আমেদাবাদ শহরের নারোদা গাম অঞ্চলে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। যাতে ১১ জন মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যক্তি মারা যান।
প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক মায়া কোদনানিকে ২০০৮ সালে নারোদা পাতিয়া (Naroda Patiya) ও নারোদা গাম হত্যাকাণ্ড মামলায় দাঙ্গা সংক্রান্ত তদন্তে অভিযুক্ত করেছিল সিট। ২০১২ সালের অগাস্টে স্পেশ্যাল সিট কোর্ট কোদনানিকে নারোদা পাতিয়া হত্যাকাণ্ডে ভূমিকা পালনের জন্য ২৮ বছরের কারাদণ্ড সাজা (Jail Term) দেয়। যদিও ২০১৮ সালের এপ্রিলে বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রীকে গুজরাত হাইকোর্ট (Gujarat High Court) খালাস করে ট্রায়াল কোর্টের রায়কে বাতিল করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্রবীণ বিজেপি নেতা (বর্মমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) অমিত শাহ মায়া কোদনানির রক্ষা সাক্ষী (Defence Witness) হিসেবে আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন। নারোদা গাম হত্যাকাণ্ড মামলায় তাঁর দাবি প্রমাণ (Alibi) করার জন্য অমিত শাহকে আদালতে ডাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন মায়া কোদনানি। তাঁর দাবি ছিল, যখন সংশ্লিষ্ট হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল, সেসময় তিনি প্রথমে গুজরাত বিধানসভায় (Gujarat Assembly) এবং পরে সোলা সিভিল হাসপাতালে (Sola Civil Hospital) উপস্থিত ছিলেন।